১৫ মাস পর ১৫ দিনের জন্য মুক্ত-আরিফের ভাগ্যে কী আছে আজ

1স্টাফ রিপোর্টার :: টানা ১৫ মাস কারাভোগ। অতঃপর ১৫ দিনের জন্য মুক্ত। ছুটে আসা নিজ শহরে মায়ের বুকে। মাকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কান্না। চিকিৎসাধীন মাকে জড়িয়ে ধরে বলা, ‘মা আমি মুক্তি পেয়েছি। ভালো আছি। কোনো চিন্তা করো না। তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হও।’ ১৫ দিন আগের এ কাহিনি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর। গত ২৮ মার্চ সোমবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে নিজের অসুস্থ আরিফ ছুটে আসেন অসুস্থ মায়ের বুকে। আজ সোমবার আরিফুল হকের ১৫ দিনের জামিনের দিন শেষ হবে। তিনি আজ আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। আদালতের পরবর্তী নির্দেশনার আগ পর্যন্ত আরিফুল হকের ভাগ্যে কী আছে তা বলা মুশকিল। তবে আরিফুল হককে ১৫ দিন পর নি¤œ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। তাই নি¤œ আদালত যদি আরিফুল হকের জামিন বহাল রাখেন, তাহলে তাঁর ভাগ্যে মুক্ত হাওয়া জুটবে, থাকতে পারেবেন মায়েরই বুকে। আর জামিন নামঞ্জুর হলে আবারও যেতে হবে জেলে।
আরিফুল হক চৌধুরীর নিজের ও মায়ের অসুস্থতার পরিপ্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে বিস্ফোরক মামলায় জামিন লাভ করেন। হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আতাবুল্লাহ তাঁর ১৫ দিনের জামিন মঞ্জুর করেন। এরও আগে গত ২২ মার্চ হাইকোর্ট থেকে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১৫ দিনের জামিন পেয়েছিলেন তিনি। তবে বিস্ফোরক মামলা থাকার কারণে আরিফ মুক্তি পাননি।
১৫ দিনের জন্য মুক্তি পেয়ে আরিফ তাঁর অসুস্থ মাকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদেন। মুক্তি পেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, ‘মা আমি মুক্তি পেয়েছি। ভালো আছি। কোনো চিন্তা করো না। তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হও।’
এ সময় আবেগাপ্লুত ছিলেন মা ও ছেলে। তখন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি নেতাকর্মী ও উপস্থিত স্বজনেরা। এরপর আরিফুল হক চৌধুরী মা আমিনা খাতুনের পা ছুঁয়ে সালাম করেছিলেন। এ সময় তাঁর চোখ দিয়ে ঝরছিল অশ্রু। ছেলেকে কাছে পেয়ে আমেনা খাতুনও যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছিলেন।
আরিফুল হক চৌধুরী নিজে নিজে হাঁটতে পারেন না। অন্যের সহযোগিতা নিয়ে হাঁটতে হয় তাঁকে। দীর্ঘ ১৫ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষার পর তিনি সিলেটে এসে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন। এখান থেকে আবার তিনি চিকিৎসার জন্য ঢাকা চলে যান। গত বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) পুনরায় কিবরিয়া হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে সিলেটের আসেন। এরপর চিকিৎসা নিতে ফের ঢাকায় চলে যান। গতকাল আবার তিনি সরাসরি হাসপাতাল থেকে ডাক্তারের ছাড়পত্র নিয়ে সিলেট এসেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের তৎকালীন মেয়র জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে কিবরিয়া হত্যা মামলার সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। পর দিন আরিফসহ অন্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেন আরিফ। এর পর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।