প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রক্সি শিক্ষক-চাই কঠোর ব্যবস্থা

Proxy-Teacher-at-Primaryজিয়া খালেদঃ সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবরে জনমনে দারুণ হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটের বহুল প্রচারিত দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকায় অতি সম্প্রতি এ বিষয়ে সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে। বিষয়টি হচ্ছে প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা। তাছাড়া কিছু দিন পূর্বে একটি প্রভাবশালী জাতীয় দৈনিকে “স্কুলে অনিয়মিত, বেতন নিয়মিত”, শিরোনামে প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয়েছে… “অধিকাংশ সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। মাঝে মধ্যে দুই/একদিন স্কুলে গেলেও খাতায় স্বাক্ষর দেন পুরো মাসের। বেতন-ভাতা উত্তোলন করে নিয়মিত।…. আচরণবিধি ১৯৯৭ অনুযায়ী সরকারী কর্মচারীদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও তা তোয়াক্কা করছেন না”। এ ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি হচ্ছেন সিরাজগঞ্জ জেলার একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক। এটি শুধু সিরাজগঞ্জের চিত্র নয়, এটা গোটা বাংলাদেশের চিত্র। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য এগুলো অশনি সংকেত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিদ্যালয়ে না গিয়ে নামমাত্র বেতনে ভাড়াটে লোক দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করবেন, চাকুরী রক্ষার জন্য কালেভদ্রে স্কুলে যাবেন, চাকুরীবিধি লংঘন করে রাজনীতি করবেন, বাড়তি রোজগারের ধান্দায় থাকবেন, বিধিবিধান আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে এইসব অপকর্ম করবেন তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কঠোর হস্তে দমন করতে হবে এ প্রবণতা। চিহ্নিত করতে হবে এসব অপকর্মের দায় কার? সুখের কথা বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সিলেট জেলা শাখার অতি সম্প্রতি সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে একটি সভায় এ প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, সিলেটে কোন প্রক্সি শিক্ষক নেই, থাকলে খুঁজে বের করে আমরা এর ব্যবস্থা নেব। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান।

আমরা জানি জাতীয় প্রাথমিক একাডেমী (নেপ) প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও সুষ্ঠু বিদ্যালয়/অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদেরকে দক্ষ প্রশিক্ষক, সহায়ক সুপারভাইজার এবং কৌশলী ক্লাষ্টার অফিসার হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ২০০৮ সালের প্রথম দিকে ৬০ দিনব্যাপী ২ ব্যাচের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এটি শুরু হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী এ প্রশিক্ষণের লক্ষ্য মাঠ পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ হাতে-কলমে প্রয়োগের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন। শুধু তাই নয়, প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে সমাজ সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা অর্জনের লক্ষ্যে বিদ্যালয় এলাকার জনগোষ্ঠীকে বিদ্যালয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন কর্ম শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এসকল কর্মশিবির থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালার আলোকে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। পিইডিপি-২-এর আওতায় বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক সহ ১১ টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার কাজ করছে এবং বর্তমানে পিইডিপি-৩-এর আওতায় এ কর্মসূচীগুলোর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়া বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের বেশকিছু দাবী-দাওয়া মেনে নিয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণীর মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের বেতন একধাপ বৃদ্ধি করা হয়েছে, ১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষক সহ ২৬ হাজার ১৯৩ টি বেসরকারী স্কুল সরকারীকরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের অন্যান্য দাবী-দাওয়াও পর্যায়ক্রমে মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে সরকার। তারপরও প্রাথমিক শিক্ষার মান তলানীতে থেকে যাবে-শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকবেন না, ৭ম ও ৮ম শ্রেণী পাস ভাড়াটে দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করবেন, রাজনীতি করবেন-তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যারা