জকিগঞ্জে মৃত্যুর ৩৩ বছর পর মৃত্যুসনদ নিয়ে আপত্তি!

প্রতীকি ছবি
প্রতীকি ছবি

জকিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ জকিগঞ্জে কাজলসার ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মৃত মইয়ব আলীর মৃত্যুর ৩৩ বছর পর মৃত্যু সনদ নিয়ে আপত্তি করেছেন প্রতিবেশী শাহ আলম। মৃত্যুর ৩ দশক পর মৃত্যুসনদ নিয়ে আপত্তির বিষয়টি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্ঠি করেছে। জানা যায়, কামালপুর গ্রামের মইয়ব আলী ১৯৮১ সালের পহেলা জানুয়ারী মারা যান। মৃত্যুর পর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার পরিবার বিভিন্ন সময়ে উক্ত তারিখের মৃত্যুসনদ নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে মৃত্যুসনদটি নিয়ে কেউ কোন আপত্তি না করলেও সম্প্রতি প্রতিবেশী শাহ আলমের সাথে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্ঠি হলে সে মৃত্যুসনদটির ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে আপত্তি করে। তার আপত্তির প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ.রশীদ বাহাদুর মৃত্যুসনদটি স্থগিত মর্মে বাতিল করলে জটিতলতার সৃষ্ঠি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান নোটিশের মাধ্যমে পক্ষদ্বয় ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে শুনানী করে এবং পক্ষদয়ের তথ্য প্রমাণ যাচাই-বাছাই করে পূর্বে দেয়া মৃত্যুসনদটি বহাল রাখেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহ আলম সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসক অভিযোগটি তদন্তের জন্য জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দায়িত্ব দিলে তিনি সুষ্ট তদন্তের জন্য উভপক্ষের শুনানী করেন। সূত্রে জানা যায়, শুনানীতে শাহ আলম ও তার স্বাক্ষীরা মইয়ব আলীর মৃত্যু তারিখ ১৬ বছর পিছিয়ে দিতে গেলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। শুনানীকালে শাহ আলম ও তার স্বাক্ষীরা মইয়ব আলী ১৯৯৬ সালের শীত মৌসুমে মারা গেছেন বলে দাবী করেন। কিন্তু ২০০৩ সালে সহকারী জজ আদালত জকিগঞ্জে শাহ আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত একটি মামলায় উল্লেখ করা হয়, মইয়ব আলী অনুমান ১৬/১৭ বছর পূর্বে অসুস্থতার কারণে মারা যান। এছাড়া শাহ আলম ১৯৮২ সালে মহির আলী নামীয় ব্যক্তি দ্বারা সম্পাদিত ঐ বিরোধপূর্ণ জায়গার দলীল উত্থাপন করেন। অথচ ২০০৩ সালে সহকারী জজ আদালত জকিগঞ্জে দায়েকৃত মামলায় শাহ আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, মইয়ব আলী অসুস্থতার কারণে নালিশা ভূমির কোন কাবালা সম্পাদন ও তাহা রেজিস্ট্রারী করিয়া দিতে পারেননি। তাদের এই স্ব-বিরোধী বক্তব্য ও প্রমাণাদি দেখে উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে পড়েন। শুনানীতে মৃত মইয়ব আলীর ছেলে আব্দুল ফাত্তাহ এলাকার প্রায় অর্ধশত মানুষ নিয়ে এ বিষয়ে একটি লিখিত জবাব প্রদান করেন। লিখিত জবাবে তিনি বলেন, আমার পিতা ১৯৮১ সালের পহেলা জানুয়ারী বৃহস্পতিবার ইন্তেকাল করেন। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন স্থানীয় মসজদিরে তৎকালীন ইমাম মাওলানা ফাতির আলী (কাঠালপুরী মেছাব)। এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, শাহ আলম ও তার চাচাতো ভাই তথাকথিত মাওলানা আব্দুর রহিম (বুলবলি কামালী)’র বিরুদ্ধে প্রতিবেশী নিরীহ প্রতিবন্ধী মানিক মিয়ার জায়গা জবর দখলের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আব্দুল মালিক ও ফখরুদ্দিনের জায়গা জালজালিয়াতির ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। তারা বলেন, আব্দুর রহিম কোন মাদ্রাসা থেকে কামিল বা দাওরায়ে হাদীস পাশ তো দূরের কথা তিনি কোন মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ না করে মাওলানা লিখে মানুষকে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। তিনি তার চাচাতো ভাই শাহ আলমকে দিয়ে এসব জালিয়াতি ও জবর দখল করে যাচ্ছেন। তাদের এই জালজালিয়াতির বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এলাকাবাসী দাবী জানান।