নবীগঞ্জে বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর অঞ্জনা হত্যাকান্ড : ঘাতক সজলের দু’স্ত্রীর জামিন লাভ
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) থেকেঃ নবীগঞ্জে বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর অঞ্জনা হত্যাকান্ডের ঘটনার মুল নায়ক ঘাতক সজলের দু’স্ত্রী জামিন লাভ করেছে। গতকাল সোমবার প্রথম স্ত্রী শিউলি দেব ও দ্বিতীয় স্ত্রী শিক্ষিকা শিউলি রানী দাশ বিচারপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ও বিচারপতি মোঃ বদরুজ্জামান এর আদালতে হাজির হলে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন হবিগঞ্জ শহরের ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা এডভোকেট জয়া ভট্টাচার্য্য।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ আগষ্ট সন্ধ্যা থেকে ১৬ আগষ্ট সকাল ১০টার মধ্যে নবীগঞ্জের দত্তপাড়া গ্রামের রাজেন্দ্র সরকারের মেয়ে অঞ্জনা সরকারকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় প্রধান ঘাতক সজল দেব, তার প্রথম স্ত্রী শিউলি দেব দু’পুত্র সহ শিক্ষিকা শিউলি রানী দাশকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে তদন্তাাধীন রয়েছে। অথচ শিক্ষিকা শিউলি রানী দাশ ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস পালন অনুষ্ঠানে হবিগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহিরের সাথে র্যালীসহ নানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আবু লেইছ জানান, শিউলি রানী দাশ ২০১০ সালে তার বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা পদে যোগদান করেন। তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। হত্যা মামলার আসামী করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৪ আগষ্ট বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষিকা শিউলি বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সকাল ৮টা থেকে বিকেল পর্যন্ত সবগুলো অনুষ্ঠানে তিনি আমাদের সাথে ছিলেন। পরদিন ১৬ আগষ্ট যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু কি করে তাকে ওই হত্যা মামলার আসামী করা হলো, তা বোধগম্য নয়। তিনি দাবি করেন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে নিরীহ নিরাপরাধ কেউ যাতে হয়রানীর শিকার না হয় সেদিকে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাসিন্দারা জানান, এই বাসায় সজল দেব ও প্রথম স্ত্রী শিউলি দেব এবং দু’সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। দ্বিতীয় স্ত্রী শিক্ষিকা শিল্পী রানী দাসকে তারা এ বাসায় কখনো দেখেননি। এ ব্যাপারে মামলার বাদী অঞ্জনার পিতা রাজেন্দ্র সরকার মৃত্যুর ঘটনা বর্ণনা করতে যেয়ে বলেন, তার মেয়ে অঞ্জনা সজল দেবের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতো। তিনি প্রায় সময়েই মেয়েকে দেখতে ওই বাসায় যেতেন। কিন্তু ওই বাসাতে কখনো শিক্ষিকা শিউলিকে দেখেননি তিনি। দেখলেও তিনি তাকে চিনতে পারবেন না বলে জানান। তাহলে তাকে আসামী দেয়া হলো কেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সজল দেবের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবেই তাকে আসামী করা হয়েছে।