সুনামগঞ্জের প্রবীণ বাউল শিল্পী মজনু পাশার ইন্তেকাল

baul-majnu-pasha2 “ পিঞ্জুর ছেড়ে সোনার পাখি একদিন উড়িয়া যাইবে / গহীনও কাননে একদিন জন্মের মতো লুকাইবে ।। ফিরবে যেদিন হায়াতের ডুরী / আমার শুয়া পাখিটা সেদিন যাইবো উড়িরে / ডাকলে আর চাইবোনা ফিরি তাঁর ভাবে সে চলিবে।। ডুববে যেদিন জীবন রবি / তোমার ১০ ইন্দ্রিয় নষ্ট হইবিরে / সেদিন কিছু নাআর তোমার রইবি অনন্তে সব মিশিবে।। আরে মন তোমার যাহা আত্মীয় স্বজন / তোমার জন্য করবে ক্রন্দনরে। একটা মাটির বাসর করে খনন/ জন্মের তালা লাগাইবে।। সাঙ্গ হবে ভব তামাশা / দুনিয়ার সব ভালবাসারে / সেদিন বাউল কবি মজনু পাশা চির নিদ্রায় ঘুমাইবে ।। পাখি উড়িয়া যাইবে” শীর্ষক গানটির জনপ্রিয় গীতিকার বাউল মজনু পাশা মৃত্যুবরন করেছেন। ইন্নালিল্লাহী ওয়া ইন্নালিল্লাহী রাজিউন। বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রয়ারী) সকাল ১১টা ২০ মিনিটে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাও ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ৬ পুত্র ও ৫ কন্যা রেখে যান। বৃহস্পতিবার বাদ আছর নামাজে জানাযা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
পারিবারিক সুত্র জানায়, গত ১৫ ফেব্র“য়ারী রবিবার দিবাগত রাতে দিরাই উপজেলার কাইমা গ্রামে সুযোগ্য শিষ্য বাউল হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে একটি ওরস অনুষ্ঠানে গান গাওয়া অবস্থায় আকস্মিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে  সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষে উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে পরিবারের ইচ্ছানুযায়ী তাকে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তিনি মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত (ব্রেইন স্ট্রোক) রোগে ভুগছেন। এই অবস্থায় তার অপারেশন হলে তাকে বাঁচানো কঠিন হবে। পরে ডাক্তারদের নির্দেশে বুধবার বিকেলে বেডরেস্ট এর পরামর্শ দিয়ে তাকে বাড়িতে পাটিয়ে দেয়া হয়। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকাবস্থায় ভাটির জনপদের এই চারণ কবি বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রকাশ করা আবশ্যক যে, মিডিয়ার অন্তরালে থাকা চিরঅবহেলিত উপেক্ষিত লোকশিল্পী ছিলেন বাউল মজনু পাশা। অসম্ভব প্রতিভাধর এই শিল্পী ১৯৩৮ সালের ২৬ অক্টোবর সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাও ইউনিয়নের ঠাকুরভোক গ্রামে এক সম্্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মরহুম নিদন উল¬াহ মাতা মরহুমা লাল বিবি। তিনি সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার তাজপুর ভাইটপাড়া ফকিরবাড়ি নিবাসী সাধক পুরুষ আবরার হোসেন ইনসানীকে মুর্শিদ মান্য করেন। তার গানের ওস্তাদ দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের অকাল প্রয়াত সুরকার জগদ্বিখ্যাত বাউল শিল্পী গানের সম্রাট কামাল উদ্দিন ( কামাল পাশা )। পাশ্ববর্তি শ্রীদ্ধরপাশা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাত্র ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত তিনি লেখাপড়া করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুমিল্লার হোমনা থানার কাইলকাপুর গ্রামের উপেন্দ্র কুমার দাসের অনুপ্রেরনায় ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি গান গাওয়া শুরু করেন। ২২ বছর বয়সে ওস্তাদের হাত ধরে সঙ্গীত চর্চার লক্ষ্যে ঘর হতে বের হন। ঘুরে বেড়ান দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন গানের আসরে। তিনি নিজেও প্রায় ১০০০ গান রচনা করেছেন। মরমী সংস্কৃতিতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বর্তমান মহাজোট সরকারের আমল থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তাকে সংস্কৃতিসেবী ভাতা প্রদান করে। ২০১৩ সালে মরমী কবি হাছন রাজার জীবনী নিয়ে ৭১ টেলিভিশনের একটি প্রামাণ্যচিত্রে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সংখ্যার বিচারে কম হলেও গুন ও মানের বিচারে তার গানের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন  সুর ও কথামালায় গীত রচনায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেন তিনি। ওস্তাদ কামাল পাশা ছাড়াও ফকির লালন,ফকির কালাশাহ, ফকির আলাউদ্দিন,ফকির শিতালং শাহ,সৈয়দ শাহনূর,মাওলানা ইয়াছিন ক্বারী,দ্বিজ দাস, শরৎ ঠাকুর,দ্বীন ভবানন্দ, সাধক কবি রাধারমন.হাছন রাজা,আরকুম শাহ,আজিম উদ্দিন, কবি জালাল খা,উকিল মুন্সী,দূর্বিন শাহ ও শাহ আব্দুল করিমের গান সুনামের সাথে পরিবেশন করেন তিনি। একটি বা দুটি নয় বিভিন্ন সঙ্গীত রচয়িতাদের প্রায় ১০ হাজার গান তার মুখস্থ ছিল। বিভিন্ন সময়ে ওস্তাদের সাথে ভারতের কোলকাতায়,স্বদেশের খুলনা চুয়াডাঙ্গা কুষ্টিয়া, ঢাকা,গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ও মানিকগঞ্জ জেলায়,সিলেটের কাজির বাজারে সংস্কৃতসেবী মকন মিয়ার এলাকায়,মৌলভী বাজার জেলার আয়না মিয়ার বাড়িতে, ময়মনসিংহ জেলা সদরে গঙ্গাচরন মুচির সাথে,মোহনগঞ্জে জালাল কবির সাথে,ছাতকের দূর্বীন টিলায় দূর্বিন শাহের সাথে,জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ বাজারে আবেদ আলী সরকারের সাথে,দিরাই থানার সুজানগর গ্রামে বাউল মফিজ উদ্দিনের সাথে,ভরারগাও গ্রামে শাহ আব্দুল করিমের সাথে,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার জেটারগাও গ্রামে অবনী মোহন ঠাকুরের সাথে মালজুড়া গান পরিবেশন করেন তিনি। জীবদ্ধশায় পালা (মালজুড়া) গানে তার সাথে ঠক্বর দেয়ার মতো কোন সুযোগ্য প্রতিদ্বন্দি বাউল শিল্পী ছিলনা ভাটি এলাকায়। ভাটি অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন এই শিল্পীর অনেক সুযোগ্য শিষ্য। বাউল মজনু পাশার শিষ্যরা হচেছন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার শাহ মোহাম্মদ সিদ্দেক শাহ চিশতি,জামালগঞ্জ উপজেলার মলি¬কপুর গ্রামের মর্ত্তুজা আলী, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হালুয়ারগাও গ্রামের আলাউদ্দিন মিয়া,গুচ্ছগ্রামের অর্চ্চনা দেবী,কুতুবপুর এর জাহাঙ্গির আলম,বড়ঘাট গ্রামের কামাল মিয়া,পুরান লক্ষণশ্রীর গোলাম হোসেন,অচিন্তপুর এর আব্দুল মতিন,আমজাদ হোসেন,বীটগঞ্জের আতাবুল রহমান,কৃষ্ণপদ দাস,জগাইরগাও গ্রামের কবির হোসেন,সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার গনীপুর গ্রামের মুর্শেদ আলম,কালীপুর গ্রামের হানিফ মিয়া,জগন্নাথপুর উপজেলার নন্দীরগাও গ্রামের শাহেদ আলী,ওয়াহেদ আলী,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ব্রজনাথপুর গ্রামের মিলন চক্রবর্ত্তী,দিরাই উপজেলার কাইমা গ্রামের হুমায়ূণ মিয়া,আখলাকুল আম্বিয়া, তাজুদ পাশা,রাধানগর গ্রামের ওয়ারিদ মিয়া,শ্রীনারায়নপুরের পবিত্র কুমার দাস,মীর্জাপুর গ্রামের তোফায়েল মিয়া,অনন্তপুর গ্রামের রাজিল উদ্দিন,সুমন মিয়া,মাটিয়াপুরের জুনাব আলী,রেজাউল করিম,দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ধরমপুর গ্রামের আমজাদ হোসাইন,সাপেরকোনা গ্রামের আমির উদ্দিন,মতিউর রহমান, ঠাইলা গ্রামের আছমত আলী,কাশিপুর গ্রামের মজম্মিল আলী,দূর্গাপুর গ্রামের বুরহান উদ্দিন,পাগলা গ্রামের আব্দুল কদ্দুছ,ঠাকুরভোক গ্রামের আবোল কালাম,মানিক মিয়া,সোহেনা আক্তার,রুবেল মিয়া ও কনিষ্ঠ পুত্র মিনার হোসেন প্রমুখ। ২০১১ইং সনের ২৮ জানুয়ারী রাত ১০ টায় সুনামগঞ্জের শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ,সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক,জননেতা মহিবুর রহমান মানিক এমপি,মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগ সেক্রেটারী নূরুল হুদা মুকুটসহ শত শত দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে অধীর আগ্রহভরে প্রতিভাবান এই সঙ্গীত শিল্পীর গান শুনেন সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। বাউল মজনু পাশার কন্ঠে কামাল পাশার একটি কামতত্ত্ব ও একটি দেহতত্ত্বের গান শুনে খ্যাতিমান পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেছিলেন,বহুদিন পরে কয়েকটি তত্ত্ব গান শুনলাম। নগদ অর্থে পুর®কৃত করে সুরঞ্জিত সেন এই মরমী কবিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, আপনাদের মতো প্রকৃত গুনী শিল্পীরাই খাটি দেশপ্রেমিক। মা মাটি আর মানুষের গান পরিবেশন করেন বলেই মানুষ আপনাদের ভালোবাসে। আপনাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ সবসময় আছে এবং থাকবে। তিনি অনুষ্টানের আয়োজক বাউল কামাল পাশা স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্টাতা আহবায়ক সাংবাদিক আল-হেলালকে ধন্যবাদ জানান গানের সম্রাট কামাল পাশার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য। লোকগীতি সংগ্রাহক আল-হেলাল চ্যালেঞ্জ করে বলেন,“আমি এ পর্যন্ত শতাধিক আসরে বাউল মজনু পাশার সাথে গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। দেখেছি এই লোকটি যা বলেন আলটিমেটলী তাই গান হয়ে যায়। তার ওস্তাদ কামাল পাশাকে যেমন পালাগানে কেউ হারাতে পারেনি তেমনি  বাংলাদেশে পালাগানের সর্বশ্রেষ্ট গায়ক ছিলেন মজনু পাশা ”।
তার ওস্তাদ গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশা (জন্ম ৬/১২/১৯০১-মৃত্যু ৬/৪/১৯৮৫ইং) সাহেবকে গানের আসরে সভাপতি ও বিচারক মেনে বিভিন্ন আসরে সহশিল্পী হিসেবে পালা গান পরিবেশন করতেন একুশে পদকে ভূষিত বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম (জন্ম ১৯১৬ ইং-মৃত্যু ১২/৯/২০০৯ ইং ও জ্ঞানসাগর উপাধিপ্রাপ্ত বাউল কবি দুর্বীন শাহ (জন্ম ১৯২০ ইং- মৃত্যু ১৫/২/১৯৭৭)। ভাটি অঞ্চলে পালাগানের উৎপত্তি সম্পর্কে বাউল মজনু পাশার স্বরচিত গানটি হচ্ছে।
“গান বাজনা আশিকের ঘেজা গান গাইলে প্রাণ জুড়ায়
আমি গান গাইবো সর্বদায়।।
ওস্তাদ কামাল উদ্দিন হইতে পালাগান এদেশে আইলো নীতি
শাহ আব্দুল করিমের গানে মিলে অনেক মারফতি।
যে গানে হয় প্রানের শান্তি সে গান গাইলেন কালাশায়।।
মারফতে ডুবিয়া গান গাইলা ফকির লালনে
রাধাকৃষ্ণের যুগল মিলন তত্ত্ব গাইলা রাধারমনে।
