হেভেন চৌধুরী হত্যাকান্ডের মামলায় আমি ষড়যন্ত্রের শিকার

নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতা হাবিব

Pic habib nabiনবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ছাত্রলীগ কর্মী মেধাবী ছাত্র নেতা হেভেন চৌধুরী হত্যাকান্ডের মামলায় তাকে প্রধান আসামী করার ঘটনাটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবী করেছেন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। আমি ১৯৯৭ সালে নবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৯৯ সালে সভাপতি নির্বাচিত হই। ২০০৪ সালে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সদস্য পদ লাভ করি। তাছাড়া একই বছর নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ২০১১ সাল থেকে আমি উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আজ অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে, চলতি বছরের ২৪ ফেব্র“য়ারী সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মি হেভেন চৌধুরী নিমর্ম হত্যাকান্ডের শিকার হন। হত্যাকান্ডটি নবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের দুই যুগ্ম আহবায়ক যথাক্রমে কাশেম ও পারভেজ এর আধিপত্য বিস্তার ও আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে ঘটে। ছাত্রলীগের বিবদমান দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হলে নবীগঞ্জ থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম থানার সরকারী মোবাইল ফোন থেকে আমাকে সংঘর্ষের বিষয়টি জানান। এবং জরুরি ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে আসার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। আমি তখন নির্বাচনী কাজে ইমামবাড়ি বাজারে অবস্থান করছিলাম। ফোনের পরই আমি আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে আসি। ঘটনাস্থলে এসে বিবদমান দুই গ্র“পকে চরম উত্তেজিত অবস্থায় দেখতে পাই। আমি তখন লক্ষ্য করি সেখানে পুলিশও উপস্থিত আছে। আমি উভয় পক্ষকের উত্তেজনা দমনের চেষ্টা করি। কিন্তু কোন পক্ষই আমার প্রচেষ্টার প্রতি সম্মান না দেখিয়ে পুলিশ ও আমাকে পাশকাটিয়ে দুই গ্র“পের কর্মিরা নতুন বাজার মোড়ে শেলী কনফেকশনারীর সামনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মি পারভেজ রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়। পারভেজকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠাই। প্রায় ১০০ গজ দুরে সেন্ট্রাল প্লাজার সামনে বিবদমান ওই দুই পক্ষের পৃথক সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মি হেভেন চৌধুরী আহত হয়ে রাস্তার উপর লুটিয়ে পড়ে। আমি ও অপরাপর কয়েকজন তাকেও উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠাই। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে পারভেজ ও হেভেনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার গাড়িতে করে নিয়ে যাই। এবং পারভেজ ও হেভেনের পরিবারের লোকজনকে সিলেট যাওয়ার জন্য অনুরোধ করি। ওসমানীতে দুইজনকে ভর্তি ও চিকিৎসা করাই ওই সময়ের চিকিৎসা ব্যয় আমি নিজে বহন করি। চিকিৎসা চলাবস্থায় হেভেনের পিতা-মাতা ওসমানীতে পৌঁছেন। পরদিন সকালে হেভেনের মাথায় সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। এর পরদিন সকালে হেভেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার এ্যাম্বোলেন্স যোগে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন হেভেনের পরিবার। সেখানে ২ দিন থাকার পর চিকিৎসারত অবস্থায় হেভেনের মৃত্যু হয়। হেভেনের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি মর্মাহত হই। আমি তার রুহের মাগফেরাত কামনার জন্য ছাত্রলীগের ১৩টি ইউপি,পৌর ও কলেজ শাখার মাধ্যমে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করি। সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। কিন্তু পরিতাপের সাথে জানাচ্ছি যে,উক্ত ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে আমাকে রাজনৈতিক,সামাজিক ও আমার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করা এবং আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার হীন মানসে আমাকে প্রধান আসামী করা হয়। আমি কোনভাবেই ওই নির্মম খুনের ঘটনার সাথে জড়িত নই। বাস্তবে হেভেন ছিল আমার অত্যন্ত প্রিয়ভাজন। আমি তাকে স্নেহ করতাম। এ কথা আমার রাজনৈতিক সতীর্থরাসহ নবীগঞ্জবাসী জানেন। হেভেন সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের সময় আমার পাশে ছিল।
তিনি আরও বলেন,আমি রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে উক্ত মামলায় আসামী হওয়ার কারনে দীর্ঘ ৫ মাস কারাভোগের পর বর্তমানে জামিনে আছি। আমি মনে করি এ মামলায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।