নিরাপত্তার ঝুঁকিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

Dangerous airports map.jpg
Dangerous airports map.jpg

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ এশিয়ার মধ্যে নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে শুধুমাত্র ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যেসব দেশের বিমানপথ রয়েছে, তার মধ্যে নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা বিমানবন্দরগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ব্রিটেন। ওই তালিকাতেই এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

মিসরের সিনাইয়ে জঙ্গিদের বোমায় রাশিয়ার মেট্রোজেট বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিশ্বের অনেক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। দেশটি এর দৃষ্টিতে নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা বিমানবন্দরগুলোকে চিহ্নিত করেছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের একটি চিত্রে ঝুঁকিপূর্ণ এসব বিমানবন্দরের অবস্থান উল্লেখ করা হয়েছে।

এগুলো হলো- মরক্কোর মারাকেশ, আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স, তিউনিসিয়ার তিউনিস, তুরস্কের ইস্তাম্বুল, মিসরের শারম আল-শেখ, কেনিয়ার নাইরোবি, সৌদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ এবং বাংলাদেশের ঢাকা। চিত্রের তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বিমানবন্দরটি বাংলাদেশের ঢাকায়।

ডেইলি মেইল জানিয়েছে, রুশ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর শারম আল-শেখ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এরপরও এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড। রাশিয়ার মেট্রোজেট হামলার জন্য তিনি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, আইএসের সঙ্গে যুক্ত বা অনুপ্রাণিত কোনো ব্যক্তি এই বিমানে বোমা বহন করেছিল।

হ্যামন্ড সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যেসব দেশে ইসলামিক স্টেটের উপস্থিতি (আইএস) রয়েছে সেসব দেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবশ্যই বাড়াতে হবে।

ব্রিটেনের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের বিমানপথ রয়েছে। এগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে উত্তর আফ্রিকার মরোক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়ায় কয়েকটি বিমানবন্দর রয়েছে। এই তিনটি দেশেই আইএসের উপস্থিতি রয়েছে। এ বছর তিউনিসিয়ায় দুটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্রিটেনের ৩১ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। পর্যটন এলাকায় আরো হামলার ব্যাপারে সন্ত্রাসীরা তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছে।

মরোক্কোর কর্তৃপক্ষ আইএসের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে লড়াই করছে। মাররাকেচ ও আগাদিরের সঙ্গে ইজিজেট ও রায়ানএয়ারের সরাসরি বিমান যোগাযোগ রয়েছে। প্রতি বছর পাঁচ লাখ ব্রিটেন দেশটি ভ্রমণে যান।

আলজেরিয়া আল-কায়েদা হামলার হুমকির মধ্যে আছে। হ্যামন্ডের মতো ইজিজেটের প্রধান নির্বাহী কারলিন ম্যাককলও যেসব দেশ সন্ত্রাসী হামলার হুমকিতে রয়েছে সেসব দেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবিসিকে তিনি বলেন, আমি মনে করি এ ব্যাপারে মিসর সরকার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবে এবং বলবে, শারম বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বের কয়েকটি নির্দিষ্ট বিমানবন্দরের জন্য এটি একটি সুনির্দিষ্ট বার্তা দেয়া হয়েছে। তুরস্কের ইস্তান্বুল, সৌদি আরবের রিয়াদ ও জেদ্দা, কেনিয়ার নাইরোবি বিমানবন্দরও নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে।

গত বছর ব্রিটেনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নাগরিকদের বিদেশে ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে। ইরাক ও সিরিয়ার জঙ্গি সংগঠনগুলো থেকে ব্রিটিশ নাগরিক ও এর স্বার্থের ওপর হামলার হুমকি বেড়ে যাওয়ায় দেশটি এমন পদক্ষেপ নেয়। সতর্কবাতায় নির্দিষ্ট কয়েকটি বিমান ও বিমানবন্দরের কথা উল্লেখ করে। সৌদি আরবে ভ্রমণের ব্যাপারে নাগরিকদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমান নিয়মিতভাবে জেদ্দা ও রিয়াদে যায়।

২০১৩ সালে ওয়েস্টগেট শপিংমলে হামলায় পর কেনিয়াকে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রাখা হয়েছে। এই হামলায় ছয় ব্রিটিশ নাগরিক নিহত হয়েছে। কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এখানে জঙ্গি সংগঠন আল শাবাব সক্রিয়।