সুন্দরবন ধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বিদেশীদের স্বার্থে …অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ

tel gas copyবিদ্যুৎ সংকট সমাধানের কথা বলে অসংখ্য প্রাণের সমষ্টি মহাপ্রাণ সুন্দরবন ধ্বংস করে সর্বনাশা রামপাল ওরিয়ন বিদ্যুৎ প্রকল্প বিদেশী কোম্পানীদের স্বার্থে করা হচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বিশ্ব ঐতিহ্য এই সুন্দরবন তার অসাধারণ জীব বৈচিত্র দিয়ে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে, লক্ষ লক্ষ জীবিকার সংস্থান করে, প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশকে ডাল হিসেবে বাঁচিয়ে রাখে। বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা উপেক্ষা করে ভারতীয় কোম্পানী এনটিপিসি রামপাল ও বাংলাদেশ ওরিয়েন বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে এই অনবায়নযোগ্য বিশাল আশ্রয় সুন্দরবন হত্যার আয়োজন চলছে। অন্যদিকে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সামনে রেখে দেশের ভূমিদস্যুদের নানা রকম প্রকল্প করা হচ্ছে। ভারতের এনটিপিসি ভারতের পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের সুন্দরবন বিনাসী তৎপরতায় যুক্ত হয়েছে। মুনাফালোভী আগ্রাসানে এখন প্রতিদিনই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সুন্দরবন। তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ সিলেটের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

ঢাকা-সুন্দরবন অভিমূখী জনযাত্রা সফল করার লক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে সভায় সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক ব্যরিষ্টার মোঃ আরশ আলীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় কমিটির সদস্য বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ, মিজানুর রহমান, সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় পলিট ব্যুরোর সদস্য ধীরেন সিংহ, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সিকান্দার আলী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিলেট জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কমরেড হাবিবুল ইসলাম খোকা, ওয়ার্কার্স পার্টি সিলেট জেলা সভাপতি কমরেড আবুল হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টি সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফ মিয়া, বাসদ সিলেট জেলার সমন্বয়ক আবু জাফর, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সদস্য এড. হুমায়ূন রশিদ সুয়েব, ন্যাপ সিলেট মহানগর সভাপতি মোঃ ইসহাক আলী, ঐক্য ন্যাপ সিলেট জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক দেবব্রত রায় দিপন, শাবিপ্রবি’র সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দীকা রনি, বাংলাদেশ উদীচী সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক রতন দেব প্রমূখ।

বক্তারা আরো বলেন, আমরা বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে যথাযথ পথ গ্রহণে সবসময় দাবী করে আসছি। জাতীয় কমিটির সাত দফা দাবীতে তার সমাধানের পথও দেখিয়েছি। জাতীয় কমিটির সাত দফা দাবী অনুযায়ী সর্বজনের সম্পদে শতভাগ মালিকানা ও শতভাগ সম্পদ দেশের কাজে ব্যবহার দুর্নীতি করার দায়মুক্তি আইন বাতিল করে খনিজ সম্পদ রপ্তানী নিষিদ্ধ করণ আইন প্রণয়ন, পিএসসি প্রক্রিয়া বাতিল করে স্থলভাগে ও সমুদ্রে নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধানে জাতীয় সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সুযোগ দক্ষতা ও বরাদ্দ প্রদান, রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ প্লান চালু, মেরামত ও নবায়ন, এশিয়া এনার্জিকে দেশকে বহিষ্কার ও উন্মুক্ত খনন পদ্ধতি নিষিদ্ধসহ ফুলবাড়ী চুক্তির পুর্ন বাস্তবায়ন তথা জাতীয় সম্পদের উপর জাতীয় কর্তৃত্ব নিশ্চিত করার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য জ্বালানী সম্পদের সর্বোত্তম মিশ্রন ঘটিয়ে একটি জ্বালানী নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, জনধ্বংসী পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবর্তে দীর্ঘ মেয়াদী নবায়নযোগ্য জ্বালানী উপর গুরুত্ব প্রদানই যথাযোগ্য সমাধানের পথ। কিন্তু সরকার এসব কম ব্যায়বহুল, নিরাপদ, টেকসই এবং জনপরিবেশ অনুকূল পথে না গিয়ে দেশী বিদেশী কতিপয় গোষ্টির স্বার্থে তার উল্টোযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশের মানুষ দেশী বিদেশী লুটেরাদের জিম্মি হওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করে নাইী। দেশের সম্পদ শতভাগ দেশের মানুষের কাজে লাগাতে হবে। সুন্দরবন ও বাংলাদেশ লুন্ঠন ও মুনাফার বলি হবে না। লুন্ঠন ও সম্পদ বিনাশী নীতি পরিবর্তন, জনস্বার্থের উন্নয়ন নীতি গ্রহণ এবং জাতীয় সম্পদে জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করতে দেশের সকল মানুষের অংশগ্রহণ দরকার। ঐক্যবদ্ধ জাতিয় জাগরণ দরকার। বক্তারা সুন্দরবন অভিমূখী ১০ থেকে ১৫ মার্চব্যাপী অভিযাত্রা সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।