বাহুবলে ৪ শিশু খুন: এবার আদালতে হত্যার বর্ণনা দিলো জুয়েল

s1হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রটিকি গ্রামের চার শিশু হত্যার দায় স্বীকার করে এবার আদালেত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে জুয়েল। রোববার বিকেলে আদালাতে জবানবন্দি দেয় সে। এরআগে গত শুক্রবার হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলো জুয়েলের ছোট ভাই রুবেল।
জুয়েল এই মামলার প্রধান আসামী আব্দুল আলীর ছেলে। গত বুধবার ৪ শিশুর লাশ উদ্ধারের পর আলী ও জুয়েলকে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব নন্দী জানান, গত বৃহস্পতিবার ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিলো জুয়েলকে। রিমান্ডের ৪র্থ দিনেই স্বীকারোক্তি প্রদানে সম্মত হয় জুয়েল। তাই রোববার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহম্মদ খন্দকারের আদালতে এ জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
তিনি জানান, রুবেল ও জুয়েল প্রায় একই ধরণের জবানবন্দি দিয়েছে। তবে জুয়েল হত্যার সাথে আরো কয়েকজন সম্পৃক্ত বলে জানিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এই মূহূর্তে আমরা তাদের নাম প্রকাশ করছি না।
এদিকে, এ ঘটনায় শনিবার আটক সালেহ আহমদকে আজ আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত রিমান্ডের শুনানির জন্য সোমবার ধার্য করেন।
গত শুক্রবার জবানবন্দিতে রুবেল মিয়া বলেছিলো, ‌’১২ ফেব্রুয়ারি শিশুদের বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করা হয়েছিলো সুন্দ্রটিকি গ্রামের ৪ শিশুকে। তারপর একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে নিয়ে যাওয়া হয় পাশ্ববর্তী এক গ্যারেজে। সেখানেই চেতনানাশক দ্রব্য প্রয়োগে অজ্ঞান করে রাতে চারজনকে শ্বাসরোধ ও বুকে আঘাত করে হত্যা করা হয়। ওই রাতেই হত্যাকারীরা মরদেহ গ্রামের পাশের একটি হাওরে বালুর গর্তে লাশ চাপা দিয়ে রাখা হয়।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাঈল হোসেন (১০)। গত বুধবার সকালে বালুচাপা অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনেক গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, সুন্দ্রাটিকি গ্রামের গ্রাম পঞ্চায়েত আব্দুল আলী ওরফে বাগল মিয়ার সঙ্গে নিহত শিশুদের অভিভাবকদের পক্ষের পঞ্চায়েত খালেক মিয়ার দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। মাসখানেক আগে গ্রামের একটি বড়ইগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বাগল মিয়ার সঙ্গে খালেক মিয়ার আবারও দ্বন্দ্ব হয়। এর পর থেকেই ৪ শিশুকে হত্যার পরিকল্পনা নেয় পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী ওরফে বাগল মিয়া।