পৌর এলাকায় এই শীতকালেও ভেলায় পারাপার!

velaজগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ জগন্নাথপুর পৌর এলাকায় এই শীতকালেও বাঁশের ভেলা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়িত নদী পারাপার করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। অতিরিক্ত যাত্রী উঠে যাওয়ার কারণে প্রায়ই ভেলা ডুবির ঘটনা ঘটে। মাত্র এক মিনিটের রাস্তা পারাপার হতে সময় লাগে ২০ থেকে ৩০ মিনিট। দূর্ভোগ লাগবে এ নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি ভূক্তভোগী সহস্রাধিক জনসাধারণের। জগন্নাথপুর উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে দক্ষিণ দিকে মাত্র কয়েকশ গজ দুরে রয়েছে বাদাউড়া নদী। নদীটি জগন্নাথপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। নদীটি প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ফুট প্রস্থ ও অনেক গভীর। এ নদীতে রয়েছে ছোট একটি বাঁশের ভেলা। জনসাধারণের চলাচলের জন্য জগন্নাথপুর পৌরসভার উদ্যোগে নদীতে এ বাঁশের ভেলাটি দেয়া হয়েছে। এ বাঁশের ভেলা দিয়ে প্রতিদিন জগন্নাথপুর পৌর এলাকার বাদাউড়া, করিমপুর, উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোষগাঁও, টিআরগাঁও, দোস্তপুর, গাজীরকূল, পাইলগাঁও ইউনিয়নের খালিশাপাড়া, উলুকান্দি, কিশোরপুরসহ প্রায় ১০ টি গ্রামের শতশত জনসাধারণ পারাপার হয়ে থাকেন। যুগযুগ ধরে এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন অত্র অঞ্চলের জনসাধারণ। শুধু হেমন্ত মৌসুমে এ নদী পথে অত্র অঞ্চলের জনসাধারণ চলাচল করলেও বর্ষা মৌসুমে নদীর পাড়গুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে চলাচল করা যায় না। তখন নৌকাই তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা। বাদাউড়া নদীতে একটি ব্রিজ ও নদীর দুই পাড়ে রাস্তা হলে এ অঞ্চলের চিত্র পাল্টে যাবে। খুব সহজে যাতায়াত করতে পারবেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, বাদাউড়া নদীতে একটি বাঁশের ভেলা রয়েছে। ভেলাটি দুই পাড়ে দুইটি বাঁশের সাথে রশি দিয়ে বাধা। এ পারের যাত্রীগণ ভেলাতে উঠে নিজেরাই রশি টেনে ওপারে যাচ্ছেন, আবার ওপারের যাত্রীগণ রশি টেনে এ পারে আসছেন। তখন ভেলাটি ডুবুডুবু অবস্থায় ছিল। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অত্র অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত নদী পারাপার হচ্ছেন। এ সময় ভেলাতে পারাপার হওয়া যাত্রী হুসিয়ার আলীসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমরা দেশের কোন অঞ্চলের বাসিন্দা নিজেরাই বুঝতে পারছিনা। বর্তমান ডিজিটাল যুগে দেশের কোন পৌরসভায় যোগাযোগের এমন করুন অবস্থা আছে কি না জানা নেই। আমরা যুগযুগ ধরে অবহেলিত অবস্থায় রয়েছি। এ অবহেলিত অঞ্চলের মানুষের কষ্টের অবসান কবে হবে জানি না। এ বাঁশের ভেলা দিয়ে বড়রা রশি টেনে পারাপার হলেও শিক্ষার্থীসহ কোমলমতি শিশুদের বিপাকে পড়তে হয়। কারণ রশি টানতে হলে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়। তখন শিশু ও মহিলাদের নদী পারাপার হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অত্র অঞ্চলের জনসাধারণের ভোগান্তি লাগবে জরুরী ভিত্তিতে এ নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আকুল-আবেদন জানাচ্ছি।
জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র মো. আক্তার হোসেন জানান, এ অঞ্চলের জনসাধারণের চলাচলের জন্য পৌরসভার উদ্যোগে বাদাউড়া নদীতে একটি বাঁশের ভেলা দেয়া হয়েছে। এখানে কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেয়া হয় না। তবে যাত্রীরা নিজেই রশি টেনে পারাপার হয়ে থাকেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এতো বড় নদীতে ব্রিজ নির্মাণের সাধ্য পৌরসভার নেই। তাই এভাবেই জনসাধারণকে চলাচল করতে হচ্ছে।