কলকাতায় শুরু হল ইন্দো বাংলা সিলেট উৎসব

সিলেটবাসী স্বাত্যন্ত্র ও সৌভ্রাতৃত্বের আদর্শে অটুট থেকে এগিয়ে যাচ্ছেন-অর্থমন্ত্রী মুহিত

Muhit-at-Kolkataফয়সল আহমেদ মুন্না, কলকাতা থেকেঃ দক্ষিণ কলকাতা সিলেট অ্যাসোসিয়েশন ও জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ঢাকার যৌথ আয়োজনে গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হল তিন দিনের ইন্দো-বাংলা সিলেট উৎসব। বৃহত্তর সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য, সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র প্রভৃতি উপস্থাপন করা হবে। এসব উপস্থাপনায় বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী বৃহত্তর সিলেটের প্রতিনিধিত্বশীল শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন। কলকাতার যোধপুর পার্ক হাইস্কুল মাঠে গতকাল বিকাল ৪টায় এই উৎসবের বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকার সভাপতি সিএম তোফায়েল সামি, দক্ষিণ কলকাতা সিলেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রদোষ রঞ্জন দে, উৎসবের যুগ্ম আহ্বায়ক কৃষ্ণা দাস ও জালাল আহমেদ প্রমুখ। গতকাল আবুল মাল আবদুল মুহিত বাংলার ইতিহাসের সাথে সিলেটের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যর কথা তুলে ধরে বলেন, এই সিলেট আমাদের সকলের পূর্বপুরুষদের দেশ এবং আমাদের অনেকের বর্তমান বাসভূমি। সিলেটের আর্কষণ শুধু যেমন আগে ছিল তেমন নয়, এখন বরং আরো বেড়েছে। সর্বোপরি সিলেটবাসীরা এখনো তাদের স্বাত্যন্ত্র বজায় রেখে, সৌভ্রাতৃত্বের আদর্শে অটুট থেকে এগিয়ে যাচ্ছে।
উৎসবে অংশ নিতে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকার সভাপতি সিএম তোফায়েল সামি এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জগলুল পাশার নেতৃত্বে ৫০ সদস্যের সাংস্কৃতিক দল ও আড়াইশ’ সদস্যের প্রতিনিধি দল কলকাতায় আসছেন। অর্থমন্ত্রী ছাড়াও বাংলাদেশের প্রাক্তণ উপদেষ্টা সিএম শফি সামি, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তণ গর্ভনর ফরাস উদ্দিন, পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমদ মজুমদার, রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবীর, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. ভীস্মদেব চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক ড. শাহলা খাতুন, সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ার, পীর হাবিবুর রহমান, স্থপতি ও নির্মাতা শাকুর মজিদসহ প্রায় ৩০০ ব্যক্তি উৎসবে অংশ নিতে আসছেন। আসছেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দী ও শুভ্র দেব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখানো হয় বাউল স¤্রাট শাহ আবদুল করিমকে উৎসর্গ করে শাকুর মজিদ নির্মিত তথ্যচিত্র ভাটির পুরুষ ও সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্র ‘বৈরাতী’।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে সিলেটের মরমি সাহিত্য ও অর্থনীতি বিষয়ে পৃথক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. ভীস্মদেব চৌধুরী, ড. ফরাস উদ্দিন, ড. আহমদ আল কবীর । রাতে শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত, জীবন ও দর্শন নিয়ে শাকুর মজিদের লেখা গীতি-নৃত্য-নাট্য ‘মহাজনের নাও’ প্রদর্শন করবে নিলাঞ্জনা জুইয়ের পরিচালনায় সিলেটের নাট্যদল নৃত্য শৈলী। এছাড়াও বরাক বঙ্গের শিলচরের মধ্যশহর সাংস্কৃতিক সমিতি সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক শুচিস্মিতা দেব ও প্রাক্তণ সাংস্কৃতিক সম্পাদক সঞ্চিতা ভট্টাচার্য নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। উৎসবের শেষ দিন রবিবার দুই বাংলার কীর্তিমান সিলেটিদের সম্মাননা দেওয়া হবে।