জামালগঞ্জে জলমহালের পানি সেচে চলছে মাছ ধরার মহোৎসব!

jamalgonjডেস্ক রিপোর্টঃ জামালগঞ্জে পানিয়ে শুকিয়ে চলছে ইজারাদাররা বিল সেচে মাছ ধরার মহোৎসব চলছে। ইজারাদার ও সাব ইজারাদাররা মেশিন দিয়ে বিলের তলা পর্যন্ত শুকিয়ে ধরছে মাছ। ইজারাদারা এলাকার প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ায় এলাকার সাধারন মানুষ ভয়ে মুখ খুলেননা,আর স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তর দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন ইজারাদারা রাজনৈতিক নেতা হওয়ায়। এভাবে মাছ ধরলে হাওর এলাকার মাছের বংশ বিস্তার কমে যাবার আশংকা করছেন এলাকার মৎস্যজীবী ও কৃষক পরিবাররা।

ইজারাদারা অবশ্য বলছে আমরা পানি কমিয়ে মাছ ধরার জন্য বিল সেচা হচ্ছে,আর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দাবী কোথায় এই ধরনের কাজ হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো,আর কর্তা ব্যক্তিরা বলছে সরকারী নীতি না মানলে আমরা বন্দোবস্ত বাতিলের ব্যবস্থা করবো।

সরেজমিনে মঙ্গলবার উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়ন ও ভীমখালী ইউনিয়নে ঘুরে দেখা যায়,ছয়হারা গঙ্গাধরপুর মৌজার ছয়হারা নদীতে স্থানীয় নাম ঢালা বিলে গেল শনিবার থেকে ২টি পাওয়ার পাম্প মেশিন দিয়ে চলছে বিল সেচার কাজ।

একই ভাবে ভীমখালী ইউনিয়নের তেরানগরের ব্রীজের পাশে দোলতা নদীতে একটি বড় পাওয়ার পাম্প দিয়ে চলছে সেচের কাজ। কাশীপুর ও লক্ষীপুরের গ্রামের মাঝামাঝি গুল বিলে বড় কয়েকটি পাওয়ার পাম্প দিয়ে প্রায় শেষ পর্যায়ে এই বিল সেচা। গঙ্গাধরপুর গ্রামের সামনে লম্বা বিলে ও বিনাজুড়ার সামনে লম্বা বিলেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই মেশিন দিয়ে চলছে বিল শুকানোর কাজ। গুল বিলের সাব ইজারাদাররা বিলের ইজারাদারকে বিলের টাকা পরিশোধ না করায় তারা বাধা দিয়ে সেচের পাম্প বন্ধ করে রেখেছে।

বিলের তীর বর্তী মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন,বিল সেচার প্রস্তুতি নিচ্ছেন লক্ষীপুরের পাশে চাটনী বিলের ইজারাদার ও তার লোকেরা। রাজাপুর ব্রীজের সংলগ্ন দোলতা নদীর অপর অংশে মেশিন ও পানি সেচের পাম্প নিয়ে সেচার জন্য প্রস্তুতি রেখে সেরেছে।

ইজারাদাররা বিভিন্ন মৎস্যজীবি সমিতির নামে বন্দোবস্ত এনে নিজেরা সাব লিজ নিয়ে থাকেন, ইজারাদাররা সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে তারা অধিক লোভের আশায় মেশিন দিয়ে শুকিয়ে জলমহালের তলা থেকে মাছ ধরে থাকেন। তলা শুকিয়ে মাছ ধরার কারনে এলাকার সাধারন মানুষজন বি ত হচ্ছেন। এভাবে পানি সেচে মাছ ধরার ফলে আমাদের কাছ থেকে দেশীয় প্রজাতির চির চেনা মাছ যেমন শিং, মাগুর, কই, টেংরা, পুটি, শোল, টাকি, বাইলা, মিনি, বেদা, গুলসাইয়া, রানী, বাইম, কটকইট্টা, কইলা,পাবদা,ঘইন্যা,তারা বাইম,মকা, ইছা, তিতনা সহ ইত্যাদি মাছ গুলো হারিয়ে যাচ্ছে।

তেরানগরের বাসিন্দা বশির মিয়া জানান,আমরা গত বছর নদী শুকানোর সময় অভিযোগ করেছিলাম,বন্ধ ছিলো সেচা এবার আর অভিযোগ করিনী,ইজারাদাররা নদী শুকানোর জন্য মেশিণ লাগিয়েছে।

ঢালা বিলের সাব ইজারাদার সুনামগঞ্জের জসিম উদ্দিন জানান,আমি বিলের পার্টনার ও সমিতির সদস্য,গত কদিন আগ থেকে মাছ ধরার জন্য মেশিন লাগিয়েছি। লক্ষীপুর মিলন মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম রানা জানান,আমার সমিতির নামে ৩ বছরের জন্য বন্দোবস্ত ছয়হারা নদী আগামী বছর শেষ হবে,সেচা ছাড়া মাছ ধরা সম্ভবনা,তাই সেচতে হয়।

দোলতা নদীর সাব ইজারাদার শেরন মিয়ার সাথে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান,যে সমস্ত জলমহাল গুলো মেশিন দিয়ে শুকাচ্ছে,তা সরেজমিন পরির্দশন শেষে লিখিত ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করবো।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা জানান, জলমহালের নীতিমালা লংঘন করে যারা শুকিয়ে মাছ ধরছে তাদের বিরুদ্ধে নীতি মালা লংঘনের অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।