প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে কমলগঞ্জে আ’লীগের দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা
বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ইউনিয়ন পর্যায়ে দলীয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। উত্তেজনার পর সভা মুলতবি করে চলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। গতকাল বুধবার (১৩ এপ্রিল) বেলা আড়াইটায় উপজেলার ১ নম্বর রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সভায় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনের লক্ষ্যে রহিমপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জুনেল আহমদ তরপদারের সভাপতিত্বে এক বর্ধিত সভা শুরু হয়। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সভায় উপজেলা আ’লীগ সভাপতি এম, মোসাদ্দেক আহমদ মানিক, সাধারণ সম্পাদক রফিকুর রহমান, সহ সভাপতি আছলম ইকবাল মিলন, যুগ্ম সম্পাদক ছিদ্দেক আলী, তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। সভার সভাপতি জুনেল আহমদ তরফদার জানান, সভা চলাকালে রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার আহমদ বদরুল নতুন করে কিছু নাম সংযোজন করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি উপস্থাপন করলে সভার সভাপতি জুনেল আহমদ তরপদার তাৎক্ষনিক উপস্থিাপিত কমিটির উপর আপত্তি জানান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে চরম হট্রগোলের সৃষ্টি হয়। উত্তেজনা চরম আকার ধারন করলে কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ সভার কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
রহিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জুনেল আহমদ তরপদার বলেন, বিধি মোতাবেক সভা শুরু হলে মাঝ পথে মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাংসদ ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদের ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদ বদরুল নিজ ইচ্ছামত নতুন সংযোজিত কমিটির নাম ঘোষনা করে সভা পরিচালনা করার জন্য কমলগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক মোশাহিদ আলীকে নির্দেশনা দেন। তাতেই শুরু হয় উত্তেজনা। উত্তেজনা চরম আকার ধারন করলে সভা মুলতবি হয় আর উপজেলা নেতৃবৃন্দরা সভাস্থল ত্যাগ করেন। তিনি (জুনেল আহমদ তরফদার) আরো বলেন, সভা চলাকালে বাহিরে আমার কয়েক শতাধিত নেতাকর্মী ও সমর্থক ছিল।
বর্ধিত সভায় আকস্মিক নতুন কমিটি উপস্থাপন ও উত্তেজনায় সভা মুলতবি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক রহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদের মুঠোফোনে (০১৭৩৩৫২৫০৮৪) দফায় দফায় চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তবে সভায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের এক নেতা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক হারুনুর রশীদ ভূঁইয়ার বক্তব্য চলাকালে সভার সভাপতি জুনেল আহমদ তরফদার তার বক্তব্যে বাঁধা দেন। এতে অপর সাংগঠনিক সম্পাদক রহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদ বদরুল সভার সভাপতি জুনেলকে ধমক দেন। এরপরই হট্টগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে জুনেল আহমদ তরফদারের সমর্থকরা ক্ষেপে গিয়ে চেয়ার ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সভার কার্যক্রম মূলতবী ঘোষনা করে সভাস্থল নেতৃবৃন্দ সহ ত্যাগ করেন।
বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার এভাবে আদমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভায় দুই পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা হয়েছিল। একই দিন ইসলামপুর ইউনিয়নেও দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা ও সভা শেষে এক প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় সাবুল মিয়া নামে একজন আহত হয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় সাবুল মিয়া বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।