এ কাজ করে তারা মূলত শিক্ষক নয়-শিক্ষক নামের কলঙ্ক। প্রকৃত শিক্ষকরা কোন অবস্থাতেই এ কাজ করতে পারে না। আর এসব দেখভালের দায়িত্ব যাদের হাতে তারা এসব সঠিকভাবে দেখভাল না করে “কম্প্রোমাইজ” করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছেন। জাতির সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করছেন। তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। যারা শিক্ষক নাম নিয়ে এ জঘন্য কাজে লিপ্ত তাদের সংখ্যা অতি নঘন্য। এ নঘন্য সংখ্যক শিক্ষক নামধারীদের দিয়ে মূলধারার শিক্ষকদের বিচার করা যায় না। তবে এ নঘন্য সংখ্যক নামধারী শিক্ষকরা যা করছে তা অত্যন্ত গর্হিত। এ গর্হিত কাজগুলো অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। এ ধরনের শিক্ষকরা শুধু প্রাইমারী স্কুলে নন, আছে হাইস্কুলে, কলেজে এবং ভার্সিটিতেও। এরা শিক্ষক হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও চিন্তা-ভাবনা, মত প্রকাশ ও কাজে কতোটুকু শির উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে সে প্রশ্ন থেকেই যায়। এরা আত্মমর্যাদাশীল তো নয়ই, মেরুদণ্ডহীনও বটে। তাই তো পত্রিকার পাতায় পড়তে হয় “প্রাইমারী স্কুলের প্রক্সি শিক্ষক,” “স্কুলে অনিয়মিত, বেতন নিয়মিত,” “কালো তালিকাভুক্ত ৪৭ জন শিক্ষক,” “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ছাত্রীদের জিম্মি করে নিপীড়ন করছেন,” “বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান,” “ছাত্রী নিয়ে শিক্ষক উধাও,” “প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নিয়ে রাতের অন্ধকারে অধ্যক্ষ উধাও,” ইত্যাদি শিরোনামযুক্ত সংবাদগুলো।
২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিভিন্ন বিষয়ে নির্দিষ্ট কয়েকটি কোর্ড থেকে খাতা পর্যবেক্ষণ করে নাম্বার দেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভুল ধরা পড়ায় ৪৭ জন শিক্ষককে কালো তালিকাভুক্ত করে ৫ বছরের জন্য তাদের জেএসসি, এসএসসি পরীক্ষার খাতা দেখা এবং সব ধরনের গোপনীয় কাজ করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে এবং এ ৪৭ জন শিক্ষকের তালিকাও প্রকাশ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এ ধরনের শিক্ষক প্রতিটি বোর্ডেই পাওয়া যাবে ভুরিভুরি। এদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান অত্যন্ত জরুরী তা না হলে শিক্ষার্থীদের মাথা খাওয়ার এ আয়োজন কোনদিন বন্ধ হবে না। তবে বিচারের নামে নাটক সাজিয়ে দায়মুক্তি নয়।
সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ অফিসার তৈরী করছে এ সমস্ত অনিয়ম দেখার জন্য। প্রধান শিক্ষক, এসএমসি, পিটিএ, এলাকার সামর্থবান ব্যক্তি/নেতা, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের ম্যানেজ করে এ কাজ করা হচ্ছে কিংবা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায়। কর্মকর্তারা কেন এসব দেখেন না? নাকি কম্প্রোমাইজ করে চলছেন অপরাধীদের সাথে? তবে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা বিভিন্ন উপজেলায় আছেন যারা শিক্ষকদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধরনের ফায়দা নেন। লেখাপড়ার মানের তোয়াক্কা করেন না তারা। আমার মনে হয়, প্রক্সি শিক্ষকের নিয়োগের মতো জঘন্য কাজ এ অফিসারদের ছত্রছায়ায় হচ্ছে। শিক্ষাঙ্গণের দুর্গতির জন্য মূলত এরাই দায়ী। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মরহুম আব্দুল খালিকের কথা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হয়ে তিনি অবসর নিয়ে মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তিনি যখন গোলাপগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা অফিসার ছিলেন একই সাথে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা অফিসারেরও দায়িত্ব ছিলেন। এই দুই উপজেলার শিক্ষক এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, কর্মকর্তারা সবাই জানেন, তিনি স্কুল ভিজিট করতেন নিয়মিত। কোন স্কুলে প্রয়োজনে সকাল-বিকাল ২ বারও ভিজিট করতেন। কোন স্কুলে তিনি চা খেতেন না। প্রয়োজন হলে নিজের পকেটে রাখা শুকনো রুটি বিদ্যালয়ে গিয়ে পানি দিয়ে ভিজিয়ে খেতেন। তিনি ছিলেন একজন প্রমোটেড অফিসার। আরেকজন সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার ছিলেন মনছুর আলী চৌধুরী। তিনিও ছিলেন অনুরূপ। মনছুর আলী চৌধুরী শিক্ষকদের কাছ থেকে কোন কিছু খেতেন না, বরং সময় সুযোগ পেলে শিক্ষকদের খাইয়ে তিনি তৃপ্তি পেতেন। এরা অফিসে চেয়ারে বসে থাকলেও বিদ্যালয় সমূহে পাঠদান চলতো যথানিয়মে। সততার কারণে আল্লাহর সাহায্য আসতো বিধায় হয়তো শিক্ষকরা তাদের যেমন ভয় করতেন, তেমনি করতেন সম্মান, শ্রদ্ধা। এরা কোন শিক্ষককে শাস্তি দিয়েছেন এমন কোন নজির নেই। তারপরও স্কুলগুলো চলতো যথারীতি। মরহুম আব্দুল খালিক, মনছুর আলী চৌধুরী, এ.কে.এম রুহুল আমীন-এর মতো ন্যায়পরাণ শিক্ষা অফিসার প্রত্যেক উপজেলায় থাকলে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য কাউকে চিন্তা করতে হতো না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, শিক্ষার মান নিম্নোগামীতার জন্য বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ এবং জেলা পর্যায়ে জেলার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাগণই দায়ী। তবে সর্বাগ্রে ক্রমান্বয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাগণ।
