মৌলভীবাজারের সাংবাদিক সৈয়দ আনছার আলী আর নেই
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ
মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের সাংবাদিক সৈয়দ আনছার আলী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি …………রাজিউন)। গতকাল ৭ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের আশ্রাকাপনস্থ গ্রামের বাড়িতে আকষ্মিক হার্ট এ্যাটাকে আক্রান্ত হলে তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হলে এ্যম্বুলেনেস্র জন্য অপেক্ষমান থাকাবস্থায় রাত ১২টার দিকে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তার সাথে অবস্থানরত তার বড়বোন জানান- হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর তার ইসিজি করা হলে হার্ট এ্যাটাকের বিষয়টি ধরা পড়ে। এসময় জরুরী বিভাগের ডাক্তার ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেন- এখানে ভালো ডাক্তার নেই, মেশিনারীজ নেই, অক্সিজেন নেই বিধায় উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। রোগিকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তারপর তিনি কাগজপত্র প্রস্তুত করে দেন এবং এ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন। দীর্ঘসময় ধরে এ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষমান থাকাবস্থায় তার মৃত্যু হয়। একই কথা জানালেন তার সাথে অবস্থানকারী স্থানীয় সাপ্তাহিক মুক্তকথা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাংবাদিক মামুনুর রশিদ (মহসিন)। তিনি বলেন- হার্ট এ্যাটাক হয়েছে নিশ্চিত হবার পরও তাকে অক্সিজেন এবং কোন প্রকার চিকিৎসা না দিয়ে ডাক্তার তাকে দীর্ঘসময় বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন। দীর্ঘসময় পরে কর্তব্যরত নার্স তাকে ৩টি ট্যাবলেট খেতে দেন। ট্যাবলেট খাওয়ার পর টয়লেটের বেগ হলে তিনি টয়লেটে যান এবং টয়লেট শেষে তিনি কিছুটা সুস্থ্যবোধ করছেন বলে জানান। এরপর তাকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। তারপর কাগজপত্র প্রস্তুত করে দেয়া হয় এবং এ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়। এরপর দীর্ঘসময় ধরে এ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষমান থাকাবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ পলাশ রায় বলেন- যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। ইসিজি করে তাকে অক্সিজেনসহ সম্ভব সকল প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে পূর্ণ বিশ্রামে থাকার জন্য বার বার অনুরোধ করা সত্তেও তিনি তা না মেনে হাটাহাটি করেছেন এবং মোবাইল ফোনে একের পর এক অবিরাম কথা বলেছেন। এমতাবস্থায় আমাদের কি করার ছিল ? সৈয়দ আনসার আলী মৃত্যুকালে এক শিশুকন্যা ও স্ত্রীসহ অনেক গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। আজ ৮ অক্টোবর বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় মনসুরনগর ইউপি কার্যালয় সংলগ্ন মহলাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জনাকীর্ন জানাযার নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তার মৃত্যুতে মৌলভীবাজার প্রেসকাব, মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসকাব, বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়ন (বিওএসকেইউ) মৌলভীবাজার জেলা শাখা, বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল (বামাকা) মৌলভীবাজার জেলা শাখা এবং বাংলার নাট্যলোক মৌলভীবাজার এর নেতৃতৃন্দ ও সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তার বিদেহী আত্বার মাগফেরাত কামনা করেছেন। মরহুম সৈয়দ আনসার আলী দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত ছিলেন।