সিলেটে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

picগতকাল শনিবার সকাল ১১ ঘটিকায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর উন্নীত করার দাবীতে সহশ্রাধিক ছাত্র ছাত্রীর অংশগ্রহণে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে অর্থমন্ত্রীর বাসভবনে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এম.সি. বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মদন মোহন কলেজ ও বৃন্দাবন সরকারি কলেজ এর ছাত্র/ছাত্রী সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের প্রধান ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য্য। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে সংহতি প্রকাশ করেন- শাবিপ্রবি’র বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তার সরকার ও পিএসএস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এমদাদুল হক।
ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, চাকরীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সের কোন বাঁধা থাকা ঠিক নয়। যোগ্যতাই হওয়া উচিত নিয়োগের মাপকাঠি। তবে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে চাকরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ এ উন্নীত করা উচিত।
সাধারণ ছাত্র পরিষদ সিলেট জেলা শাখার নেতৃবৃেন্দর মধ্যে বক্তব্য রাখেন সভাপতি মিজান খাঁন, সহ-সভাপতি কাউসার খসরু, সাধারণ সম্পাদক এস. এম মিজানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নীলয় গোস্বামী, সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ তালুকদার। অন্যান্যদের মাধ্য বক্তব্য রাখেন ফারুক আহমেদ, উত্তম ভট্রাচর্য্য, রায়হান চৌধুরী শান্ত, মারজানা আক্তার, তাসলিমা আক্তার প্রমূখ।
বক্তারা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার পক্ষে জোর দাবী জানিয়ে বলেন, বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ গত ৩১ জানুয়ারী ২০১২ খ্রিঃ তৎকালীন জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার থাকা কালীন জাতীয় সংসদে জনগুরুত্বপুর্ণ বিষয় হিসেবে সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫-এ উন্নীত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। কিন্তু ৩ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। যেখানে প্রতিবেশি দেশসমূহে বয়সসীমা ৩৫ এর উর্ধেŸ এবং উন্নত বিশ্বে সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের নির্দিষ্ট কোন বয়সসীমাই নেই। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ হওয়ায় ত্রিশ বছরের পরে অনেকেই বেকার হয়ে যায়। ফলে বেকার সংখ্যা হ্রাসের চেয়ে জ্যামিতির হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে । কোন কোন প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে চাকরি করলেও এর ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তা থাকে না বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। বক্তারা মনে করেন, প্রচলিত নিয়মানুসারে ২৩ বছরে শিক্ষা জীবন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সমীকরণটি শুধুমাত্র কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। স্লাতকোত্তর সনদপ্রাপ্তি সহ সর্বসাকুল্যে বয়স প্রায় ২৭/২৮ বছর অতিক্রম হয়ে যায় । ফলে চাকরিতে প্রবেশের সময় একেবারেই সংকীর্ণ হয়ে পরে। ২/৩ বছর পরে সরকারী চাকরীতে যোগদানের যোগ্যতা না থাকায় দেশে আড়াই লক্ষ সরকারি পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও যোগ্য ও অভিজ্ঞ লোকের সে সকল পদে নিয়োগদান সম্ভব হচ্ছে না। সরকার আশ্বাস দিয়েও কেন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা তা রহস্যজনক। দেশে সস্তা শ্রমবাজার সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে তারই অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহনে গড়িমসি করার কারন বলে মনে করেন। অবিলম্বে সরকারকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার জোর দাবী জানান। বক্তারা আরও উল্লেখ করেন সরকারি দপ্তরগুলোতে অস্থায়ী নিয়োগ বন্ধ করারও দাবী জানান।