জগন্নাথপুরে প্রতিবেশির দ্বারা নির্যাতিত হয়ে ঘরছাড়া এক পরিবার

12950সুরমা টাইমস ডেস্কঃ জগন্নাথপুরে প্রতিবেশীর দ্বারা নির্যাতিত হয়ে ঘর ছাড়া হয়েছেন এক পরিবার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হয়েও তারা কোন সহায়তা পাননি। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে নানা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আর এসবের পেছনে প্রভাবশালী একটি মহলের ইন্ধন রয়েছে। নিরুপায় হয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, ডিআইজি ও বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
শনিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতিত পরিবার এ সহায়তা চান।
সংবাদ সম্মেলনে রিনা বেগম জানান, একই বাড়ির বাসিন্দাদের কর্তৃক নির্যাতন আর অপবাদের বোঝা নিয়ে আজ তারা ঘরছাড়া। বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমরা দিশেহারা। প্রতিবেশী সাজাদ আলী, হুসন আলী, রওশন আলী, শামছুল ইসলাম, জাকারিয়া, সুজন মিয়া, আলাউর রহমান, সাদিক আলীসহ তাদের সহযোগীরা আমাদের বাড়ীঘর ভাঙচুর, মারধর ও বাসার জিনিসপত্র লুটপাট করে বসত ভিটা থেকে তাদের বিতাড়িত করে দিয়েছে। অথচ, এসব লোকদের ঘরে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হেরোইন, ইয়াবা, মদ, গাঁজার আসর বসানোসহ পতিতাবৃত্তির মত অপরাধমূলক কার্যকলাপ করে যাচ্ছে। পাশের ঘরের বাসিন্দা হিসেবে এসব নোংরা কাজের প্রতিবাদ করলে নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এসব অপরাধিদের নেপথ্যে রয়েছে একটি প্রভাবশালী মহলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতা। যে কারনে আমরা নির্যাতিত হয়েও জগন্নাথপুর থানায় মামলা প্রদান করলেও থানার ওসি ও এসআই অনির্বান আমাদের মামলাটি আমলে না নিয়ে উপরন্ত সন্ত্রাসীদের পক্ষাবলম্বন করে আসছেন।
এছাড়া সপ্তম শ্রেণীতে পডুয়া বোন রুবেনা ও ভাই নাঈমের বইপত্রসহ স্কুলড্রেস পর্যন্ত ছিনিয়ে নিয়ে যায় উক্ত সন্ত্রাসীরা। যার দরুণ তারা আজ পড়াশুনা করতে পারছে না এমনকি তাদের ফাইনাল পরীক্ষাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে আমরা নিজের বসত ভিটায় যেতে না পেরে যাযাবরের মত জীবনযাপন করছেন তারা।
কোন অপরাধে বিচার চাওয়ার অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হল, সংবাদ সম্মেলনে রিনা বেগম এমন প্রশ্ন রাখেন। মারধর করে জখম করার পরও বিচারের আশায় থানায় গেলে জগন্নাথপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করেন তিনি।
তাছাড়া প্রতিবেশি সাজাদ আলী বসত ভিটা ছেড়ে না গেলে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্ধী করে নদীতে ফেলে দিবে বলেও হুমকি দেয়। অপরাধীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত শামিমা আর রাশেদা আমাদের নিরীহ বোনদেরকে নানাভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন- তাদের উপর হামলার ঘটনায় ৮ জনকে আসামী করে ২৭ সেপ্টেম্বর জগন্নাথপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার মা সোনারা বেগম। এর প্রেক্ষিতে ২৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার তদন্তে আসেন এসআই অনির্বান। তিনি নির্যাতিতদের কোন কথা বিশ্বাস না করে অপরাধীদের পক্ষে কথা বলেন। এ অবস্থায় পুলিশ যাওয়ার পর পরই সন্ত্রাসীরা ২৯ সেপ্টেম্বর আবারও আমাদের উপর হামলা চালায় ও তাদের বাড়ি ছাড়া করে। এর পর মা সোনারা বেগম বাদী হয়ে ইসহাকপুর গ্রামের মৃত সিকন্দর আলীর ছেলে সাজ্জাদ আলী, হুছন আলী, হাছন আলীর স্ত্রী রাশেদা বেগম মৃত সিকন্দর আলীর ছেলে হাছন আলী, রৌশন আলী, ছাদিক আলীর স্ত্রী শামিমা বেগম, সাজাদ আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম, হুছন আলীর ছেলে জাকারিয়াসহ অজ্ঞাত আরো দু’তিন জনকে আসামী করে জগন্নাথপুর থানা একটি অভিযোগ দাখিল করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, ডিআইজি ও বিভাগীয় কমিশনার সহ সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের সাহায্য কামনা করেন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সোনারা বেগম, রুনা বেগম, রিনা বেগম, রুবেনা বেগম ও নাইম আলী।