কানাইঘাটে নৌকার মাঝির পরিবর্তন চায় তৃণমূল আওয়ামী লীগ

আ.লীগের দলীয় প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ, বিদ্রোহীর দখলে মাঠ

aaaaaকানাইঘাট থেকে ফিরে ফখরুল ইসলাম :: কানাইঘাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের প্রতি দলীয় কর্মী সর্মথকদের ক্ষোভের শেষ নেই। নানা নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে তাঁর মনোনয়ন লাভে নেতাকর্মীরা প্রায় নিরব ভূমিকা পালন করছেন। সাংগঠনিক ব্যবস্থার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক নিজাম উদ্দিন আল মিজানের পক্ষে নিরবে অবস্থান নিয়েছেন। প্রতীক বরাদ্দ না হলেও প্রার্থীদের জনসংযোগ, প্রচারণা জমে ওঠেছে এ পৌরসভায়। শুক্রবার কানাইঘাট পৌরসভা ঘুরে ভোট উৎসবের আমেজ লক্ষ করা যায়। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান ও বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আল মিজান স্বরব ভ’মিকায় প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী অলি উল্লাহ , খেলাফত মজলিশের প্রর্থী হাফিজ মাওলানা ইসলাম উদ্দিন ,রহিম উদ্দিন ভরসা নামে বিএনপির একজন প্রার্থী রয়েছেন।
কানাইঘাট নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে উপজেলা থেকে প্রতিষ্ঠিত হয় কানাইঘাট পৌরসভা। আর ২০১১ সালের ১৮ই জানুয়ারি এই পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয়। প্রথম নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হন। এই পৌরসভায় পৌর শহরসহ ৯টি ওয়ার্ডে ২৪টি গ্রাম রয়েছে। মোট ভোটার ১৬২৮৭ জন। তার মধ্যে ৮৩১১ জন পুরুষ ও ৭৯৭৬ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
এদিকে সাবেক মেয়র লুৎফুরের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আল মিজানের প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে গত ৯ডিসেম্বর কানাইঘাটের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সিলেট জেলা ও স্থানীয় সর্বস্তরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বৈঠক হয়। বৈঠক চলাকালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থিতদের মধ্যে চরম হট্টগোল, উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বৈঠক হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আল মিজানের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে কোনো সমঝোতায় উপনীত হতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
লুৎফুর রহমানের প্রার্থীতার পিছনে অদৃশ্য কারণ রয়েছে বলে অনেকের ধারণা। পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী লুৎফুর রহমানকে ঘোষণা করায় তৃণমূলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেয়া যায়। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের চাপে এখন পর্যন্ত বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক নিজাম উদ্দিন আল মিজান। তৃণমূল নেতাকর্মীদের আর্শিবাদ নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী সুবিদা জনক অবস্থানে রয়েছেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ লুৎফুর রহমানকে দলীয় প্রার্থী দিলেও তৃণমূল নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে নিরবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে প্রার্থী নিয়ে চাপা ক্ষোভের কারণেই কানাইঘাট আওয়ামীলীগে বিদ্রোহী প্রার্থী ভোটের মাঠে। বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে ভোটরে মাঠে কাবু করতে পারছেন না দলীয় প্রার্থী লুৎফুর রহমান । তৃণমূল নেতাকর্মীদের ধারণা বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক নিজাম উদ্দিন আল মিজান ভোটের মাঠে এগিয়ে।
বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক নিজাম উদ্দিন আল মিজান জানান, নৌকা নয়, কানাইঘাটে নৌকার মাঝির পরিবর্তন চায় তৃণমূল আওয়ামী লীগ এবং সর্বস্তরের জনগণ। তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভালোবাসা নিয়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় প্রতিক নির্বাচনের মাঠে প্রভাব ফেলবেনা বলেও তিনি ধারণা করছেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেগড়া দল আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। সে দলের নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী আমি। জনগণের জন্য রাজনীতি করি, আর এজন্য যোগ্য বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আমাকে প্রার্থী মনোনীত করেছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কিংবা নৌকার বিজয়ে কোনো সমস্যা হবে না। সময় মতো সবই ঠিক হয়ে যাবে। তাছাড়া বিদ্রোহ প্রশমনসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দাবিদার দলের বিদ্রোহী প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আল মিজানকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহারে কেন্দ্র ও জেলা আওয়ামী লীগ অচিরেই ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী অলি উল্লাহ বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সহযোগীতা ,ভালোবাসা,উৎসাহ দানের ফলে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার প্রতি সাধারন মানুষের দোয়া রয়েছে। বিশেষ কোন দল বা দলীয় প্রতিক নির্বাচনের মাঠে প্রভাব ফেলবেনা । তাছাড়া পৌরবাসী পরিবর্তনের সুর তুলেছে। সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্ন হলে আমার বিজয় সু নিশ্চিত।
উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দলের স্বার্থে বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করা জরুরী । আওয়ামীলীগের কোন কর্মী বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট দিবেন বলে তিনি মনে করেন না।
পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী নিয়ে কানাইঘাট পৌর এলাকার বাসিন্দা ও ব্যাবসায়ী রায়হান উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে নির্বাচনী মাঠ। এমন অবস্থা বিরাজমান থাকলে কানাইঘাটে নৌকার মাঝির পরিবর্তন ঘটতে পারে। এ ব্যাপরে স্টোন পাথর শ্রমিক রহিম উদ্দিন জানান,অন্তঃ দ্বন্দ বিরাজমান থাকলে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেন।
খেলাফত মজলিশের প্রার্থী ইসলাম উদ্দিন
কানাইঘাট থেকে ফিরে ফখরুল ইসলাম :: সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভায় খেলাফত মজলিশের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা ইসলাম উদ্দিন। জানাযায়, ইসলাম উদ্দিন খেলাফত মজলিশের কানাইঘাট উপজেলা সাধারন সম্পাদক। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তফসিল ঘোষণার পর খেলাফত মজলিশের কানাইঘাট উপজেলার এ নেতা প্রর্থী দলীয় পরিচয়ে প্রর্থী হয়েছেন । দেশের ভৌগোলিক সীমারেখায় সিলেটের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় এ পৌরসভায় চলছে ভোট উৎসবের নীরব প্রস্তুতি। প্রতীক বরাদ্দ না হলেও প্রার্থীদের জনসংযোগ, প্রচারণা জমে ওঠেছে এ পৌরসভায়। শুক্রবার কানাইঘাট পৌরসভা ঘুরে ভোট উৎসবের আমেজ লক্ষ করা যায়। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান ও বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আল মিজান, খেলাফত মজলিশের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা ইসলাম উদ্দিন স্বরব ভ’মিকায় প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী অলি উল্লাহ ,রহিম উদ্দিন ভরসা নামে বিএনপির একজন প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচন ঘিরে পৌর শহর জুড়ে ভোটারদেও উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ করা যায়। কানাইঘাট নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে উপজেলা থেকে প্রতিষ্ঠিত হয় কানাইঘাট পৌরসভা। আর ২০১১ সালের ১৮ই জানুয়ারি এই পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয়। প্রথম নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হন। এই পৌরসভায় পৌর শহরসহ ৯টি ওয়ার্ডে ২৪টি গ্রাম রয়েছে। মোট ভোটার ১৬২৮৭ জন। তার মধ্যে ৮৩১১ জন পুরুষ ও ৭৯৭৬ জন নারী ভোটার রয়েছেন। এ ব্যাপারে খেলাফত মজলিশের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা ইসলাম উদ্দিন বলেন,আমি সাধারন মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে প্রার্থী হয়েছি। বিশেষ কোন দল বা দলীয় প্রতিক নির্বাচনের মাঠে প্রভাব ফেলবেনা । তাছাড়া পৌরবাসী পরিবর্তনের সুর তুলেছে। সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্ন হলে আমার বিজয় সু নিশ্চিত।