চীনে রাতের ঘুম কেড়েছেন যে সুন্দরী

12410ডেস্ক রিপোর্টঃ চীনের রাতের ঘুম কেড়েছেন এক কানাডিয়ান সুন্দরী। নাহ তার সৌন্দর্যে মুগদ্ব হয়ে চীনাবাসির চোখে ঘুম উড়েছে তা নয়। আসলে তার কথাবার্তাই, আচার- আচরন এখন মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে চীনের। যেই সুন্দরীর করনে চীনের ঘুম হারাম তিনি হলেন ‘মিস কানাডা’ আনাসতাসিয়া লিন। চীনে শুরু হওয়া ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু মানবিধাকার নিয়ে মুখ খোলার সুবাদে তাকে ছাড়পত্র দেয়নি সরকার। আর তাতেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। ৬৫ তম ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় এখন পূর্যন্ত প্রায় ১১০জন সুন্দরী অংশগ্রহণ করেছেন। তারা সকলে চীনে পা রাখলেও প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক শুরুর দিন অনুপস্তিত ছিলেন ‘মিস কানাডা’। কেন আসতে পারেননি তিনি? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, চীনে আসার ভিসাই পাননি লিন। বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করে নিজেই বেরিয়ে পড়েছিলেন। ভেবেছিলেন যে কোন ভাবেই হোক চীনে পৌঁছে যাবেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ তা আর হয়ে ওঠেনি। ফলে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় তার থাকা হচ্ছে না। কিন্তু কেন লিনের আসা আটকে দিল চীন সরকার, তা নিয়েই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কিছুদিন আগেই চীনের বন্দি ও বিশেষ এক ধর্মালম্বীদের বিরুদ্ধে অত্যাচার নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন লিন। তখন থেকেই চীন সরকারের চোখের বালি তিনি। আর তাই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে তাঁকে। যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ চীনা এমব্যাসির কর্মকর্তারা। কানাডা সুন্দরীর জন্ম চীনেই। ছোটবেলায় বাবা মার সঙ্গে কানাডায় চলে যাওয়ার পর এখন তিনি সেখানকার নাগরিক। কিন্তু চীনের নানা ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করতে পিছপা হন না। মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে মন্তব্য করে এই অবস্থার স্বীকার হয়েও ভয় পাচ্ছেন না লিন। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবাদ না করলে কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ তা জানানো হবে না। যারা ভালকে সমর্থন করতে চান, খারাপের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে চান তারাও অন্ধকারে থাকবেন। সেই দায় থেকেই মন্দ কাজের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও সরব থাকবেন তিনি। মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় লিন এর আগেও তার মতামত নিয়ে প্রচারের আলো কেড়ে নিয়েছিলেন। এবারও তিনি প্রচারের শীর্ষে। তাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার এই ঘটনায় চীনের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মিডিয়া। এছাড়া ক্ষুদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়াও। নানা সমালোচনা চলছে দেশের অন্দরেও। আর তাতেই ঘুম ছুটেছে বেজিংয়ের ‘পাবলিক রিলেশন’ কর্তাদের। একদিকে দেশের হয়ে সাফাই দেওয়া অন্যদিকে লিনের জনপ্রিয়তা -সব মিলিয়ে ঘুম ছুটেছে তাদের। তবে শুধু সৌন্দর্য প্রতিযোগিতাই নয়, লিনের এই ঘটনা বিশ্বের রাজনৈতিক মহলেও যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। লিন অবশ্য বলছেন, তাকে চীনে আসতে না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু চীনের ইতিহাসে এই অসম্মান জুটেছে ক্রিশ্চিয়ান বেল, ব্র্যাড পিটের মতো তাবড় ব্যক্তিদের কপালেও। আর তাদের সঙ্গে একাসনে বসতে পেরে নিজেকে খানিকটা সম্মানীয়ই বোধ করছেন লিন।