আল জাজিরায় বাংলাদেশ ৫ ‘বন্দুকযুদ্ধ’র গোমর ফাঁস

Al jajeeraসুরমা টাইমস ডেস্কঃ কাতার ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক ৫টি ‘বন্দুকযুদ্ধে’র অনুসন্ধান তুলে ধরে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশে তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বেশ বিতর্কিত এবং হরহামেশাই এমন হত্যাকাণ্ড ঘটছে। আল জাজিরা আমেরিকার জন্য প্রতিবেদনটি তৈরী করেছেন তাদের প্রতিবেদক ডেভিড বার্গম্যান। প্রতিবেদনে ৮ই মে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৩ মানব পাচারকারী নিহত হওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধান করা হয়েছে। বিতর্কিত সেই বন্দুকযদ্ধের ব্যাপারে পুলিশ জানায়, কক্সবাজারে মানবপাচারকারী একটি চক্রকে আটক করতে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়েই গুলি ছুড়তে শুরু করে পাচারকারীরা। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। আর এই গুলিতে নিহত হয় ৩ জন। জাফর আলম (২৫), জাহাঙ্গীর আলম (৩০) এবং ঢালু হোসেইন (৫৪) শুধুমাত্র বন্দুযুদ্ধের শিকার হননি। চারদিনের মধ্যে আরো দুজন অভিযুক্ত অনেকটা প্রায় একইরকম পরিস্থিতিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। তবে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকার কর্মীদের বরাতে আল জাজিরা জানায়, একইসময়ে একইরকমভাবে নিহত হওয়ার ঘটনাটি বেশ সন্দেহজনক। থাইল্যান্ডে গণকবর খুঁজে পাওয়ার কিছুদিনের মাঝেই তাদেরকে মেরে ফেলা হওয়ায়। আর এই গণকবরের অস্তিত্বই বাংলাদেশ সরকারকে পুলিশ দিয়ে এমন পদেক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে বলে প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধি সাব্বির আহমেদের বরাতে আল জাজিরা জানায়, সরকার যে মানব পাচারকারীদের ধরতে সক্রিয় রয়েছে কক্সবাজারে তিন পাচারকারীকে দমন করা তারই প্রমাণ। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সবসময়ই বলে যে, তারা শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিলো। কিন্তু আলজাজিরার অনুসন্ধানের দাবি কথিত ওই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ কিছুদিন আগেই ঘটনা শুরু হয়। নিহতদের পরিবার ও প্রতিবেশীদের বরাতে আল জাজিরার দাবি, নিহতদের প্রত্যেককেই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। আর এর তিনদিন পরেই তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। extra judicial killing তবে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নতুন কিছু নয় বলে উল্লেখ করে আল জাজিরা জানায়, গত পাঁচ মাসে এরকম বন্দুকযুদ্ধে প্রায় ৬৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এদের বেশিরভাগই বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক দলের সদস্য। এসকল হত্যাকাণ্ডের দায়ভার বরাবরই এড়িয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার। মানবাধিকার সংস্থার ‘অধিকার’ এর সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খানের উদ্ধৃতিতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এগুলো আসলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা যদি সত্যিই মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে আসামীদের পুলিশের মাধ্যমে আদালতে হাজির করা উচিত।’ আদিলুর রহমান আরও বলেন, অভিযুক্ত অনেক ব্যক্তিকেই দেখা গেছে তাদের আসলে মানবপাচারের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই ছিলো না। মানবপাচারে অভিযুক্ত পুলিশের গ্রেফতারকৃত ১৫ জন ব্যক্তির ১১ জনই নির্দোষ থাকে বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে মানবপাচারকারী এসকল চক্রের প্রধানদের আটকের কোনো উদ্যোগ পুলিশের নেই বলেও অভিয়োগ করেন তিনি। কক্সবাজার জেলার হরিয়াখালি স্থানটি অবৈধভাবে থাইল্যান্ড যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। পুলিশের দাবি, এখান থেকেই জেলেরা অভিবাসীদেরকে বড় কোনো জাহাহে পৌঁছে দিয়ে আসে। স্থানীয়দের বরাতে আল জাজিরা দাবি করে, ৭ই মে সকাল ৮ টার দিকে এই হরিয়াখালির একটি চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো জাফর আলম। দোকানের মালিক রফিকের বরাতে তারা জানায়, আরও কয়েকজন যুবকের সঙ্গে জাফর দোকানটির সামনে দাঁড়িয়ে দোকান খোলার অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু তখনই দুটি গাড়ি নিয়ে পোশাকধারী কিছু পুলিশ এসে জাফরকে তুলে নিয়ে যায়। কয়েকবছর আগে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হয় জাফর। পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি। তবে কয়েকবার হাজিরা দিতে যাননি জাফর। আল জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, এজন্যই