সৈয়দ শাহনূর মজে গানে দিন কাটান ছাড়াল পাড়ায়।।
বাউলে গান গেয়ে গেলেন মনেতে করে দিশা
কামতত্ত্বের গান গেয়ে গেছেন দুর্বিন টিলার দূর্বীন শাহ।
গানে ফকির হয় ভেলা শাহ তত্ত্বের গান গায় শরৎ রায়।।
হাছনরাজা গান গাইয়া নারীদের করলেন সাধন
হরিবংশের গান গাইলা রহমত উল¬¬াহ মনের মতোন।
হাজী আলাউদ্দিন একজন গান গাইলা মুর্শিদ লীলায়।।
ঠাকুরভোগে আছে একটা শাহ রমজানী পীরের মাজার
ঠাকুরভোক মোকাম বাড়ি সুরমা নদীর পূর্বপাড়।
তিনি হন বড়বাপ আমার কয় বাউল মজনু পাশায়”।।
সর্বশেষ খবরে জানা যায়, গত ৩/১১/২০১৩ইং তারিখে ওস্তাদ কামাল পাশার প্রায় ১০০০ গান সনাক্ত করে গানগুলোর প্রথম শিরোনাম বাক্য উল্লে¬খক্রমে সুনামগঞ্জের আমলগ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রায় ৪২ পৃষ্টার হলফনামা নং ২১৫ সম্পন্ন করে যান তিনি। এডভোকেট হোসেন আহমদের সত্যায়ন গ্রহনের পর বাউল কামাল পাশা স্মৃতি সংসদের সভাপতি বাউল মজনুপাশার হলফনামাটি গ্রহন করেন সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ বিলকিছ আক্তার। জীবনের শেষ ইচ্ছা ছিল তার গানের ওস্তাদ বাউল কামাল পাশার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। কারণ বাউল কামাল পাশার গানের কথা ও সুর নকল করে কেউ যদি রাষ্ট্রীয় মূল্যায়ণ পায় তাহলে তার ওস্তাদ কেন পাবেননা। জীবিত থাকাবস্থায় সরকার ও রাষ্ট্রের কাছে তিনি গানের সম্রাট কামাল পাশার প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রত্যাশা করে যান। পরম করুনাময়ের কাছে তার প্রানের আকুতি যতদিন পর্যন্ত গানচোরদের কবল থেকে কামালগীতি উদ্ধারসহ সরকারী পৃষ্টপোষকতায় পূর্ণাঙ্গরুপে প্রকাশিত না হয় ততদিন যেন,খোদা তাকে ইহজগতে বাঁচিয়ে রাখেন। মৃত্যুর আগে মনের সমস্ত আবেগ আর অনুভূতি দিয়ে তিনি প্রার্থনায় লীন হয়ে পরিবেশন করেন কাঙ্কিত সেই কামালগীতি,

“যারে সমন ডাকিসনে এখন অনেক কাজ মোর রয়েছে বাকী।।
সারে গামা পাদানিসা,সানিদাপা মাগারেসা
ওরে বারে বারে যাওয়া আসা,করিসনে তুই ভেলকীবাজি।।
আমি যাবোনা এই চৌরাশিতে,আমার মন মজেছে এই সঙ্গীতে
আমি থাকতে চাই ভালবাসার জগতে,তুই আমারে দিসনা ফাঁকি।।
যাওয়ার সময় যখন হবে,তুই আমারে নিয়ে যাবে
বাউল কামাল পাশায় কই কাতরে,তোর কাছে রয় এই মিনতি ”।।
কিন্তু তারপরও মৃত্যুকে জয় করতে পারেননি তিনি। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বাউল মজনুপাশার মৃত্যুতে সুগভীর শোক প্রকাশ ও তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন,আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত,অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-মৌলভীবাজার সংরক্ষিত আসনের এমপি এডভোকেট শামছুন নাহার বেগম,সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদ প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমান,জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারন সম্পাদক এডভোকেট শামসুল আবেদীন,জেলা কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী,দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম ও বাউল কামাল পাশা স্মৃতি সংসদের সাধারন সম্পাদক আবুল কাশেম চৌধুরীসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তারা মরহুম বাউল মজনু পাশার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।