অগ্নিঝরা মার্চ-তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা

indexডেস্ক রিপোর্ট :: অগ্নিঝরা মার্চের চতুর্থ দিন আজ। স্বাধীনতাকে পাওয়ার জন্য আকুল হয় বাঙালি জাতি। এ মাসেই শুরু হয় পাকিস্থানী হায়নাদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। বাঙালি জাতিও পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত হতে থাকে। সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও জ্বলতে থাকে প্রতিবাদ- প্রতিরোধের অনির্বান শিখা। ১৯৭১ সালের ১মার্চ পাকিস্থানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষনা করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সিলেটের মানুষ। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হতে থাকে সাধারন মানুষ। জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে খবর ছড়িয়ে পড়ে। অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন ছাড়া যখন অন্য কোন পথ খোলা ছিলনা তখন পুরুষের সাথে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সিলেটের নারীরাও রাজপথে নেমে আসেন। মুক্তিকামী সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করতে মিছিলের অগ্রভাগে থেকে তারা শে¬াগানে শে¬াগানে প্রকম্পিত করে তুলেন সিলেটের রাজপথ।
একদিকে আলোচনার নাম করে সময়ক্ষেপণ অন্যদিকে পাকিস্থানিরা বাঙালি নিধনের কৌশল খুঁজতে থাকে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ নিরপরাধ ঘুমন্ত বাঙালি জাতির উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী শুরু করে তাদের ‘অপারেশন সার্চ লাইট’। পাকি বাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ চালায়। এদেশের শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। তারা পুরো দেশকে গ্রাস করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। এক রাতেই ঢাকার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করে। রক্তে রঞ্জিত করে ঢাকার রাজপথ- বাংলার সবুজ শ্যামল প্রান্তর। ঘুমন্ত বাঙালি জাতিও সেদিন গর্জে উঠে। স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হয় জাতি। মানবতা বিরোধী হামলায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েও ঘুম ভাঙা চোখে মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে তীব্র প্রতিরোধ ঘরে তোলেন। দেশের সর্বত্র শুরু হয় সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে এ জনপদে জ্বলে উঠে স্বাধীনতার অর্নিবাণ শিখা। বাঙালি জাতি পাল্টা জবাব দিতে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে পাকিস্তান বাহিনীর শৃঙ্খলের নাগপাশ ছিন্ন করতে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতাসহ সকল শ্রেণী পেশার নারী-পুরুষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।