দুই বোনের জন্য ব্রিটিশ সিলেটী পরিবারের আইএসে যোগদান!: ফেঞ্চুগঞ্জের বাড়িতে পুলিশী নজরদারি

সেই পরিবারের সদস্যরা : (বাদিক থেকে দাঁড়ানো) রাজিয়া খানম, মো: তৌফিক হুসেন, মো: সালেহ হুসেন, রুশনারা বেগম, শেইদা খানম। (বাদিক থেকে বসা)
সেই পরিবারের সদস্যরা : (বাদিক থেকে দাঁড়ানো) রাজিয়া খানম, মো: তৌফিক হুসেন, মো: সালেহ হুসেন, রুশনারা বেগম, শেইদা খানম। (বাদিক থেকে বসা)

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ‘ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেয়া’ যুক্তরাজ্যের লুটন শহরের ১২ সদস্যের সিলেটী পরিবারের গ্রামের বাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক। আইএস শিবির থেকে ফিরে আসার জন্য সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও গ্রামের বাড়িতে অবস্থানরত পরিবারের সদস্যরা আকুতি জানিয়েছেন। তাদের ধারণা আইএসে যোগ দেয়ার পেছনে পরিবারের দুই মেয়ে রাজিয়া খানম ও মারিয়া খানমের কট্টর ধর্মান্ধতাই কাজ করেছে। এই দুই মেয়ের প্ররোচনায় অথবা যুক্তরাজ্য ফেরার পর পুলিশী হয়রানির ভয়ে তারা এ পথে পা বাড়িয়েছেন বলে তাদের ধারণা। রাজিয়া খানম নিষিদ্ধ ইসলামী গোষ্ঠী ‘আল-মোহাজিরুন’র সদস্য বলে মনে করা হয়। বছর খানেক আগে রাজিয়াকে নিয়ে ৫ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল বৃটিশ পুলিশ।
লুটন শহরের ১২ সদস্যের যে পরিবারটি গত দেড়মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে তারা হলেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁওয়ের আব্দুল মান্নান (৮২), তার স্ত্রী মিনারা খাতুন abdul latif(৫৩), তাদের মেয়ে রাজিয়া খানম (২১), সেইদা খানম (২৭) ও তার স্বামী আবুল কাশেম সাকের (৩১), আবদুল মান্নানের ছেলে মোহাম্মদ জাঈদ হোসেন (২৫), মোহাম্মদ তৌফিক হোসেন (১৯), মোহাম্মদ সালেহ হোসেন (২৬), তার স্ত্রী রোশনারা বেগম (২৪) এবং ওই পরিবারের তিন শিশু সন্তান। গত ১১ মে তারা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে ফেরার পথে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুইদিন যাত্রা বিরতির পর সেখান থেকে তারা উধাও হয়ে যান। এরপর আইএস জানায় পরিবারটি তাদের সাথে যোগ দিয়েছে।
‘আইএসে যোগ দেয়া’ আবদুল মান্নানের ভাই আবদুল লতিফ জানান, ‘নিখোঁজ’ পরিবারের সাথে তার ছেলেও রয়েছেন। আবদুল মান্নানের মেয়ে সেইদা খানমকে বিয়ে করে তার ছেলে আবুল কাশেম সাকের। আবদুল লতিফ আরও জানান, তার ভাইয়ের পরিবারের নারী সদস্যরা কট্টর ধার্মিক। তার ভাতিজি রাজিয়া ও মারিয়া ঘরের ভেতরও নেকাব ও দস্তানা পরা থাকত। তারা সবসময় ধর্মীয় উপদেশ দিত।
আবদুল লতিফ মনে করেন তার ভাইয়ের পরিবার আইএসে যোগ দিয়ে থাকলে এর পেছনে দুইটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, যুক্তরাজ্যে ফেরার পর পুলিশ হেফাজতে নিয়ে রাজিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ, হিথ্রো বিমানবন্দরে কড়া তল্লাশি ও পরিবারের সদস্যদের হয়রানির ভয়। দ্বিতীয়ত, রাজিয়া ও মারিয়ার প্ররোচনা। লতিফ আরও জানান, গত ২৭ মে তার ভাবী মিনারা খাতুন ফোন করে তারা ভাল আছেন বলে জানান। তবে তাদের অবস্থান জানা যায়নি, এর আগেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার কথার সুরে মনে হয়েছে তারা বিপদের মধ্যেই আছেন। এক সাথে পরিবারের ১২ সদস্য ‘নিখোঁজ’র ঘটনায় তিনি ও পরিবারের সদস্যরা অজানা আতংকে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান আবদুল লতিফ।
এ ঘটনা বাংলাদেশে ও বিদেশের সংবাদ মাধ্যমে খবর হবার পর এখন পরিবারের ওপর পুলিশের নিয়মিত নজরদারি হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ওই পরিবারের লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। নিয়ে আবদুল লতিফের পরিবার উদ্বিগ্ন।
তারা বলছেন, আবদুল মান্নানের পরিবার সিরিয়ায় চলে যাবার সাথে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই, কিন্তু তাদেরকেই সব প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে।