সিলেটে সিরিজ বোমা হামলার ২৮টি মামলার বিচার শেষ হয়নি

sreies_bomb18-08-2018সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ১৭ আগষ্ট দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনায় সিলেট বিভাগের চার জেলায় দায়েরকৃত ২৯ টি মামলার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় দায়েরকৃত একটি মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ২৮টি মামলারই বিচার কাজ শেষ হয়নি দীর্ঘ ১০ বছরে। অধিকাংশ মামলাই বর্তমানে স্বাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
আদালত ও সংশ্লিষ্ট থানা সুত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জেএমরি জঙ্গীরা সারাদেশের মতো সিলেট ১৩টি, সুনামগঞ্জ ৬টি, হবিগঞ্জে ৫টি ও মৌলভীবাজারে ৫টিসহ মোট ২৯টি এলাকায় বোমা ফাঁটায়। বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে সিলেটের আদালতপাড়া, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা । প্রতিটি বোমা হামলার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতায় বিস্ফোরক আইনে পৃথক মামলা করে পুলিশ। সুনামগঞ্জে দায়ের করা ৬ মামলার মধ্যে এটি মামলার রায়ে আদালত দুজন জেএমবির জঙ্গীকে ১০বছর করে কারা দন্ড দেন। অন্য মামলা এখনো বিচারাধীন বলে জানা গেছে।
এ সকল স্থানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ওইদিনের বোমা হামলায় সিলেটে কেউ মারা যাননি। তবে ১৫ জন পথচারি নার্সারি মালিক ও বিচারপ্রার্থী লোকজন ও হকার আহত হয়েছিলেন।
সেদিন ১৭ আগস্ট সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে সিলেট নগরের কোর্ট এলাকা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিঁড়ির নিচ, শাহী ঈদগাহ, নয়াসড়ক, কদমতলী বাস টার্মিনাল, লামাবাজারের একটি নার্সারিসহ ১৩টি এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায় জঙ্গিরা।
এ সকল ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। সবগুলো মামলার চার্জশিট পুলিশ আদালতে দাখিল করলেও বেশ কয়েকটি মামলার এখনও অভিযোগ গঠন হয়নি। আবার বেশিরভাগ মামলার স্বাক্ষগ্রহন ও যুক্তিতর্ক শুনানি পর্যায়ে রয়েছে। তবে বিচার শেষ হয়েছে একটি মামলার। ওই মামলার রায়ে দুজন জঙ্গীকে ১০ বছর করে কারাদন্ড দেন আদালত।
সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার চার্জগঠন হয় ২০১৪ সালের ২৭ মে। পরবর্তীতে এ মামলার ১৩ টি নির্ধারিত তারিখের পর গত ১২ আগস্ট সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে ২ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। একই অবস্থা বাকী ১২টি বোমা হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার।
১০ বছরেও বিচার শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেট টাইমস্ বিডি’কে বলেন, মুলত মামলা তদন্তে বিলম্ব ও মামলাগুলোর সাক্ষীরা ধার্য তারিখে অনুপস্থিতির কারণে বিচার শেষ করতে সময় লাগছে। তবে এখন প্রায় সবগুলো মামলারই স্বাক্ষ্যগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই রায় ঘোষণা করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন সরকারের এই আইন কর্মকর্তা।
এদিকে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় হবিগঞ্জের ৫টি স্থানে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাগুলো হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারাধীন আছে।
২০১৪ সালের ৩ জুন থেকে মামলাগুলোর বিচারকাজ শুরু হয়। ওই ৫টি মামলায় ইতোমধ্যে স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত মামলার নির্ধারিত ৭টি তারিখ অতিবাহিত হয়েছে।
১৭ আগস্ট একইভাবে মৌলভীবাজার জেলার ৫টি স্থানে বোমা হামলার ঘটনায় পৃথকভাবে দায়েরকৃত মামলাগুলো এখন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। ২০১৪ সালের ৩ জুলাই থেকে বিচার কাজ শুরু হয়।
আতঙ্ক জাগানিয়া এই সিরিজ বোমা হামলা মামলায় সিলেটে জেএমবির সূরা সদস্য আবদুল আজিজ ওরফে হানিফ ও সায়েদুল ইসলাম ওরফে হৃদয়, হবিগঞ্জের ৫ মামলায় আসামী জেএমবির শীর্ষ জঙ্গী সাইদুর রহমান, সূরা সদস্য আবদুল আজিজ হানিফ ওরফে আজিজুল ইসলাম, সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন, এএইচএম শামীম, বেলাল হোসেন তানিম, ওবায়দুল্লাহ ওরফে সুমন ওরফে হাফেজ হুজাইফা।
মৌলভীবাজারে ৫ মামলায় আসামী জেএমবি সদস্য আবদুল্লাহ আল মুরাদ ও কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে স্বাক্ষ্যগ্রহণ চলছে বলে সংশ্লিস্ট আদালত সুত্র জানায়।