হাতের মেহেদীর রং মুছার আগেই স্বামীকে হারিয়ে পাগল নববধু রোমেনা !

নবীগঞ্জে সিএনজি চালক বেলাল হত্যাকান্ড
চোখ হারিয়েছে সমকালের এজেন্ট ম্যানাজার,থানায় মামলা

bilal-miahউত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ থেকেঃ নবীগঞ্জ উপজেলা সদরের আইনগাঁও-নবীগঞ্জ সিএনজি ষ্ট্যান্ডের দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে গত রবিবার রাতে সংঘটিত ঘটনায় নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং সিএনজি ষ্ট্যান্টের ম্যানাজার ফারুক মিয়ার পুত্র বেলাল মিয়া(২৩) হত্যাকান্ডের ৩ দিন অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ বলছে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে আসামীরা গা-ডাকা দিয়েছে। এব্যাপারে নিহতের পিতা ফারুক মিয়া বাদী হয়ে শামসু মিয়া, আফছর মিয়া, রায়েছ চৌধুরীসহ ২৯ জনকে আসামী ও ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অপর দিকে নিহত বেলালের বিয়ের ১৮ দিনের মাথায় হাতের মেহেদীর রং মুছার আগেই স্বামীকে হারিয়ে পাগল হয়ে পড়েছে নববধু রোমেনা ! আর সংঘর্ষের ঘটনায় বেলালের বড় ভাই সমকালের এজেন্ট ম্যানাজার বিলাল হারিয়েছে তার চোখঁ। নিহতের পিতা হকার ফারুক দুই পুত্রের শোকে এখন নির্বাক হয়ে পড়েছে। নিহত বেলালের বড় ভাই কলেজ ছাত্র হেলাল মিয়া প্রতিপক্ষের আঘাতে ডান চোঁখ নষ্ট হয়ে গেছে। সে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকে নিহত বিলালের জানাযা শরিক হবার জন্য নবীগঞ্জে আসেন । এসময় মাইকে ভাইয়ের শোক প্রকাশ করতে গিয়ে তার চোখের আলো হারিয়েছে বলে জানায়।
রবিবার বিকালে সন্ত্রাসীদের হাতে ছোট ভাই বেলাল মিয়া খুন হওয়ার খবরে হাসপাতাল থেকে ১ দিনের ছুটি নিয়ে গত সোমবার লাশের সাথে সিলেট থেকে বাড়ি আসে। ওই দিন বিকালে জেকে হাইস্কুল মাঠে অনুষ্টিত জানাযার নামাজে পিতার কাঁেধ ভর করে উপস্থিত হলে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এক ছেলের লাশ, আরেক ছেলে চোঁখ হারানোর যন্ত্রনায় নির্বাক হয়ে পড়েন পিতা ফারুক মিয়া। অশ্রুসিক্ত হয়ে জনতার কাছে এই নির্মম ঘটনার বিচার দাবী করেন তিনি।
অপর দিকে বিয়ের ১৮ দিনের মাথায় হাতের মেহেদীর রং মুছার আগেই সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হওয়া স্বামী বেলাল মিয়াকে হারিয়ে স্বামীর জন্য পাগল প্রায় রোমেনা বেগম (১৮)। ভালবেসে প্রায় দেড়মাস আগে বেলাল মিয়ার সাথে বিয়ে হয় নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের বৈঠাখাল গ্রামের রোমানা বেগমের। কে জানতো বিয়ের সাজ মুছে যাওয়ার আগেই ঘাতক সন্ত্রাসীদের নির্মম আঘাতে তার স্বামী না ফেরার চলে যাবে। ঘটনার পর থেকেই শোর্কাত স্ত্রী রোমানা বেগম এর আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠে। বার বার মুর্ছা যাচ্ছে স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে। গত সোমবার লাল বেনারশি শাড়ীর বদলে স্ত্রী রোমানার পড়নে শোভা পাচ্ছে বিধবার সাদা শাড়ী। অশ্রুসিক্ত রোমানা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার আধা ঘন্টা আগে তার স্বামী বেলাল মিয়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাশুর হেলালকে দেখে সিলেট থেকে বাড়ি ফিরে। বিকালে গাড়ী ভাড়া এবং শশুর ফারুক মিয়াকে বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য শহরে যায় আর সে ফিরে আসেনি । রোমানা বেগম তার স্বামীর খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ফাসিঁর দাবী জানিয়েছেন। নিহতের পিতা ফারুক মিয়া বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আমার অপর পুত্র বেলালের বড় ভাই সমকালের এজেন্ট ম্যানাজার বিলাল হারিয়েছে চোখ। পুত্রের সাথে বড় ছেলের চোখ নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা এখন কি নিয়ে বাঁচবেন তিনি।