দিনাজপুরে আমেরিকান নাগরিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা

20160208_092319ডেস্ক রিপোর্টঃ দিনাজপুর শহরের শেখপুরাতে বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক ডাঃ সামসুল আলম (৭৬) সন্ত্রাসী হামলা, প্রস্তাবিত ৫০ সজ্জা বিশিষ্ট হাসপাতালের ৪ বিঘা জমি উদ্ধার ও আসামীদের গ্রেপ্তার দাবিতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন ভুক্তভোগী ডা: সামসুল আলম (৭৬)।
সামসুল আলম বলেন, আমেরিকার বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ ফোরম ও প্রস্তাবিত আমেরিকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা, প্রাক্তন সিভিল সার্জন ও আমেরিকার নাগরিক বিশিষ্ট সমাজকর্মী আমি ডা: সামসুল আলম (৭৬) বর্তমানে কোলন ক্যান্সার, ডায়বেটিস, প্রেসার ও হাপানী রোগে ভুগছি। আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। ২৯/০১/২০১৬ তারিখে সকাল অনুমান ৮ ঘটিকায় ১নং আসামী মোঃ মাজহারুল ইসলাম সবুজ (৪০) ও তাহার ছোট ভাই মোঃ নতুন (৩৬) উভয়ের পিতা- মৃত সাব্বির হোসেন, সাং-পাহাড়পুর, কোতয়ালী, দিনাজপুর, ৩নং আসামী জয়নাল আবেদিন (৫৫), পিতা-অজ্ঞাত, ৪নং আসামী সাইদুল ইসলাম (৩৫) ও ৫নং আসামী তাহার ছোট ভাই ভুট্টু (৩০) ৪ ও ৫নং আসামীর পিতা-জয়নাল আবেদীন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার দিনাজপুরের বাসভবনে অনাধিকার প্রবেশ করে আমাকে গুরুতরভাবে আহত করে নগদ ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা, জমির মূল্যবান দলিল ও লাইসেন্সকৃত একনলা বন্দুকটি লুট করে একটি গুলি ফুটিয়ে চলে যায়। বন্দুকটি পরে কোতয়ালি থানার এস.আই ফিরোজ খান নূন ১নং আসামী মোঃ মাজহারুল ইসলাম সবুজের নিকট হতে উদ্ধার করেন। ৮নং ওয়ার্ডের নবনিযুক্ত কমিশনার কাজী আকবর হোসেন ওরেঞ্জ সাহেব আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এই ব্যাপারে কোতয়ালী থানায় আমি গত ২৯/০১/২০১৬ইং তারিখে ৫৩নং মামলা করি এবং আসামীরা পরে এ ব্যাপারে ৫৪নং মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি আমেরিকার রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে এবং আমেরিকান সিটিজেন সার্ভিস থেকে সময় সময় আমার অবস্থার খবরাখবর নিচ্ছেন। আমি প্রতি মুহুর্তে আতংকের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছি। আমার দিনাজপুরের বাসভবনে নিরাপত্তার স্বার্থে দুটি সিসি ক্যামেরা ছিল যাহা আসামীরা ২৫/০২/২০১৬ইং তারিখে রাত আনুমানিক ৩.০০ টার সময় চুরি করে নিয়ে যায়। এই ব্যাপারে কোতয়ালী থানায় ২৮/০২/২০১৬ইং তারিখে ১৬৭৯নং জিডি করা হয়। আসামীরা আমার সিকিউরিটি গার্ডকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাকুরী ছেড়ে চলে যেতে বলে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট আমার জীবন রক্ষার জন্য বিশেষভাবে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রাক্তন সিভিল সার্জন ও ফ্যামেলী প্লানিং এর ডেপুটি ডাইরেক্টর আমেরিকা ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক। লিবিয়াতে কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আরব দেশগুলির দ্বারা বাংলাদেশকে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা এবং স্বীকৃতির ব্যাপারে বিশেষ অবদান রেখেছিলাম। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর লোক লিবিয়াতে নিয়োগের ব্যাপারে বিশেষ অবদান রেখেছিলাম। ২০০১ সালে ১১ই সেপ্টেম্বর আমেরিকা সন্ত্রাসীদের হামলার কবলে পড়লে আমি বাংলাদেশ থেকে একটি বিশাল মানবন্ধনের মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জজ ডব্লিউ বুশ আমাকে একজন দেশপ্রেমিক হিসাবে আখ্যায়িত করে এবং আমার জন্মভূমি দিনাজপুরের গরীব রোগীদের জন্য আমেরিকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল নামে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে আমেরিকায় বসবাসরত পাঁচ লক্ষ অবৈধ বাংলাদেশীকে বৈধ করা ব্যাপারে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রেসিডেন্ট ওবামা আমার নিকট সহযোগিতা চেয়েছেন। দিনাজপুরের গরীব দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য আমাকে শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে সম্মান সূচক পদক ২০১৫ এবং ড.শহিদুল্লাহ স্বর্ণপদক ২০১৫ প্রদান করেন। ২০১১ সালে আমি দিনাজপুর জেলা স্কুলের মেধাবী ছাত্রদের জন্য দশ লক্ষ টাকা স্কলারশীপ প্রদান করি। ২০১২ সালে আমি দিনাজপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রীদের জন্য দশ লক্ষ টাকা স্কলারশীপ প্রদান করি। আমার পিতা মরহুম আব্দুর রউফ কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ হতে ডিগ্রী প্রাপ্ত হয়ে ১৯৩২ সালে কলিকাতার বেঙ্গল টেকনো নামে একটি ঔষধের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ঔষধ কুইনাইন বাই হাইড্রোক্লোরাইড ইনকেজকশন তৈরী করে ভারতবর্ষের মধ্যে খ্যাতিনামা অর্জন করেছিলেন। ১৯৩৬ সালে সেই ঔষধের কারখানাটি দিনাজপুরের বালুবাড়ীতে স্থানান্তরিকত করার সময় কলিকাতার মূখ্যমন্ত্রী স্যার খাজা নাজিমুদ্দিন, সিভিল সাপ্লাই এর মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং কলিকাতার মেয়র শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক দিনাজপুরের সেই বেঙ্গল টেকনো ঔষধের কারখানাটি উদ্বোধন করার জন্য এসেছিলেন। আমার তিন কন্যা আমেরিকাতে চিকিৎসা লাইনে সুপ্রতিষ্ঠিত।
ডা: সামসুল আলম অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। তিনি জনকল্যাণে হাসপাতাল নির্মাণের কথা উল্লেখ করেন বলেন, নিরীহ জনগণের চিকিৎসার কথা ভেবে হলেও সরকার হাসপাতালের ভূমি উদ্ধার ও হাসপাতাল নির্মাণের পথের সকল বাধার দূর করতে উদ্যোগী হবেন।