ওসমানীনগরে ঐতিহ্যবাহী বারুনী মেলার নামে অবৈধ লটারি

mela-pic-10-05-14-----------02শিপন আহমদ, ওসমানীনগর : সিলেটের ওসমানীনগরে শত বছরের পুরনো হিন্দুধর্মালম্বীদের বারুনী মেলার নামে এবার অবৈধ লটারীর আয়োজন করেছেন স্থানীয় সরকার দলীয় নেতারা। বারুনী মেলার এখনও এক সপ্তাহ বাকি থাকলে গত দুই দিন ধরে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারসহ পাশ্ববর্তী উপজেলার হাটবাজারে গুলো ট্রাক যোগে ২০ টাকা মূল্যের লটারীর টিকেট বিক্রি করতে দেখা গেছে। লটারীর ১ম পুরুস্কার ঘোষণা করা হয়েছে একটি নতুন মটর সাইকেল সহ নানা রকম পুরুস্কারের আশ্বাস প্রদান করে টিকেট বিক্রি করে যাচ্ছে।
জানা যায়,সনাতন ধর্মালম্বী প্রতি বছর দোল পুর্ণিমা তিথিতে শত বছর আগে ওসমানীনগর উপজেলার বুড়ি-বরাক নদীতে পুন্যস্লান করতেন। গঙ্গা নদী হচ্ছে পাপ মোচনকারী নদী। সঙ্গত কারণেই যারা গঙ্গা নদীতে স্লান করতে অক্ষম তারা বুড়ি বরাক নদীতে স্লান করতেন। যাওয়ার সময় বর্তমান তাজপুর বাজার পূর্বের নাম থানা বাজার বসা মেলা থেকে বিভিন্ন দব্য সামগ্রী কিনে বাড়ি ফিরতেন। বর্তমানে বুড়ি বরাক নদী ইতিহাস থেকে প্রায় হারিয়ে গেলেও ইতিহাসের পথ ধরে সে মেলা এখনো অনুষ্ঠিত হয়। তবে আগে মেলা একটানা ৭দিন ধরে চললেও বর্তমানে তা সীমিত আকারে (১দিনে) এসে ঠেকেছে। রেওয়াজ অনুযায়ী আগামী ১৮ মার্চ বুধবার উপজেলার তাজপুর বাজারে বারুনী মেলা অনুষ্টিত হবে।
উক্ত মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আ’লীগের একটি অংশের প্রভাবশালী নেতার অবৈধ লটারীর আয়োজন করে গত দুই দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ২০ টাকা মূল্যোর টিকেট বিক্রি করে যাচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক প্রবীনরা জানান, আগে দূর-দূরান্ত থেকে এ মেলায় মানুষ আসতো। বুড়ি-বরাক নদীতে স্লান করে যাবার সময় বাড়ীর বাচ্চা ও অন্যদের জন্য বিভিন্ন জিনিস কিনে বাড়ী ফিরত। এখন বুড়ি বরাক নদী নেই কিন্তু মেলা আছে আর মেলার নামে স্থানীয়রা যা ইচ্ছা তাই করে বেরাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতারা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশের সুবিধা ভোগী কিছু নেতা থানা প্রশাসনের সাথে মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে বারুনী মেলায় অবৈধ লটারী আয়োজন করে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় গাড়িযোগে টিকেট বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার দয়ামীর বাজারে অবৈধ টিকেট বিক্রি কালে ইউনিয়ন আ,লীগের সভাপতি লটারীর গাড়ি আটক করে পরবর্তীতে আয়োজকরা দয়ামীর এলাকায় আর লটারীর টিকেট বিক্রি হবে না মর্মে গাড়ীটি নিয়ে আসে।
ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, কে বা কারা বারুনীর নামে অবৈধ লটারীর আয়োজন করেছে এটা আমার জানা নেই। তবে উপজেলা বিভিন্ন হাট-বাজারে লটারীর টিকেট বিক্রি হচ্ছে এটা শুনেছি।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মুরসালিন অবৈধ লটারীর আয়োজনের ব্যাপারে বলেন থানা থেকে এ ধরনের লটারীর অনুমতি দেয়ার কোন বিধানও নেই। খোঁজ নিয়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।