এরশাদ ও জিএম কাদেরকে নিয়ে বোমা ফাটালেন আনিসুল

ershad-kader-anisulডেস্ক রিপোর্টঃ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশেই এক এগারোর সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলাম বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘ওই সময় দায়িত্ব নেয়ায় এরশাদ মাইনাস থ্রি ফর্মুলায় পড়েননি। তখন তিনি দলের মিটিংয়ে আসতেন না। তবে সবই জানতেন। কাজেই তিনি মাইনাসও হননি। আর ওই দুই বছরে অর্থাৎ আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকাকালীন দলের কাউকে কোনো পদ থেকে সড়ানোও হয়নি।’

মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের বক্তব্যের জবাবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ একথা বলেন।

সম্প্রতি এরশাদ শেরপুরে এক জনসভায় বলেছিলেন, ‘ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ১১/১১র কুশিলব। তার বিচার হওয়া উচিত।’ তবে এ সম্পর্কে গণমাধ্যমে আজই তিনি (এনশাদ) বলেছেন, এরকম কিছু তিনি বলেননি।

১/১১ প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর ২০০৬ সালে একটি মহল থেকে আল্টিমেটাম দেয়া হয় এরশাদকে দেশত্যাগের জন্য। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এরপর নানা ঘটনা। ২২ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধেও জাপার ভূমিকা ছিল। এর আগে ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘ওই সময় সত্যিকার অর্থেই ছিল মাইনাস থ্রি পরিকল্পনা। এরশাদ নেগোশিয়েশন করে সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি স্টেপ ডাউন করবেন। তখন আমরা বলেছিলাম এটা ঠিক হবে না। এরপর তিনি তার ভাই কাদের সাহেবকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে চাইলেন। কিন্তু তাতে কাদের সাহেব রাজি হলেন না। কারণ তখন তিনি তাদের (১/১১ নায়কদের) সেমিনারে যেতেন। তারা সরকার গঠন করলে যেন তাতে সম্পৃক্ত হতে পারেন। এরপর এরশাদের নির্দেশেই আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেই।’

৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বিষয়ে আনিস বলেন, ‘এরশাদের কথামতো মনোনয়ন জমা দেয়া হয়। এরপর বলা হলো প্রত্যাহার করার জন্য। কিন্তু গণতন্ত্রের স্বার্থে তা করা সম্ভব হয়নি। তবে রুহুল আমিন হাওলাদার অনেককে প্রত্যাহার করালেন কিন্তু তিনি এবং তার স্ত্রী নির্বাচন করলেন।’

তিনি বলেন, ‘এখন বলা হচ্ছে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে। কে বলেছে, কাদের সাহেব? তিনিও তো পীরগঞ্জে ও নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। পদত্যাগ যদি করতেই হয় তবে কারো কথায় নয়, দলের স্বার্থে করবো।’

আনিস প্রশ্ন করে বলেন, ‘কাদের সাহেবকে এরশাদ বলেছেন তিনি উত্তরাধিকার। এটা কী গণতন্ত্র? একজনের জন্য পার্টির আকার পরিবর্তন করবেন তা হতে পারে না। অর্থাৎ দলে কো-চেয়ারম্যোনের পদ নেই।’

এরশাদের উদ্দেশ্যে আনিস বলেন, ‘আমার ভাই হেড অব দ্য পার্টি, এটা কেউ বলতে পারেন না। এরশাদ আমাকে বিশ্বাস করেন। তার ছেলে এরিকের লিগ্যাল গার্ডিয়ান তিনি আমাকেই করেছেন। এ বিষয়ে একটি ফিক্সড ডিপোজিটও আমার নামে।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রে একটি ধারা আছে। ওই ধারার কারণে কালকে পার্টিতে আমাকে নাও রাখা হতে পারে। ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে একটা পার্টিকে ধ্বংস করা ঠিক হবে না। আপনার (এরশাদ) সঙ্গে থাকতে চাই। সেই থাকাটা গঠনতান্ত্রিক হতে হবে। ওনার ভাইয়ের জন্য পার্টি ধ্বংস হবে এটা চাই না। আর এখনো তিনি পার্টিকে ঠিক করতে পারেন।’

জাতীয় পার্টি কী ব্রাকেটবন্দি হচ্ছে এমন প্রশ্নে আনিস বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে কোনো জাতীয় পার্টি হচ্ছে না। যা হবে গঠনতন্ত্র মোতাবেক হবে।’

অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কাদের সাহেব বলবেন, তারপর এরশাদ সাহেব বলবেন, তাতে তো পদত্যাগ হবে না। পদত্যাগ হবে দলের স্বার্থে।’ এছাড়া ১/১১ প্রশ্নে তিনি কমিশন গঠন করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন।