নবীগঞ্জে গৃহবধু নিখোঁজ, অগ্নিদগ্ধ লাশ উদ্ধার : আটক ৩

অগ্নিদগ্ধ লাশ, শিশুকন্যা কোলে আটক লিটন দাশ
অগ্নিদগ্ধ লাশ, শিশুকন্যা কোলে আটক লিটন দাশ

ডেস্ক রিপোর্টঃ নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ বসতঘর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর থেকে পাশের বাড়ির গীতা রাণী দাশ নামের মানসিক ভারসাম্যহীন গৃহবধু নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের ধারনা মৃত দেহটি গীতা রাণী দাশের হতে পারে। রবিবার দুপুর ১ টার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন- গীতা রাণী দাশের স্বামী লিটন দাশ, শ্বশুর বিশল দাশ, শাশুড়ী জবরাণী দাশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় নবীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বিশল দাশের পুত্র লিটন দাশের সাথে প্রায় ৩ বছর পূর্বে পার্শ্ববতী বানিয়াচং উপজেলার ঝিলোয়া গ্রামের প্রেমানন্দ চৌধুরীর কন্যা গীতা রাণী দাশের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন পরই লিটন জানতে পারে গীতা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। এ বিষয় নিয়ে উভয় পরিবারের লোকদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তিতে একাধিককবার শালিশ বৈঠক হয়। বিয়ের ২ বছর পর গীতার কোলজুড়ে আসে একটি কন্যা শিশু। পরে লিটন দাশ মৌলভীবাজার এলাকায় আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকেই গীতা বাড়ির সামনের একটি বাংলো ঘরে আলাদা থাকতেন।
স্থানীয়রা জানান- শনিবার রাত প্রায় ৩টার দিকে লিটন দাশের পার্শ্ববর্তী ইরেশ দেবনাথের বাড়ীতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নেভানোর আগেই সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে এসময় ইরেশ দেবনাথের বসত ঘরে কেউ ছিলনা। হঠাৎ করে কিভাবে কোন কারণ ছাড়াই আগুন লাগলো এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
রবিবার সকাল ১০টা থেকে গীতা রাণী দাশকে বাড়ী ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে খোঁজাখুজি করে পাচ্ছিলেন না। এর কিছুক্ষন পর আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরে মৃতদেহের মতো কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখে পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন।
পরে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন খাঁনের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত দেহটি উদ্ধার করেন। তবে মৃত দেহটি সম্পূর্ন পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি। এদিকে স্থানীয় লোকজন ধারনা করছেন উদ্ধারকৃত মৃতদেহটি নিখোঁজ গীতার। এঘটনা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গীতা রাণী দাশের স্বামী লিটন দাশ, শ্বশুর বিশল দাশ, শাশুড়ী জবা রাণী দাশকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন- হবিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে পুলিশের উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরন করেছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।