কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর : দাফন সম্পন্ন

Kamaruzzama Graveসুরমা টাইমস ডেস্কঃ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। গতকাল রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেয়া দ্বিতীয় মৃত্যুদ- হিসেবে কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হলো। এর আগে ২০১৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে গত দুই দিনে চলা নাটকীয়তার পর শুক্রবার রাতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন শনিবারই কার্যকর হচ্ছে ফাঁসি। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তির মধ্যেই সরকার জামায়াতের এ নেতার ফাঁসি কার্যকর করলো। কামারুজ্জামানের ফাঁসির প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। আইজি প্রিজন্স সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, রাত সাড়ে ১০টায় কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
এদিকে কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের আগে বিকালে তার পরিবারের ২১ সদস্য তার সঙ্গে দেখা করেন। রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ফাঁসি কার্যকরের পর ঢাকার সিভিল সার্জন আব্দুল মালেক মৃধা তার মৃত্যু নিশ্চিত করলে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ কারাগার থেকে বের করা হয়। এর আগে বিকাল থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরকে সামনে রেখে গতকাল বিকাল থেকেই সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয় বিজিবি।
যেভাবে ফাঁসি কার্যকর: রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। এই ফাঁসি কার্যকর করতে ৪ জন জল্লাদ অংশ নেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ফরমান আলী ফাঁসি কার্যকর করতে লাল রুমালটি ব্যবহার করেন। তার হাত থেকে রুমালটি মাটিতে পড়তেই জল্লাদ ফাঁসির মঞ্চের হুইলটি টেনে দেন। এতে কামারুজ্জামানের পায়ের নিচ থেকে কাঠের পাটাতন সরে গেলে তিনি ফাঁসির দড়িতে ঝুলে পড়েন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাকে ২০ মিনিট ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয়। পরে মাটিতে নামানোর পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা মৃতদেহ পরীক্ষা করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ সময় তার হাত-পায়ের রগ কেটে শতভাগ মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন চিকিৎসকরা। এরপর মুসলিম রীতি অনুযায়ী কামারুজ্জামানের মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়। এসবে নেতৃত্ব দেন কারা মসজিদের ইমাম মনির হোসেন। এরপর লাশটি কফিনে ঢুকিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী শেরপুরে লাশ দাফন হয় কামারুজ্জামানের।