অধিকার চাইতে গিয়ে মামলার আসামী হচ্ছেন মৎস্যজীবিরা : সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

Siraj Miahসুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটে নিজেদের মালিকানাধীন আড়তে ব্যবসা করতে পারছেন না মাহতাবপুর সমাজ কল্যাণ মৎস্য আড়ৎ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ৫১ সদস্য। একটি প্রভাবশালী চক্রের কারণে নিজেদের ন্যায্য অধিকার দাবি করতে গিয়ে বার বার মামলার আসামী হচ্ছেন তারা। মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সদস্য সিরাজ মিয়া এমন অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে মাহতাবপুর সমাজ কল্যাণ মৎস্য আড়ৎ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের মালিকানাধীন জায়গায় গড়ে উঠা ২০টি আড়তে অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে লুটপাট চালায় স্থানীয় প্রভাবশালী আবদুল মান্নান-শামছুল হক মোল্লা, ছাতকের একটি হত্যা মামলার আসামী বশির মিয়া, আখলুছ মিয়ার লোকজন। শুধু লুটপাট করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা উল্টো ‘চোরের মা’র বড় গলা’র মতো আমাদের বিরুদ্ধে একই রাতে বিশ্বনাথ থানায় দু’টি মামলা করে হয়রানি করছে।
তিনি বলেন, এ চক্র গত ২০০৯ সাল থেকে বার বার মামলা দিয়ে সমিতির সদস্যদের হয়রানি করে আসছে। মাহতাবপুর সমাজ কল্যাণ মৎস্য আড়ৎ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয় ২০০০ ইংরেজি সালে। যার নিবন্ধন নং-৩৪। এ সমিতির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পর এলাকার বিপথগামীরা ২০০২ সালের ডিসেম্বরে মাহতাবপুর মৎস্য আড়ৎদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমিতির নিবন্ধন (নং-৩৬) নেয়। আর এ নতুন সমিতির নামে তারা প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।ৎ
সিরাজ মিয়া বলেন, এ চক্র স্থানীয়ভাবে অত্যন্ত প্রভাবশালী ও স্বচ্ছল হওয়ায় তারা আড়তের জায়গা ও দোকান কোঠাগুলির জোরপূর্বক দখলে নেয়। ফরে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও ভূমির প্রকৃত মালিকরা সেখানে ব্যবসা করতে পারছি না। যতবারই সমিতির সদস্যরা ন্যায্য দাবি করেছেন, ততোবারই প্রভাবশালী চক্র একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে আড়ত দখল করে সমিতির সদস্যসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হেলাল উদ্দিন মেম্বার, জয়নাল আবেদীনসহ অনেকে মামলার আসামী হয়ে ফেরারী জীবনযাপন করছেন। এর আগে জিআর ১১৭/২০০৬, ৩৯/২০১৪, বিশ্বনাথ থানায় ১২(০৬)১৪, ৭৩/০৬ মামলাসহ অন্তত ১০টি মামলা করে। এর মধ্যে সব মামলার রায় আমাদের পক্ষে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, সমিতির সদস্যদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম হাজী কমর উদ্দিন সমিতির নামে ৩০ শতক ভূমি দান করেন। সর্বশেষ জরিপেও বিশ্বনাথের নূরপুর মৌজার জেএল ০৫, খতিয়ান ৪২৬ এর ৬৬০, ৬৬১, ৬৬২ দাগে ৪৫ শতাংশ ভ‚মি মাহতাবপুর সমাজ কল্যাণ মৎস্য আড়ৎ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের নামে নামজারি দেওয়া হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে আবদুল মান্নান-শামছুল হক মোল্লা চক্র সমিতির ভূমি নিজেদের নামে নামজারির চেষ্টা করলে তা ব্যর্থ হয়। এছাড়া এ চক্রের কাছে বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকায় এলাকার প্রবীন মুরব্বীরা একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে সালিশ-বৈঠক করতে চাইলেও তারা সেখানে আসেনা।
সংবাদ সম্মেলনে ভূমিদাতা সিরাজ মিয়া অভিযোগ করেন, আবদুল মান্নান-শামছুল হক মোল্লা চক্র প্রায়ই এলাকায় বলে বেড়ায়, এ আড়তের দখল নিতে ও ৫ জানুয়ারি রাতের ঘটনায় ২ মামলা করতে পুলিশসহ অন্যান্য খাতে তাদের ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমরা আড়ৎ হারিয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করি। কিন্তু আদালতের নির্দেশেও বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনার ১ সপ্তাহ পরও মামলা রেকর্ড করেনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ প্রশাসনের কাছে সৎ ও বৈধভাবে ব্যবসা করতে না পারায় অর্ধশতাধিক পরিবারের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার স্বাভাবিক পরিবশসহ আমাদের বেঁচে থাকার ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে আবেদন জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জুবায়ের আহমদ, জয়নাল আবেদীন, ফাহিম আহমদ, মাসুক মিয়া প্রমুখ।