রুবেলকে নিয়ে ভার্চুয়াল যুদ্ধে মৌসুমী হামিদ-হ্যাপি

moushumi-happy-rubelসুরমা টাইমস ডেস্কঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাস যুদ্ধে মেতে উঠেছেন হালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ ও উঠতি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি। তাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের বিষয়টি গত কয়েকদিনে ‘টক অব দ্য শোবিজ’-এ পরিণত হয়েছে।
তবে এরকম সরাসরি ভার্চুয়াল যুদ্ধ মিডিয়ার ইমেজ ক্ষুণ্ন করছে বলেই মত দিয়েছেন এ অঙ্গনের বোদ্ধারা। ‘তোমারে মেলা ভাল পাই রুবেল, আই লাভ ইউ’- মৌসুমী হামিদের এমন ফেসবুক স্ট্যাটাসেই যেন তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন ওঠতি অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি। যিনি মাস দু’য়েক আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করে আলোচনায় আসেন, যদিও সেই মামলা হালে টিকেনি।
রুবেল যখন বিশ্বকাপ স্কোয়াডের জন্য নির্বাচিত হন, তখনও কোর্টে রুবেলের বিরুদ্ধে রিট করেছিলেন হ্যাপি যেন রুবেলকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু রুবেল যখন বিশ্বকাপে ভাল পারফর্ম করছেন ঠিক তখনই খোলস পাল্টান হ্যাপি। রুবেলের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাটাস দেয়া শুরু করেন।
১০ই মার্চ ছিল বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের খেলা। এই খেলায় দুর্দান্ত পারফরম করে জয়ের নায়কে পরিণত হন রুবেল। আর সেই পারফর্ম্যান্সে উত্তেজিত হয়েই ক্রিকেটপাগল মৌসুমী রুবেলকে নিয়ে এমন স্ট্যাটাস দেন। এ ধরনের স্ট্যাটাস একই দিনে মাশরাফিকে নিয়েও দিয়েছেন মৌসুমী। একজন ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবেই রুবেলকে নিয়ে স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন এই তারকা। কিন্তু তার বিপরীতে মৌসুমীকে উদ্দেশ্য করে একটি স্ট্যাটাস দেন হ্যাপি।
সেখানে তিনি লেখেন, ডিয়ার মৌসুমী হামিদ, ‘এস এবং এন’-এর পেছনে লেগেছিলেন ঐটাতো ভালই ছিল। রুবেল-এর সঙ্গে আবার কি? আপনাকে নিয়ে সব ক্রিকেটারের স্ত্রী এবং গার্লফ্রেন্ড ভয়ে থাকে। প্লিজ নিজেকে একটু সামলান। এত ছলাকলা দেখালে রুবেল-এর কি দোষ!! রুবেলের প্রতি আপনার অতিমাত্রার প্রেম দেখে আমি তাসকিতো। আপনাকে কিছু বলা আর না বলা সমান কথা। এগুলো আপনার গায়ে লাগে না। লল। গুডলাক। যদিও আপনার প্রতি রুবেল-এর কোন আগ্রহ নেই। কিন্তু আপনি যা করতে পারেন!! মাশাআল্লাহ। প্রবলেম নেই। ইউ ক্যান ট্রাই।’
মৌসুমীর বিরুদ্ধে হ্যাপির এমন স্ট্যাটাসে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় ফেসবুক তথা দেশীয় মিডিয়ায়। অনেকেই বলেছেন মৌসুমী হামিদ ক্রিকেটভক্ত হিসেবে যে কোন ক্রিকেটারের প্রতিই তার ভালবাসা প্রদর্শন করতে পারেন। কিন্তু হ্যাপি নিজেকে অনবরত আলোচনায় রাখার জন্যই এমনটা করছেন।
এদিকে একদিন পরই নিজের দুঃখ প্রকাশ করে আবার হ্যাপি স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘কাল মৌসুমী আপুকে নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। দ্যাট ওয়াজ রং। সরি আপু।’
