যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন বেগম জিয়া

goyeshorসুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে ‘দেশনেত্রী পরিষদ’ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই প্রস্তুতি নেন, যাতে সময় হলেই বেরিয়ে পড়তে পারেন। নেত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় বসে থাকবেন না। সরকার যেভাবে ছক আটছে যে কোনো মুহূর্তে দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) আটক করতে পারে। বিএনপির কথা এবং কাজে ফাঁক থাকায় জনগণ মাঠে নামছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের কাছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নর্দমার চেয়েও দুর্গন্ধময়। আওয়ামী লীগ দেখলেই জনগণ এখন নাকে রুমাল দেয়। কিন্তু তার মানে এই নয়, জনগণ বিএনপিকে খুব পছন্দ করে।
গয়েশ্বর বলেন, আমাদের কথা এবং কাজে ফাঁক থাকায় এবং কমিটমেন্ট না থাকায় জনগণ মাঠে নামছে না। দলের বড় বড় পদ নেওয়ার ব্যাপারে আমরা আগ্রহ দেখাই, কিন্তু পদ নেওয়ার পর আমাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
স্বৈরাচার পতন দিবসের আলোচনা সম্পর্কে ‘উষ্মা’ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ১৭৫৭ সালের মীর জাফর, ১৯৭১ সালের রাজাকার, ১৯৭৫ সালের বাকশাল, ১৯৮১ সালের স্বৈরাচার এবং ওয়ান ইলেভেনের সংস্কার-এই পাঁচটি শব্দ আমাদের অভিধানে নিকৃষ্ট শব্দ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়া এবং থাকার প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলই মীর জাফর, রাজাকার, স্বৈরাচার, বাকশাল এবং সংস্কারপন্থীদের বুকে টেনে নিয়েছে, কোলাকুলি ও মোলাকাত করেছে।
গয়েশ্বর বলেন, ১৯৮১ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত বিএনপির অবস্থা আজকের মতো এত শক্ত ছিলো না। দেশব্যাপী এতো জনসমর্থনও ছিলো না। কেবল খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব এবং যুব ও ছাত্রসংগঠনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে এরশাদের পতন হয়েছিলো। কিন্তু কী এমন প্রয়োজন হলো যে গত আওয়ামী লীগ সরকারের (১৯৯৬-২০০১) আমলে সেই এরশাদকে নিয়েই আমাদের আন্দোলন করতে হলো?- প্রশ্ন গয়েশ্বরের। তিনি বলেন, ওই সময় বিএনপির যেসব অনুষ্ঠানে এরশাদ উপস্থিত থেকেছেন সেসব অনুষ্ঠানের মঞ্চে তো দূরের কথা তার ধারের কাছেও আমি যাইনি।
গয়েশ্বর বলেন, এ দেশে স্বৈরাচার এরশাদ এবং রাজাকার জামায়াতের সঙ্গে মাঝে মাঝে আওয়ামী লীগ বিএনপি দুই দলকেই বসতে হয়, সে কেবল ক্ষমতায় যাওয়া এবং টিকে থাকার জন্য। ব্যক্তি স্বার্থের জন্যও কেউ কেউ স্বৈরাচারের দালাল হয়েছেন। ১৯৮১ সালের পর বিএনপির অনেক বাঘা বাঘা নেতা এরশাদের বুটের তলায় আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচার এরশাদের প্রায় ৭৫ ভাগ এমপি মন্ত্রী এখন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিতে অবস্থান করছেন। সুতরাং স্বৈরাচারের পরিষদবর্গকে দলে রেখে স্বৈরাচার পতন দিবস পালন কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেটি আমাদের ভেবে দেখতে হবে।
দেশনেত্রী পরিষদের সভাপতি একেএম বশির উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ছাত্র নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রমুখ।