বাংলাদেশ ককাসের সকলেই জয়ী ॥ কঠিন চ্যালেঞ্জে ওবামা
মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয়জয়কার
নিউইয়র্ক থেকে এনা: গত ৪ নভেম্বর আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয়জয়কার। সেই সাথে বাংলাদেশ ককাসের সকল সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আমেরিকার অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থা, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং ইমিগ্রেশন ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ওবামার বিতর্কিত ভূমিকায় তার জনপ্রিয়তায় যে ধ্বস নামে তাই প্রতিফলত দেখা গেল মধ্যবর্তী এই নির্বাচনে। ওবামার জনপ্রিয়তায় ধ্বস নামার কারণে আট বছর পর সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো ডেমক্র্যাটরা। আগেই নিয়ন্ত্রণে ছিলো কংগ্রেসে। এবার হারালো সিনেটেও উভয় হাউজই এখন রিপাবলিকানদের দখলে চলে গেল। এর ফলে প্রেসিডেন্ট ওবামা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। গত ৪ নভেম্বরের নির্বাচনে সিনেটে রিপাবলিকানরা আসন পেয়েছেন ৫২টি অন্যদিকে ডেমক্র্যাটরা পেয়েছে ৪৫টি। অন্যদিকে হাউজে রিপাবলিকানরা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪৩৫ টি আসনের মধ্যে রিপাবলিকানরা পেয়েছে ২৩৫ টি অন্যদিকে ডেমক্র্যাটরা পেয়েছে ১৬১টি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে মধ্যবর্তী নির্বাচনে সরকারি দলের ভরাডুবি নয় কোন বিষয় নয়। গত ৩৮টি নির্বাচনের মধ্যে ৩৫টি নির্বাচনেই ক্ষমতাশীনদের পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে। এর আগেও প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের আমলেও উভয় কক্ষের নিয়ন্ত্রণ পায় রিপাবলিকানরা। সেই সময় সমঝোতা করেই অনেক বিল পাশ করা হয়েছে। দেখা বিষয় হলো এবার সমঝোতা দেখা যায় কিনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে সমঝোতা উভয় দলকেই করতে হবে। তা না হলে অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। উভয় আসনে রিপাবলিকানরা যদি সমঝোতা না করে বিল পাশ করেন এবং সেই বিলে প্রেসিডেন্ট সই না করেন সেক্ষেত্রে অচলাবস্থা নিশ্চিত। এর জন্যই উভয় দলের সমঝোতা দরকার। উভয় হাইজে রিপাবলিকানদের জয়ের ফলে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লষকদের মতে এবারের বিস্ময়কর ফলাফল হলো ডেমক্র্যাটদের আসন আরাকাসাস, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, সাউথ ডেকোটা, মন্টেনা, কলারাডো ও নর্থ ক্যারোলিনায় রিপাবলিকানদের জয়।
এদিকে কংগ্রেশনাল বাংলাদেশ ককাসের চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলিসহ সকলেই পুননির্বাচিত হয়েছেন ৯০.১% ভোট পেয়ে। কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ডিস্ট্রিক্ট-৬ থেকে তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হয়েছেন। ৮৪ বছর বয়সী কংগ্রেসম্যান চার্লস র্যাঙ্গেল আবারো নির্বাচিত হয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট- ১৩ থেকে ৮৭.২% ভোট পেয়ে। এ আসনে তিনি ১৯৭১ সাল থেকেই নির্বাচিত হয়ে আসছেন। ডিস্ট্রিক্ট-২ থেকে রিপাবলিকান পার্টির পিটার কিং জয়লাভ করেছেন। ডিস্ট্রিক্ট ৫ থেকে ৯৬.৪% ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন কংগ্রেসম্যান গ্যাগরি মিক্স। নিদিয়া ভ্যালেস্কুয়েজ ৮৮.৪% ভোট পেয়ে ডিস্ট্রিক্ট ৭ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম কংগ্রেসম্যান হাকিম জাফরি ৯৬.৯% ভোট পেয়ে আবারো জয়ী হয়েছেন। ডিস্ট্র্ক্টি ৯ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন কংগ্রেসওম্যান ইভেটি ডি ক্লার্ক। ডিস্ট্রিক্ট ১০ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন জেরাল্ড। ক্যারলিন ডে ম্যালনী নির্বাচিত হয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট ১২ থেকে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ( রাত ২টা) স্টেট গর্ভনর নির্বাচনে রিপাবলিকানরা ২৭টি এবং ডেমক্র্যাটরা ১৪টি জয়লাভ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নি¤œকক্ষ তথা প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের মধ্যে ১০৯টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন প্রার্থীরা। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ীদে অধিকাংশই ডেমক্র্যাট।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ তথা ইউএস সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে ৩৬টির নির্বাচন হলো। এর ৩৩টি হচ্ছে রেগুলার এবং ৩টিতে বিশেষ নির্বাচন। ২০১২ সালে নির্বাচনের পর ইউএস সিনেটে ডেমক্র্যাটরা জিতেছিলো ৫৩ আসনে। অপরদিকে রিপাবলিকানরা পেয়েছিলেঅ ৪৫ আসন। ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছিলেন। এবার ঘটনো ঠিক তার উল্টো। রিপাবলিকানরা জয়ী হয়েছে ৫২ আসনে অন্যদিকে ডেমক্র্যাটরা জয়ী হয়েছে ৪৫টি তে। উল্লেখ্য ইউএস সিনেটের মেয়াদ হচ্ছে ৬ বছর।
একই সাথে স্টেট গর্ভনরের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ৩৭টি স্টেটে।