মানুষের দয়ায় বেছে আছেন মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম : ভুয়াদের ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধারা

fredom fighter abdul kaiyumজুবের সরদার দিগন্ত, দিরাই-শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ পাকিস্তানী হানাধার বাহিনীর কব্জি থেকে দেশকে, দেশের মানুষকে মুক্ত করতে দেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য অস্ত্রের মুখে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ ও দেশের মানুষকে স্বাধীন করেছেন বীর মুক্তিযুদ্ধারা, তাদের মধ্যে একজন যুদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের বড় নগদিপুর গ্রামের মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম (৭০)। ভাগ্যেও চক্রে বন্ধি যার জীবন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকের ভাগ্যের চাকার পরিবর্তন ঘটে উন্নতির দিকে গেলেও মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমের ভাগ্যের চাকা উল্টো দিকে গোড়ে দারিদ্রতার শেষ সিমার নেমে গেছে। দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করলেও জীবন যুদ্ধে হেরে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের বীর যুদ্ধাদের অনেকেই। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচেছন মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল কাউয়ুমসহ অগনীত মুক্তিযুদ্ধা। মুক্তি যুদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম সারাদিন দিরাইয়ের অলিÑগলিতে গোরাগুড়ি করে রাত্রী যাপন করেন পৌর শহরের হাসপাতাল রোডের মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের বারান্দায়। গতকাল শনিবার দুপুরে পৌরশহরের থানারোডের একটি গাছতলায় কথা হয় আব্দুল কাইয়ুমের সাথে। তিনি বলেন, ছাতক উপজেলার চৈলা গ্রামের পাশে ছিল আমাদের ক্যাম্প, ওই ক্যাম্পের কমান্ডার ছিলাম আমি, সেখানে আমাদের সাথে ছিলেন আমাদের এলাকার সন্তান সাবেক খাদ্য মন্ত্রী মেজর ইকবাল হোসেন, এাছাড়া আমাদের এলাকার আরও অনেকে সেখানে আমাদের সাথে যুদ্ধ করেছেন। আমি সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাসহ কিশোর গঞ্জের ইটনা উপজেলায় যুদ্ধ করেছি। আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধের কাগজ (সনদপত্র) না থাকায় আমি ভাতা পাচ্ছিনা, অথচ অগনীত ভাতাগ্রহনকারী আছেন যারা যুদ্ধ করেননি। আর আজ আমার মতো আরো অনেকে আছেন যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেও সরকারী সুবিধা বঞ্চিত হয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন কাটাচ্ছি। স্বাধীন বাংলায় ভুয়া মুক্তিযুদ্ধার ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে আসল যুদ্ধারা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কেউ দয়া করে খেতে দেন তাহলে খাই আর না দিলে না খেয়ে থাকি, রাত হলে মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের বারান্দায় শুয়ে থাকি। যে দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি, সেই স্বাধীন দেশে আজ আমরা খেয়ে না খেয়ে বেছে আছি। জলভরা চোঁখে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই বর্ণনা দেন তার জীবন কাহিনীর।
উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, অনেক মুক্তিযুদ্ধা আছেন যারা ভাতা পাচ্ছেন না, আবার অনেকে ভূয়া মক্তিযুদ্ধা সেজে ভাতা গ্রহন করছেন, আমি চাই অসহায় মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমসহ ভাতা বঞ্চিত মুক্তিযুদ্ধাদের অবিলম্বে সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া হোক।
উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের কমান্ডার আতাউর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমের সকল কাগজ পত্র টিক করে জেলা শহরে পাঠানো হয়েছে, সেখান থেকে ফাইল আসার পর থেকে সে নিয়মিত ভাতাসহ সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহন করতে পারবে।