খালেদা তার পাওয়ার দেখিয়েছেন এখন আমরা আমাদের পাওয়ার দেখাচ্ছি

  • খালেদা জিয়া এবারের মত ঠগা আর কোন দিন খাননি
  • বুদ্ধি আসে লন্ডন থেকে কার্যকর হয় ঢাকায়
 ঐক্য পরিষদের সভায় বক্তব্য রাখছেন সুরঞ্জিত সেনা গুপ্ত। ছবি- এনা।
ঐক্য পরিষদের সভায় বক্তব্য রাখছেন সুরঞ্জিত সেনা গুপ্ত। ছবি- এনা।

নিউইয়র্ক থেকে এনা: ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না করে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবার যে ঠগা খেয়েছেন তা আর কোন দিন খাননি। বুদ্ধি আসে লন্ডন থেকে আর কার্যকর হয় ঢাকায়, তা দিয়েতো ঠগা খেতেই হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পর সংবিধান সংশোধন করে ২৬ বছর সেই হত্যার বিচার করতে দেয়া হয়নি। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরাও কোন কথা বলিনি। খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন তিনি তার পাওয়ার দেখিয়েছেন, এখন আমরা আমাদের পাওয়ার দেখাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গুলশান টেরেসে যুক্তরাষ্ট্র ঐক্যপরিষদের নব নির্বাচিত কর্মকর্তাদের অভিষেক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও আইন ও বিচার বিভাগীয় সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনা গুপ্ত এ কথা বলেন।
ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নবেন্দু বিকাশ দত্তের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক স্বপন দাসের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সুরঞ্জিত সেনা গুপ্ত। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান। অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন ঐক্য পরিষদের গভনির্ং বডির চেয়ারম্যান এটর্নী অশোক কর্মকার, সদস্য সচিব চন্দন দত্ত, ঐক্য পরিষদের অন্য দুই সভাপতি নয়ন বড়–য়া ও জেমস রয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, দেশে যত কড়া বলা যায়, এখানে তত কড়া বলা যাবে না। কড়া বলা যাবে না, কারণ এটা কোথা থেকে কোথায় যাবে, যার উদাহরণ আমাদের জন্য ভাল না। লতিফ সিদ্দিকীর উদাহরণ টেনে বলেন, দেখলেনতো একজন মন্ত্রীতো এখান থেকে আর দেশেই যেতে পারেননি। তার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানের সভাপতি আমাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন উনি আমার আগে বক্তব্য রাখবেন, আমি বাধা দিইনি, কারণ সভাপতিকে কেউ বাধা দিতে পারেন না। আর আমরা বাংলাদেশের মানুষ সভাপতিকে ভয় পাই। কারণ বাংলাদেশটাই হচ্ছে সভাপতি, রাষ্ট্রপতি, সেনাপতি ও বিচারপতির দেশ। আর আমরা পাবলিক সবাই হচ্ছি ভগ্নিপতি। এরা যদি এক হয়ে যায় তাহলে আর কোন ব্যাপার নেই। এরা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে। এমন কোন সামরিক শাসন আসেনি, তাদের সঙ্গে একজন বিচারপতি থাকেননি। তিনি বলেন, আজকে আমরা এমন একটি সময়ের কথা বলছি যা মানবতার জন্য কঠিন দু:সময়। এই রকম দু:সময় বিশ্বের মানব ইতিহাসে আর কখনো আসেনি। আটলান্টিকের এ পাড়ে থেকে আপনারা যদি বলেন, আমরা সেইফ আছি, আমি বলবো আপনারাও সেইফ নেই। ইউরোপ যখন জেগে উঠেছে, আটলান্টিক পাড়ি দিতে কতক্ষণ? বাংলাদেশ স্বাধীন করতে গিয়ে আমরা শরনার্থী হয়নি? এখন ইউরোপের উপর ঠেলা পড়েছে। তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় এটাই প্রকৃত সময় আমাদের ভাল কিছু করার, ভাল কিছু ভাবার, ভাল কিছু দেখার। আমি আমার মাতৃভূমিতে থেকেই আমি মরতে চাই, আমার অধিকার ভোগ করতে চাই। ¯œায়ু যুদ্ধের পর ভাবা হয়েছিলো যে পৃথিবীতে শান্তি আসবে। ¯œায়ু যুদ্ধ নেই, সোভিয়েট ইউনিয়ন নেই, শান্তি আসবে। তখন হান্টিংটন নামে একজন লেখক বই লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন ¯œায়ুযুদ্ধ উত্তর যে বিশ্ব আসছে, এটা আরো ভয়াবহ হবে, এটা আরো মানবতা বিবর্জিত হবে, এটা আরো বর্বোরোচিত হবে। সেখানে ধর্ম আবারো সামনে চলে আসবে। আজকের পৃথিবীতে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এটা কী আপনার চিন্তা চেতনার মধ্যে মিলাতে পারেন? ইউরোপ কি কোন দিন ভেবেছে মানুষ তার জীবন সম্পর্কে কতটুকু আতঙ্কিত হলে এই উত্তাল সাগর পার হয়ে নারী পুরুষ নির্বিশেষে ছুটে আসবে প্রাণ রক্ষার জন্য। আপনারা দেখছেন না আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মসজিদে যাচ্ছেন। তিনি বিভিন্ন বক্তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, ধর্ষণ, সম্পত্তি দখলের বিষয়টি বন্ধের কৌশল হিসাবে আলোচনা হতে পারে। যদি ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধন্ধু হত্যা করা না হতো তাহলে বকেয়া বিষয়গুলো (যুদ্ধাপরাধের বিচার) আমাদের করতে হতো না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে গিয়ে শেখ হাসিনা কী যে প্রেসার তা ভাষায় বলা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বলেই সম্ভব হচ্ছে। হেফাজতকে মোকাবিলা করেছেন। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায় করতে হলে সর্বক্ষেত্রে আমাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সংসদে থাকতে হবে, প্রশাসনে থাকতে হবে, সেনা বাহিনীতে থাকতে হবে, প্রাইভেট সেক্টরে থাকতে হবে, ব্যাংক থাকতে হবে, টিভি থাকতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিনিধি থাকলেই অধিকার আদায় হবে।
উল্øেখ্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জাতিসংঘের একটি অধিবেশনে যোগ দিতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক আসেন।