চাদাবাজির অভিযোগে কোতোয়ালী থানার এসআই মাসুদ রানাসহ ৩ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

Policeসুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট নগরীর এক ডাক্তারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গুরুতর অপরাধে মহানগর পুলিশশের কোতোয়ালী থানার তিন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃতরা হলেন, সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা, কনস্টেবল আব্দুল কুদ্দুস ও মনোরঞ্জন। রোববার তাদের প্রত্যাহার করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. রহমত উল্লাহ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৯ আগস্ট রাতে কোতোয়ালী মডেল থানার সদ্য সাময়িক বরখাস্তকৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানাসহ এই বরখাস্তকৃতরা নগরীর খারপাড়ায় ডা. একেএম নুরুল আম্বিয়ার বাসায় তাকে সন্দেহভাজন আসামিকে ধরতে যান। ঘটনার সপ্তাহখানেক পর হয়রানি ও টাকা চাওয়ার অভিযোগ এনে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি-উত্তর) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ডা. আম্বিয়া। লিখিত অভিযোগে তিনি নগদ ১০ হাজার টাকা ও তাঁর স্বাক্ষরসহ একটি ব্ল্যাংক চেক নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
এডিসি রহমত উল্লাহ আরও জানান, ডা. আম্বিয়ার এ অভিযোগ তদন্তের জন্য এসএমপি’র সহকারী কমিশনার (এসি-কোতোয়ালী) সাজ্জাদুল আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পাওয়ায় সাময়িক ভাবে বরখাস্থ করা হয়।
এদিকে, তদন্তকারী সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কোতোয়ালী থানার সহকারী কমিশনার (এসি) সাজ্জাদুল আলমের বিরুদ্ধে মারধর ও বুকে অস্ত্র ধরে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন অভিযুক্তদের একজন কনস্টেবল আব্দুল কুদ্দুস।
গত শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এসএমপি কমিশনার কামরুল আহসানের কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের অনুলিপি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও দেওয়া হয়েছে।
তবে কুদ্দুসের অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. রহমত উল্লাহ বলেন, কুদ্দুস কই অভিযোগ দিছে তা জানি না।
চার পৃষ্ঠার অভিযোগে আব্দুল কুদ্দুস দাবি করেন, গত ২৯ আগস্ট রাতে কোতোয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানার সঙ্গে তিনি ও আরও কিছু পুলিশ সদস্য একটি বাসায় ডা. একেএম নুরুল আম্বিয়া নামে এক সন্দেহভাজন আসামিকে ধরতে যান। ওই বাসায় গেলে ডা. আম্বিয়া তার ১৮ মাসের বাচ্চা রয়েছে এবং এ নিয়ে পরে কথা বলবেন বললে অভিযানে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক না করেই চলে আসেন।
সে ঘটনার সপ্তাহখানেক পর হয়রানি ও টাকা চাওয়ার অভিযোগ এনে উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি-উত্তর) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ডা. আম্বিয়া। অভিযোগে তিনি নগদ ১০ হাজার টাকা ও একটি ব্যাংক চেক নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
ডা. আম্বিয়ার এ অভিযোগ তদন্তের জন্য এসএমপি’র সহকারী কমিশনার (এসি-কোতোয়ালী) সাজ্জাদুল আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তের জন্য সাজ্জাদুল কনস্টেবল আব্দুল কুদ্দুসকে তার কার্যালয়ে ডেকে এনে অভিযোগকারীদের সামনেই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
আব্দুল কুদ্দুস অভিযোগ অস্বীকার করলে এক পর্যায়ে ‘মিথ্যা বলিস কেনো?’ বলে আব্দুল কুদ্দুসকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এমনকি অভিযোগকারী চিকিৎসক দম্পতির সামনেই ইউনিফর্ম পরিহিত কুদ্দুসকে চড়-থাপ্পড় মারেন এবং গুলিভর্তি শর্টগান বুকে চেপে ধরে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।