ব্যতিক্রমধর্মী কাজ করার অদম্য ইচ্ছা চলচ্চিত্র পরিচালক শাহারিয়ার চয়নের
এসএমএ হাসনাত: পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হবার স্বপ্ন নিয়ে বড় হলেও সিনেমার প্রেমে পড়েন কিশোর বয়েসে। অনেকটা সিনেমা দেখতে দেখতেই সিনেমার প্রেমে পড়ে যাওয়া। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময়টা। এই সময়টাই স্কুল ফাকি দিয়ে মনিং শো, কিংবা দুপুরের শো কিংবা বিকেলের শো আবার কখনও রাত ৯-১২টার শেষ শোও দেখেছেন লুকিয়ে চুরিয়ে। সে সময়টায় সিনেমায় কাজ করার চিন্তাটা মাথায় আসে। ভালো কোন সিনেমা তৈরী করবো এমনই প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন তরুণ পরিচালক চয়ন। পুরো নাম শাহারিয়ার চয়ন।
মুলতঃ রাজশাহীতে পড়তে এসে সিনেমা নিয়ে কাজ করার চিন্তাটা আরো পাকাপক্ক হয়। এসময় রাজশাহী কলেজে সহপাঠী হিসেবে রতন নামে একজনের সাথে পরিচয় হয়। তার সাথে সাংস্কৃতিক অঙ্গণে পথচলা শুরু। এসময় কালচারাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার যোগ দেয়। এসেন্টার থেকেই মুলতঃ আধুনিক নাচ, গানসহ শট্ ফিল্ম তৈরীর ধারণা জন্মে। শট্ ফিল্ম করতে গিয়ে পরিচয় হয় ঢাকার খ্যাতনামা নাট্য পরিচালক রাশেদ রাহার সাথে। আর পরিচয় পর্বেই গুরু রাশেদ রাহাকে জানান তার স্বপ্ন ফিল্ম পরিচালনার কথা। কিন্তু তিনি তাকে ফিরিয়ে দেন নি। বরঞ্চ তার কাজ করার আগ্রহ দেখে ঢাকায় ডেকে নেন। শুরু হয় দক্ষ গুরুর অধীনে তার হাতে খড়ি নেয়া। এসময় তার অধীনেই সহকারী পরিচালক হিসেবে বেশ কিছু নাটক-শটফিল্ম কাজ করান। টেলিফিল্ম ‘এক্স-স্কয়ার’, নাটক ‘প্যারালাল’, ‘প্রেম বিক্রিয়া’, ‘লিটমাস লাভ’ এবং ধারাবাহিক নাটক ‘স্বীকৃতি’ তে কাজ করেন সহকারী পরিচালক হিসেবে। এক্স-স্কয়ার ইতোমধ্যেই এটিএন বাংলায় প্রচারিত হয়েছে। নাটক নাটক ‘প্যারালাল’, ‘প্রেম বিক্রিয়া’, ‘লিটমাস লাভ’ -এর কাজ কাজ শেষ হয়েছে। খুব শীঘ্রই বেসরকারী চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে। ধারাবাহিক নাটকের কাজ চলছে। নিজের পরিচালনায় দুটো মিউজিক ভিডিও যার একটি ফাইজুর মিল্টন কণ্ঠে ‘দূর থেকে’ এবং অন্যটি নির্ঝর ও সোহেল এস কে’র কন্ঠে ‘দূরে আর থেকো না’ প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে। টি-২০ বিশ্বকাপ জ্বরে আক্রান্ত যুবসমাজ যখন ফ্ল্যাশমব তৈরী যখন ব্যস্ত, তখন শাহারিয়ার চয়নও পিছিয়ে নেই সেই প্রতিযোগিতায়। ফাহিম, নকিব, জিহাদ, আরিফ, সাবিহা সিম্মী, ফেন্সি নদী, সোনিয়া সহ একঝাক তরুণ নিয়ে আলো-ঝলমল স্ট্রিট লাইটে রাজশাহীর রাস্তায় করে ফেলেন এক অসাধারণ ফ্ল্যাশমব। ইতোমধ্যে তার কিছু শট ফিল্ম তৈরীর কাজ চলছে। রাজশাহীতে সবে হয়ে গেলো ‘ইয়ুথ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০১৪’।- এ ফেস্টিভ্যালে চয়নের বাজিমাত। তার পরিচালিত গ্রীণ অ্যারো প্রডাকশন ও ড্রীম মেকিং প্রডাকশন-এর ব্যানারে ‘সহানুভূতি’ পেয়ে যায় অ্যাওয়ার্ড। ‘সুস্থ চলচ্চিত্র, শুদ্ধ স্বদেশ’ শিরোনামে বরেন্দ্র থিয়েটার আয়োজিত ৩য় বিজয় চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৪ তে পেলো আরেকটি অ্যাওয়ার্ড।
শিল্পী জীবন খান, এফ এ সুমনসহ আরো কিছু খ্যাতনামা কন্ঠশিল্পীর গান নিয়ে মিউজিক ভিডিও তৈরীর কথা পাকাপাকি হয়েছে। এবছরের শেষের দিকে রাজশাহীতে ব্যতিক্রমধর্মী একটি কমিউনিটি ফিল্ম তৈরীর প্রস্তুতি কাজ চলছে।
শাহারিয়ার চয়ন বলেন, তার ইচ্ছে ভালো ফিল্ম পরিচালনা করার। বড় বড় কিছু পরিচালকদের সাথে থেকে কাজ শিখার ইচ্ছা আছে। ভালো কিছু সিনেমার কাছ কাজ থেকে দেখা ও কাজ শিখতে চাই। বিশেষ করে আমি গুরু রাশেদ রাহার সানিধ্যে থাকতে চাই। তার কাছ থেকে শিখার অনেক কিছু আছে।
তার ব্যক্তিগত বিষয় সম্পর্কে জানান, জন্ম আমার চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। শিবগঞ্জ সরকারী মডেল হাই স্কুলে মাধ্যমিক ও শিবগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করি। রাজশাহী কলেজ থেকে ¯œাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছি। পিতা আব্দুল করিম ও পেশায় একজন সরকারী চাকুরীজীবী এবং মাতা চামেলী বেগম ও তিনি খ্যাতনামা বীমা কোম্পানীর কর্মকর্তা। দুইভাই- বোনের মধ্যে বড়।