জনসম্মুখে দুর্নীতি ফাস হওয়ার ভয়ে কাজিরবাজার ব্রীজে বাস-ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!

kajir_bazar_bridge 19.10.15সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ১৮৯ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রীজে চলবে না ট্রাক, বাস ও মিনিবাস। শুধু তাই নয় এসব যান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) কে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসক। এসব যান আটকানোর জন্য ব্রীজের দু’তীরে অবিলম্বে ‘বার’ বসানোর নির্দেশানাও রয়েছে। নবনির্মিত কাজিরবাজার সেতুতে যান চলাচলের ক্ষেত্রে এমন হাস্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। বিষয়টি অনেকের কাছেই রহস্যময় ঠেকছে।
অনেকেই মনে করছেন ব্রীজ নির্মাণকালে বিভিন্ন সময় এর নির্মাণ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এসব নিয়ে কয়েক দফায় বন্ধ থাকে এর নির্মাণ কাজ। তবে শেষ পর্যন্ত কাজ সমাপ্তির পর ব্রীজটি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধন হলেও এর ত্রুটি বিচ্যুতি যাতে জনসম্মুখে বেরিয়ে না আসে সে জন্যই এমন সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন অনেকেই। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে সওজ।
সওজয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মনির হোসেন বলেছেন, নবনির্মিত এ ব্রীজের দু’তীরে ‘বার’ (লোহার এঙ্গেল দিয়ে) বসানোর সিদ্ধান্ত তাদের নয়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর/২০১৫ইং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর/২০১৫ইং জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদিন স্বাক্ষরিত ওই সভার সিদ্ধান্তের অনুলিপি তাদের কাছে পৌছায় এবং সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নিদের্শনা দেয়া হয় ব্রীজের দু’তীরে ‘বার’ বসানোর।
এতে বলা ‘এ ব্রীজ দিয়ে বাস, ট্রাক ও মিনিবাস চলাচল করলে ব্রীজের যেকোন ধরণের ক্ষতি হতে পারে তাই অবিলম্বে ব্রীজের দু’তীরে ‘বার’ বসিয়ে এসব যান চলা চলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে’ সেই নির্দেশনা মোতাবেক সওজ ব্রীজের দু’তীরে ৮ ফুট ০ ইঞ্চি উচ্চতা নির্ধারণ করে দু’টি ‘বার’ বসায় বলে নির্বাহী প্রকৌশলী জানান।
এই ব্রীজ দিয়ে এসব যানবাহন চলাচল করলে কোন ধরনের ক্ষতি হতে পারে কি না জানতে চাইলে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মনির হোসেন বলেন, এত হাইটেকনোলজি ব্যবহার করে যে ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে ট্রাক বাস, মিনিবাস চলাচল করলে ব্রীজের ক্ষতি হবে এটা বলাওতো হাস্যকর! তিনি বলেন, আমরা শুধু নির্দেশনা পালন করেছি। আমাদেরকে যদি আবার নির্দেশনা দেয়া হয় এগুলো উঠিয়ে দিতে আমরা উঠিয়ে দেব। এগুলো বসানো ও লাগানের মধ্যে আমাদের কোন লাভ-ক্ষতি নেই।
তবে মনির হোসেন জানান, এ ব্রীজটি ৪ লেনের এবং দু’পাশের সড়ক ২ লেনের। যদি কখনো এই সংযোগ সড়ক ৪ লেনে উন্নীত তাহলে এসব প্রতিবন্ধকতার প্রয়োজন হবে না।
নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, সিলেট নগরীকে যানজট মুক্ত রাখার লক্ষ্যে দিনের বেলা যাতে এ ব্রীজ দিয়ে ট্রাক প্রবেশ করতে না পারে সেই জন্যই ‘বার’ বসানোর এ সিদ্ধান্ত। কারণ এটি হচ্ছে নগরীর ‘হাট’। এখান দিয়ে এসব যানবাহন চলাচল করলে গোটা নগরীতে যেমন ভয়াভহ যানজটের সৃষ্টি হবে অন্যাদিকে তেমনি দুর্ঘটনাও বেড়ে যাবে। তা
হলে শাহজালাল সেতুর ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো না কেন জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন সেটি শহরের অনেকটাই বাইরে এবং সেটির সংযোগ সড়কটিও বেশ বড়। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের মোবাইলফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।