পুলিশ দেখেই দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। এলাকাবাসীর বরাতে তারা জানায়, পরে এলাকার বাসিন্দা নাজির আহমেদের উঠানে গিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে হাতকড়া পড়িয়ে ও চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। সেদিন সকালেই কিছুক্ষণ পর জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে দুটি পুলিশের গাড়ি এসে দাঁড়ায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে আল জাজিরার দাবি, জাফর আলম ঐ গাড়িতেই বসা ছিলেন। গাড়ি থেকে প্রায় ১২ জন পুলিশসদস্য নেমে আসেন এবং বাড়িটিকে ঘিরে ফেলেন। জাহাঙ্গীর আলম মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য হিসেবে পুলিশের ওয়ান্টেড লিস্টে ছিলো। তার স্ত্রী রেহানা আক্তার জানায় জাহাঙ্গীর সারারাত বাড়িতে থাকতেন না। ভোরবেলা আসতো। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার দিনও সে সারারাত ঘরের বাইরে কাটিয়ে সকালে এসে ঘুমুচ্ছিলো। রেহানা আক্তার আল জাজিরাকে বলেন, ‘তখন বোধহয় সকাল ৯টা বাজবে। আমি আমার স্বামীর পাশে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে পুলিশ আামদের মোবার ঘরে প্রবেশ করে এবং লুঙ্গি-গেঞ্জি পড়া অবস্থায়িই তাকে হাতকড়া পড়িয়ে নিয়ে যায় পুলিশ।’ জাহাঙ্গীরের প্রতিবেশী সখিনা খাতুন আল জাজিরাকে জানান যে তাকে দেখে খুবই হতবুদ্ধি মনে হচ্ছিলো। তিনি দৌঁড়ে গিয়ে তাকে একটি শার্ট পড়ানোর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু পুলিশ সেটাও করতে। আরেকজন প্রতিবেশীও তাকে গাড়িতে হাতকড়া পড়া অবস্থায় দেখে এবং আরেকটি গাড়িতে জাফর আলমকেও একই অবস্থায় দেখতে পায়। অন্যদিকে কয়েকদিন আগেই মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ঢালু হোসেন জামিনে মুক্তি পান। সেই সকালেই নওয়াব বাজারের শাহ পরীর দ্বীপে ঢালু হোসেনের বাড়িতে নুরুল ইসলাম নামে এক জেলে তার জাল ঠিক করছিলেন। তিনি আল জাজিরাকে জানান, হঠাৎ বেসামরিক পোশাক পড়া কিছু ব্যক্তি অস্ত্র হাতে সেই বাড়িতে প্রবেশ করে। অস্ত্রের মুখেই তারা নুর হোসেনকে জিজ্ঞাসা করে যে তারা কারা। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এমনসময় দু’জন ব্যক্তি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে এবং চিৎকার করে বলে যে আমার তাকে পেয়ে গেছি। আমরা তখন দৌঁড়ে পালিয়ে আসি।’ killing 2345 ঢালু হোসেনের ছেলে হেলাল উদ্দিন আল জাজিরাকে জানান, ‘মানুষগুলো বলে যে তারা পুলিশের লোক এবং তদন্তের খাতিরে তারা আমার বাবাকে টেকনরাফ পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাবেন। আমাদের পরিবারের সবাই তখন কাঁদতে শুরু করে এবং তাকে না নেয়ার অনুরোধ করতে থাকে।’আল জাজিরার অনুসন্ধানে এভাবেই তিন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, হরিয়াখালিতে জাফর আলমের চাচা হাসান আহমেদ জাফরের খোঁজে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকে। আটকের সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে শনাক্ত করতে পারবেন। হাসান আহমেদ আল জাজিরাকে জানান, তিনি স্থানীয় প্রতিনিধি সাব্বির আহমেদের কাছে সাহায্য চান। হাসান জানতেন সানাউল নামের এক সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বেই একটি দল তার ভাতিজাকে ধরে নিয়ে যায়। তাই সানাউলের সঙ্গে যোগাযোগ করারা চেষ্টা করেন সাব্বির। তার সঙ্গে কথার পর সাব্বির আহমেদ জানান, তাদের কাছে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিলো বলেই তারা জাফরকে গ্রেফতার করেছে এবং পরবর্তী দিন তাদেরকে আদালতে হাজির করা হবে। কিন্তু পরবর্তী দিন জাফর, জাহাঙ্গীর ও ঢালু হোসেনের লাশ পাওয়া যায়। তাদের পরিবারকে পুলিশ স্টেশন খেকে লাশ সংগ্রহের কথা বলা হয়। কিন্তু তাদেরকে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করে পুলিশ। টেকনাফ পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান আল জাজিরার কাছে দাবি করেন, ‘এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অভিযুক্তরা আসলে ষড়যন্ত্রের শিকার।’ নিহতদেরকে আগে থেকে গ্রেফতারের কথাও অস্বীকার করেন আতাউর। পুলিশের দাবি, নিহতদের সকলেই মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ছিলো। যদিও পরিবারগুলো তা অস্বীকারের চেষ্টা করেছে আল জাজিরার কাছে। তবে স্থানীয়দের বরাতে তাদের পাচার সংশ্লিষ্টতার সত্যতা উঠে এসেছে আলজাজিরার প্রতিবেদনে। ওই তিন কথিত বন্দুকযুদ্ধের পরবর্তী দুইদিনের মাঝে কক্সবাজার শহরের নিকটবর্তী আরো দুটি গ্রামের মানুষকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রায় ডজনখানেক স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে বলে দাবি আল জাজিরার। এদের একজন ৪০ বছর বয়সী জাফর মাঝি, আরেকজন বেলাল হোসেন। নিজস্ব অনুসন্ধানের বরাতে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ৪০ বছর বয়সী মোহাম্মদ জাফর আলম মাঝি স্থানীয় একটি হ্যাচারিতে কাজ করতেন। তিনি বাবুল শর্মা নামের এক নাপিতের কাছে শেভ করাচ্ছিলেন। এমন সময় দুইটি মোটরবাইকে করে পুলিশ বাজারে আসে। বাজাভর্তি মানুষের সামনে তাকে হাতকড়া পড়িয়ে মোটরবাইকে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি যেখানে শেভ করছিলেন তার পাশের দোকানের মালিক শর্মা আল জাজিরাকে জানান, মাঝিকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরদিনেই তিনি টেলিভিশন নিউজে তার মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। তবে স্থানীয় পুলিশের দাবি, মাঝিকে কখনোই আটক করা হয়নি। কক্সবাজারের ডিবি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান আবুল হোসাইন জানান, মাঝি মূলত মানবপাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলো। তার মৃত্যুর সময়ও চারটি মামলায় তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে অনুসন্ধান চলছিলো। তবে মানবপাচারের সঙ্গে মাঝির কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা নেই বলে আল জাজিরার কাছে দাবি করেন তার ভাই নুরুল কাদের। তিনি দাবি করেন, মাঝি স্থানীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক কারণেই তার ভাইকে জীবন দিতে হয়েছে। জাফর মাঝির বাবা দু:খ-ভারাক্রান্ত ও হতাশ। ছেলের জন্য মামলা লড়ার মতো পর্যাপ্ত টাকাও তার কাছে নাই। বন্দুকযুদ্ধে নিহত আরেক ব্যক্তি হচ্ছেন বেলাল হোসেন। বন্দুকযুদ্ধে নিহত আরেক ব্যক্তি হচ্ছেন বেলাল হোসেন। ৩০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি গত বছর তার মাছ ধরা নৌকা বিক্রি করে দেয়ার পর থেকে বেকার জীবন কাটাচ্ছিলো। তার গ্রাম কাওয়াপাড়ার কাছেই একটি পাবলিক বাগানে বসেছিলেন তিনি। এমন সময় ৯ জন পোশাকধারী তার কাছে এসে তাকে ধরে নিয়ে যায় বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। বেলাল হোসেনের সঙ্গে থাকা আব্দুর শুকুর রানা আলজাজিরাকে জানান, পুলিশ তার চোথ বেধে ও হাতকড়া পড়িয়ে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তক্ষণাৎ কক্সবাজারর ডিবি অফিসে ছুটে যায় বেলালের ছোটো ভাই আব্দুর রশিদ। তিনি আল জাজিরাকে জানান, ‘আমরা বেলালকে একটি ঘরে হাতকড়া পড়া অবস্থায় দেখতে পাই কিন্তু আমরা ভয়ে কারো সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। আ্মার চলে আসি।’ তার দুদিন পরে বেলাল পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে টেলিভিশন নিউজে প্রচার করা হয়। কিন্তু বেলালকে গ্রেফতারের ব্যাপারে অস্বীকার করে পুলিশ। কক্সবাজারের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরি জানান, বেলালকে কখনোই পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা খবর পাই যে মানবপাচারকারীরা কক্সবাজারে আসবে। কিন্তু আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আমাদের দিকে গুলি ছুড়তে শুরু করে পাচারকারীরা। ফলে আমাদেরও পাল্টা গুলি চালাতে হয়। গুলিতে আহত বেলালকে হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যায়।’ বেলালের বিরুদ্ধে মানব পাচারের ছয়টি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি। কিন্তু বেলালের পরিবারও অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে এবং দাবি করেছে, অভিযোগের মূল কারণই হচ্ছে সে বিএনপির একজন সক্রিয় সদস্য। মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান আল জাজিরাকে বলেন, বিচারবহির্ভূত এই পাঁচটি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্তের সম্ভাবনা খুবই কম। বাংলাদেশে এমন হাজারো ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটলেও কোনো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে শাস্তি দেয়া হয়নি।’ প্রসঙ্গত দুই বছর আগে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে অধিকারের করা রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে রহমানকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। অধিকারের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রিপোর্টের কারণে সরকারের রোষানলে পড়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি। আদিলুর রহমান আল জাজিরাকে জানান, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন আচরণ অব্যাহত থাকলে কোনোরকম নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব নয়। বিচারবহির্ভূত এসব হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক ও সরকারি নেতাদের সম্মতি থাকতে পারে বলেও আল জাজিরার কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।