অনেকেই মনে করেছিলেন ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়ে এখানেই এর সমাপ্তি ঘটবে। সেটা হয়নি। এবার পা বাড়ালেন মৌসুমী। তিনি ১৬ই মার্চ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘কুকুর যখন পাগল হয়ে যায় তখন রাস্তায় যারে পায় হুট হাট ওর কামড়াইতে মন চায়। যাদের লাক খারাপ তারা ঐ পাগল কুত্তার কামড় খায়। খাওয়ার পর কি করে সোজা হসপিটাল যায় ইনজেকশন নিতে। নাহলে জলাতঙ্ক হয়ে যায়। হি হি হি হি। আমার বক্তব্য হচ্ছে বন্ধুগণ আমি বলতে চাচ্ছি কেউ ঐ পাগলা কুত্তারে কামড়াইতে যায় না। ৭ দিন পর ঐ কুত্তা এমনি এমনি মইরা যায়, এনিওয়ে।’
মৌসুমীর এমন স্ট্যাটাসে অনেকেই ভিন্নমত পোষণ করেছেন। অনেকেই বলেছেন তার মতো গুণী অভিনেত্রীর কাছ থেকে এরকম স্ট্যাটাস একেবারেই অপ্রত্যাশিত। মৌসুমীর এই ‘কুকুর’ সম্বোদিত স্ট্যাটাসের বিপরীতে গতকাল সকালে হ্যাপি নিজের সুর বদলে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ভাবছিলাম ঐ মেয়েটার বিষয়ে আর কিছু বলবো না। আবার নাকি সরিও বলেছিলাম! হুম। আর চুপ থাকতে পারলাম না। কুকুরের কাজ কুকুর করেই যায় যুগ যুগ ধরে। সেই পঞ্চপাণ্ডবের সময় থেকে কুকুরের কাজ সোজা বাংলায় কুত্তামি করে বেড়ানো যার কারণে ধরে নেয়া হয় কুকুর আজও ধ্রুপদীর অভিশাপ বয়ে বেড়ায়। কারণ তার জন্যই কুরুক্ষেত্র বেধেছিল। তাই আজও বলা হয় যেমন কুকুর তেমন মুগুর। কারণ সে যেভাবে অন্যকে অপমান করছে সেভাবে যুগ যুগান্তরে তাকে অপমানিত হতে হবে। এটা অন্য বিশ্বাসের কথা হলেও এর একটা শিক্ষা আছে। তা হলো অন্যকে কাদায় নামাতে হলে বা নোংরা করতে হলে নিজেকে ঠিক ততটাই নোংরা হতে হয়। তেমনি কিছু মানুষ আছে যারা জলাতঙ্ক রোগী না হয়েও সেই ভাইরাস নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এমনকি এদের ভাইরাসের মাত্রা কুকুরের চেয়েও বেশি থাকে। এসব মানুষ নিজেদের চেহারার আড়ালে কুকুরের চেহারাকে ঢাকতে পারে না। তাই যে কোন সময় তা বেরিয়ে আসে, তা সে যেমন সময়ই হোক না কেন। বড়ই আফসোস, সেসব জলাতঙ্ক ছড়ানো মানুষের কোন প্রতিকার নেই কিংবা ওষুধ নেই মেরে ফেলার, থাকলে সমাজের বেশ উপকার হতো।’
এদিকে হ্যাপির বিরুদ্ধে এরই মধ্যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, মডেল-অভিনেত্রী মুমতাহিনা টয়া, যেখানে তিনি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমেরও বিষোদগার করেছেন। মৌসুমীর পক্ষে গতকাল সকালে স্ট্যাটাস দিয়েছেন অভিনেত্রী প্রসূন আজাদও। সেই স্ট্যাটাস দুটোতে শেয়ার করেছেন মৌসুমী। বিষয়টি নিয়ে মানবজমিনের পক্ষ থেকে বক্তব্য জানতে মৌসুমী হামিদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। অন্যদিকে নাজনীন আক্তার হ্যাপি মানবজমিনকে জানান, তিনি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে চান না। এদিকে মিডিয়া বোদ্ধারা বলছেন মৌসুমী ও হ্যাপির এমন পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস যুদ্ধের মাধ্যমে মিডিয়ার ইমেজটা আরও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই এই বিষয়টিকে আর না বাড়িয়ে এখানেই শেষ করার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন তারা।