সিলেট নগরীতে ছেড়ানোট ভাঙানোর নামে অবৈধ ব্যবসা : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা

noteসিলেট নগরীতে ছেড়ানোট বদলের নামে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছে একটি অসাধুচক্র। এ চক্রের সদস্যরা আসল টাকার ভিতর জাল টাকা ঢুকিয়ে প্রতিদিন প্রতারিত করছে সিলেটসহ সারাদেশের নাগরিকদের। এ ধরনের বে-আইনী ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে চলে আসলেও স্থানীয় প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এব্যাপারে কোনো উদ্যোগ এ যাবত গ্রহণ করেনি। এদিকে গ্রাম গ্রামান্তর থেকে শহরে আসা সাধারণ জনগোষ্ঠি টাকা ভাঙাতে গিয়ে এদের হাতে নাজেহাল এবং বার বার প্রতারনার শিকার হচ্ছে। সচেতন জনগোষ্ঠির পক্ষ থেকে প্রশ্ন এবং দাবী উঠেছে, ছেড়া নোট ভাঙানোর নামে নগরীতে প্রকাশ্যে কিভাবে এ অবৈধ ব্যবসা চলছে? তাদের অভিমত ওদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন সংলগ্ন ফুটপাত, সিলেট জেলা পরিষদের সামনা, বন্দরবাজার হর্কাস পয়েন্ট সংলগ্ন কয়েকটি হোটেলের সন্নিকটবর্তী স্থান ও সুরমা মার্কেটের সামনে ফুটপাত তাদের ব্যবসার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। ওইসব জায়গায় তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে টাকা ভাঙানোর নামে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন রয়েছে, কোনো বৈধ মুদ্রা ভাঙাতে ছেড়া নোট বদল করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক বা কোন সরকারী ব্যাংকের দারস্ত হওয়া যায়? এক্ষেত্রে রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে টাকা ভাঙানোর ব্যবসা সম্পূর্ণ বেআইনী। এব্যাপারে জানতে চাইলে জনৈক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, পথে ঘাটে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে টাকা ভাঙানো, ছেড়ানোট বদল করা সঠিক হবেনা। এক্ষেত্রে প্রতারনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। এভাবে ব্যবসা করার জন্য এদেরকে সরকারীভাবে কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পদক্ষেপ নেওয়া অতীব জরুরী। জনগণের প্রশ্ন কেন যে পুলিশ প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে একেবারে নিরব। রাস্তাঘাটে ব্যাংকের মতো টাকা পয়সা বদল করা কিংবা ছেড়ানোট ভাঙানোর নামে ব্যবসা; ব্যাংকিং সেক্টরের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এব্যাপারে এখনই তড়িৎ পদক্ষেপ নেওয়া সরকারের উচিত বলে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে জানান।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এবং খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছেড়ানোট ভাঙানোর নামে একশ্রেণীর কালোবাজারীচক্র টাকার বান্ডিলের ভিতরে জালনোট ঢুকিয়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত করছে দেশের সহজ সরল, নীরিহ জনগোষ্ঠিকে। এ চক্রের সাথে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এবং অসাধু কিছু সংবাদকর্মীর প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ যোগসাজস থাকার অভিযোগ ওঠেছে। তাই এই অবৈধ ব্যবসা আজো বন্ধ হচ্ছেনা। এদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা খুবই জরুরী। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে ঢাকায় এ জালিয়াতচক্রের রয়েছে হেডকোয়ার্টার। তারা বিভিন্ন জেলাসহ সারাদেশে নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের যোগসাজশ থাকার কারনে পুলিশ এসব অপরাধ কর্মকান্ড দেখেও না দেখার অভিনয় করে চলছে। এসব কর্মকান্ডের ব্যাপারে জাতীয় ও স্থানীয়পত্র পত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরেও ‘সিলেট নগরীর ফুটপাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে টাকা ভাঙানোর নামে অবৈধ এবং জালিয়াতি ব্যবসা আজো বন্ধ হয়নি।’
জালিয়াত চক্র জাল টাকা চালিয়ে প্রতি ১শ টাকার বদলে ৬০ টাকা হারে লাভ পেয়ে থাকে। এ চক্রের নিয়োগকৃত প্রতিনিধিরা প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার জাল টাকা সাধারণ মানুষকে গছিয়ে দেয়। এ জন্য সিন্ডিকেট সহযোগিরা সপ্তাহ, পনেরদিন বড় রকমের সেলামী পেয়ে থাকে। টাকার ভেতরে নকল টাকার ছড়াছড়ি সাধারন মানুষ তা মোটেই টের পাচ্ছেনা। তাই দেশের সাধারন জনগোষ্ঠি এদের হাতে বার বার প্রতারিত হচ্ছে। টাকার মান সঠিক রাখতে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছেড়ানোট ফাড়ানোটের নামে টাকা বদল করা কিংবা ভাঙানো ব্যবসা বন্ধ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছেন সিলেটের সচেতন নাগরিকরা।

বার্তা প্রেরক
সুর্নিমল সেন (সংবাদ কর্মী)
মোবা: ০১৭১৯-৩৫০৬৪১