ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি বয়সে তিন সন্তানের মা

3আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ৫৫ বছর বয়সে তিন সন্তানের জন্ম দিলেন ব্রিটেনের এক নারী। বলা হচ্ছে, ব্রিটেনে তিনিই সবচেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন।

শ্যারন কাটস পেশায় একজন সেবিকা এবং তার বয়ফ্রেন্ড স্টুয়ার্ট রেনল্ডস একজন ফ্যাক্টরি কর্মী। তারা যুক্তরাজ্যের বোস্টন এলাকার বাসিন্দা। ২১ মার্চ এই দম্পতির ঘর আলো করে আসে ম্যাসন, রাইয়ান এবং লিলি নামে তিন নবজাতক। টেস্টটিউব পদ্ধতি গ্রহণ করে এই তিন সন্তান জন্ম দেন শ্যারন কাটস।

ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস(এনএইচএস) ৪২ বছরে বেশি নারীদের আইভিএফ পদ্ধতির জন্য উৎসাহ প্রদান করেন না। কারণ এনএইচএসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ৪৪ এর অধিক বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্ম দেয়ার সম্ভাবনা মাত্র এক শতাংশ। এই কারণে শ্যারন দম্পতি ১৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে সাইপ্রাসের একটি বিশেষায়িত ক্লিনিক থেকে আইভিএফ পদ্ধতি গ্রহণ করেন। গর্ভধারণের সম্ভাবনা সর্বোচ্চ বাড়ানোর জন্য শ্যারন কাটসের অভ্যন্তরে চারটি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করে চিকিৎসক।

শ্যারন কাটস বলেন, যখন স্ক্যান করে তিনটি হৃদস্পন্দন ধরা পড়লো তখন স্টুয়ার্ট একেবারে হতভম্ব হয়ে গেল। আর আমি খুশিতে কেঁদে ফেললাম। তখন আমার একটাই ভাবনা কাজ করছিল, তিন সন্তান সামলাবো কিভাবে?

শ্যারন কাটস আরও বলেন, আমি এগার বছর নৌবাহিনীতে কাটিয়েছি এবং চারটি ম্যারাথনে অংশ নিয়েছি। আমি জানি কিভাবে নিজেকে দেখাশোনা করতে হয়।

পরবর্তী সময়ে গর্ভবতী অবস্থায় বয়সের কারণে শ্যারন জটিলতার সম্মুখীন হয়েছিল। তখন চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছিলেন একটি সন্তানের গর্ভপাত করানোর জন্য। কিন্তু শ্যারন চিকিৎসকের পরামর্শ প্রত্যাখান করেছিলেন।

শেষপর্যন্ত যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ১১ সপ্তাহ অবস্থানের পর তিনটি সুস্থ শিশু জন্ম দেন শ্যারন কাটস। জন্মের পর পর নবজাতকদের ওজন ছিল ১.৮১ কেজি থেকে ২.২৬ কেজির মধ্যে। তাদের গড় ওজন ছিল তিন কেজির একটু বেশি। শ্যারন কাটসের আগের স্বামীর ঘরে চার সন্তান রয়েছে।

ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ গীতা নারগান্দ বলেন, এই বয়সে তিন সন্তান লালনপালন বিশাল একটি ‘চ্যালেঞ্জের’ ব্যাপার। নারীদের বয়স ৫০ এর অধিক হলেই গর্ভপাত এবং উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘ প্রসববেদনা এবং মৃত সন্তান হওয়ার ঝুঁকি ব্যাপক বৃদ্ধি পায়।

প্যারেন্টিং চ্যারিটি এনসিটি’র সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার এলিজাবেথ ডাফ বলেন, বাবা-মায়ের বয়সের চেয়ে সন্তান লালনপালনের দায়বদ্ধতা এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ।