ছুটি না পেয়ে অ্যাপেক্স’র কারখানার টয়লেটে সন্তান প্রসব : তিন কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব

Pregnant-Women-at-Apexসুরমা টাইমস ডেস্কঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হরিণহাটি এলাকায় অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার কারখানার এক নারী শ্রমিক ছুটি না পেয়ে কারখানার টয়লেটের ভেতরে সন্তান প্রসবের ঘটনায় কারখানাটির তিন কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। কারখানার তিন কর্মকর্তা হলেন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মনজুর, পরিদর্শক আজিজুর রহমান এবং সুপারভাইজার রতন মিয়া।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, পত্রিকার সংবাদ গ্রহণ করে আদালত স্ব-প্রণোদিত হয়ে আদেশ দিয়েছেন। আদেশে কারখানার তিন কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। একই দিনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ ঘটনা তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কালিয়াকৈর উপজেলার ওই কারখানার লাস্টিং সেকশনে কাজ করেন নারী শ্রমিক হামিদা আক্তার। তিনি অন্তঃসত্ত্বা থাকায় গতকাল দুপুরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তিনি কারখানার লাস্টিং সেকশনের সুপারভাইজার মো. রতন মিয়ার কাছে ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু তাকে ছুটি না দিয়ে কাজে মনোযোগ দিতে বলেন ওই কর্মকর্তা। এতে তার অবস্থার অবনতি হলে তিনি কারখানার ভেতরের একটি টয়লেটে যান। সেখানে যাওয়ার পর তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন ও বাচ্চা প্রসব করেন। পরে তাকেসহ নবজাতককে উপজেলার সফিপুর মর্ডান হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, কারখানার নারীশ্রমিক অন্তঃসত্ত্বা পারভীন আক্তার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ পারভীন আক্তারকে ছুটি না দিয়ে কাজ করার জন্য ধমক দেয়। পারভীন আক্তার ৩ তলায় লাস্টিং সেকশনের ১নং লাইনে কাজ করতেন। পারভীন আক্তার ছুটি না পেয়ে খুব অসুস্থ্য বোধ করলে টয়লেটে যান। সেখানে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে বাচ্চা প্রসব করেন।
এদিকে খবর পেয়ে কারখানার সহকর্মী ও কর্তৃপক্ষরা তাকে উদ্ধার করে সফিপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
কারখানার সুপার ভাইজার রতন বলেন, পারভীন আক্তার সুস্থ্য থাকলেও বাচ্চাটি মারা গেছে। এ ব্যাপারে ওই কারখানার পরিচালক প্রশাসন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, ওই শ্রমিককের কারখানার অর্থায়নে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাকে ছুটি না দেয়ার অভিযোগের তদন্ত করে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।