বিএনপি নেতা ইমদাদের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

4স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেট বিএনপি নেতা ইমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নগরীর আম্বরখানাস্থ গোল্ডেন টাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল ইসলাম খান বাদি হয়ে ২৮ মার্চ সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলায় নগরীর চৌকিদেখি ১৮৭/৬ এর বাসিন্দা মৃত তজম্মুল আলীর ছেলে, গোল্ডেন টাওয়ারের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএনপি নেতা ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ছাড়াও গোল্ডেন টাওয়ারের ব্যবস্থাপক (হিসাব) তারেক আহমদ চৌধুরী, পরিচালক মোজাম্মিল আলী ও পরিচালক এইচ.এম আজমল আলীকে আসামি করা হয়েছে।
সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সরাব তহুরা অভিযোগ আমলে নিয়ে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন।
অভিযোগে জানা যায়, আসামি তারেক আহমদ চৌধুরী ম্যানেজার (হিসাব) পদে গোল্ডেন টাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডে কর্মরত থাকাকালে আসামি ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মো. মোজাম্মিল আলী ও এইচ.এম আজমল আলীসহ আরো কয়েক জন পরিচালকের যোগসাজসে কোম্পানির টাকা ও অন্যান্য সম্পদ আত্মসাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই সময়ে আসামি ইমদাদ হোসেন চৌধুরী অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় বিক্রিকৃত কয়েকটি ফ্লাটের টাকা কোম্পানির একাউন্টে জমা না দিয়ে প্রতারণামূলক ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। কোম্পানির লেজার ভাউচার বা হিসাব বইতে তা এন্ট্রি করেননি। পরবর্তীতে সকল পরিচালকগণের সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্ত এমদাদ হোসেন চৌধুরীকে গোল্ডেন টাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং গৌছুল হোসেনকে চেয়ারম্যান ও নুরুল ইসলাম খানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়।
নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক দায়িত্ব পাওয়ার পর অব্যাহতিপ্রাপ্ত ম্যানেজার হিসাব তারেক আহমদ চৌধুরী ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীকে হিসাবাদি উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ জানালে তারা নানা অজুহাতে কালক্ষেপন করেন।
পরবর্তীতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ গোল্ডেন টাওয়ারের পরিচালনা পর্ষদ তদন্ত করে বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও অন্যান্য আসামিদের বিপুল অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পায়। তারা তদন্ত করে দেখতে পান আসামিরা আম্বরখানায় নির্মিত গোল্ডেন টাওয়ার একটি ফ্লাট মাহতাব উদ্দিনের কাছে বিক্রি কথা বলে তার কাছ থেকে ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হস্তগত করেন, ইয়াসমিন বেগমের কাছে অনুরূপ আরেকটি ফ্লাট বিক্রির কথা বলে ২৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা হস্তগত করেন, আতাউর রহমানের কাছে অনুরূপ ফ্লাট বিক্রির কথা বলে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। ফ্লাট গ্রহীতাদের কাছ থেকে ঐ টাকা আত্মসাত করলেও তারা তা কোম্পানির তহবিলে জমা দেননি।
এছাড়া, গোল্ডেন টাওয়ার ভাড়াটিয়াগণ নিয়মিতভাবে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলেও সেই টাকা থেকে অব্যাহিতপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী তা আত্মসাৎ করেন। ফলে গোল্ডেন টাওয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে বিদ্যুৎ বিল বাবত সরকারের প্রায় ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, এসব টাকা ফেরত চাওয়ায় অব্যাহতিপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অপরাপর আসামিরা বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অন্যান্য পরিচালককে হত্যাসহ অনিষ্ট সাধনের হুমকী প্রদান করছেন।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন জানান, থানায় অভিযোগ হয়েছে। এখনো মামলা রেকর্ড করা হয়নি। তদন্ত শেষ হলে মামলা রেকর্ড করা হবে।