যদি কোন শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে জাতীয় পতাকা নামিয়ে কাঠের স্কেল দিয়ে মেপে পতাকার প্রস্থ বা দৈর্ঘ্য আধ ইঞ্চি কম পেয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করে দেন, কিংবা কোন অফিসার যদি কোন উপজেলায় দায়িত্ব নিয়ে সেখানে গিয়ে কৌশলে শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির ধান্দায় থাকেন, তবে বুঝতে হবে “ডাল মে কুচ কালা হায়”। অফিসার যদি বাঘের বাচ্চা হয়ে থাকে, অর্থাৎ বড় মাপের, বড় মনের তথা বড় পরিবারের সন্তান হয়ে থাকেন, তবে ছোট ছোট ভুলভ্রান্তির উপর গুরুত্ব দিবেন না-গুরুত্ব দিবেন লেখাপড়ার মানের উপর। প্রধান শিক্ষককে মৌখিক নির্দেশনা দিলেই পতাকার মাপ ঠিক হয়ে যাবে এমনিতেই। মামলার প্রয়োজন কি? যাত্রীবাহী বাসগুলোতে লেখা থাকে “ব্যবহারে বংশের পরিচয়”। বড় বড় অফিসারদের কিংবা অন্য কারো বংশ তুলে কথা বলার সাহস আমার নেই। আমি শুধু বলবো যারা অপকর্ম করে কিংবা অপকর্মের সহযোগিতা করে তাদের সুশিক্ষার অভাব। মনছুর আলী চৌধুরীরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত, খোদাভীরু, অখাদ্য ভক্ষণে অনঅভ্যস্থ-এ জন্য তারা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কথায় কথায় মামলা করেন না। তারা শিক্ষকদের সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মানের পাত্র-ঘৃণার পাত্র নন। মনে রাখবেন শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মারধোর, ধমকানো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা শিক্ষকদের প্রতি পুলিশী আচরণ করার সময় শেষ-সিষ্টেম পাল্টে গেছে।
সম্প্রতি খবরে প্রকাশ, হিসাব মিলছে না কৃষি ব্যাংকের “১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকার”। ব্যাংক জালিয়াতি, বিদ্যুতে লোকসান, কলকারখানা, শেয়ার বাজার, বিআরটিসি বাসে লোকসান, রেলে লোকসান, বিমানে লোকসান শেষ পর্যায়ে সরকারী মাসরুম প্রকল্পে লোকসান, ডেমো ট্রেনে লোকসান, ওয়াটার বাসে লোকসান-সব কিছুতেই লোকসান, হরিলুট। লোকসানে পড়ে বাংলাদেশে হাজার হাজার মাইল পিচঢালা পথ এখন চৈত্রের রৌদ্রে ফেটে যাওয়া বাংলার জমিনের মতো ব্যবহারে অযোগ্য। এসব লোকসান কোন না কোন ভাবে হয়তো পুষিয়ে নেয়া যাবে। কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রে লোকসান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাথা খাওয়ার আয়োজন-এ লোকসান কোনদিনই পোষাবে না। শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট যেই হোন, মনে রাখবেন একটি অন্যায় আরেকটি অন্যায়কে আড়াল করতে পারে না। অন্যায় প্রকাশ পাবেই। জবাবদিহিতা একদিন করতেই হবে। দূরে যেতে হবে না, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসই এর প্রমাণ। শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের দায়িত্ব যাদের হাতে, মনে রাখবেন শিশুদের ঠকালে স্বয়ং আল্লাহ আপনাদের সন্তানদেরও ঠকাবেন। হায়াত-মউত, রিজেক, সম্মান, সুস্থ্যতা সবই আল্লাহর হাতে। আল্লাহকে ভয় করুন, দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন লাভবান হবেন। জাতি, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একই সাথে নিজ নিজ সন্তানরাও। মনে রাখবেন সৎ জীবন যাপনের কোন বিকল্প নেই।
অতি সম্প্রতি সরকার প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সরকারী বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট অফিস পরিদর্শন করে সমস্যাগলো চিহ্নিত করার জন্য যুগ্ম সচিব থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে ২৫ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা ছাড়া তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু ভর্তির হার বৃদ্ধি, ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিদ্যালয়/অফিসে উপস্থিতি দেখবেন। সরকারের পরিকল্পনা ব্যবস্থা গ্রহণের শেষ নাই। প্রায় পরিকল্পনাই ভেস্তে যায় কিংবা দুর্বল হয়ে পড়ে মাঠ পর্যায়ে। সরকারী সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চাই বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা। তা না হলে সব পরিকল্পনার ‘পরি’ উড়ে গিয়ে শুধু থেকে যাবে ‘কল্পনা’।
লেখক : কলামিষ্ট, সভাপতি-ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাব।