অস্তিত্ব রক্ষার দাবীতে শিমুল তলা এলাকাবাসীর মানবন্ধন
সংসারের আয়ের উৎস ইতিমধ্যে বিলিন হয়েছে নদী গর্ভে ॥ ঝুঁকিতে রয়েছে মন্দীর, ললিৎকলা একাডেমী ও পাকা রাস্তাসহ ৭/৮টি গ্রাম
মধু চৌবে, শ্রীমঙ্গলঃ (কমলগঞ্জ শিমুল তলা থেকে ফিরে)
দেখতে দেখতে গত ৬ মাসে ২০ বিঘা ফসলী জমি ও সাবজননীর শষান ঘাটের এক তৃতীয়াংশই বিলিন হয়েছে নদী গর্ভে। এখন ভাঙ্গন ঠেকেছে বেরিবাঁধে। আর যদি এ বেরিবাধঁ ভেঙ্গে যায় তাহলে আশে পাশের ৭/ ৮টি গ্রাম, মন্দীর, ললিৎকলা একাডেমী ও পাকা রাস্তাসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা পড়বে ঝুঁকিতে। আর এ নেয়ই দুশ্চিন্তাগস্থ ও শংকিত কয়েক হাজার মানুষ। এ শংকিত এলাকাটি হচ্ছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই নদীর পাড় ঘেষা শিমুল তলাসহ আসপাশের গ্রামবাসীর। এরই প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শিমুল তলা গ্রামের কয়েক শত মানুষ ধলই নদীর ভাঙ্গনে দাড়িয়ে হাতে হাত ধরে মানবন্ধন করেন। গ্রামের মুরব্বি চন্দ্র বদন সিংহের সভাপতিত্বে বক্তব্যদেন নকুল কুমার সিংহ, শশী মোহন সিংহ, চোরামনি সিংহ, সুভাসিনী সিনহা, অখিলা সিনহা ও লক্ষন সিংহ। বক্তারা বলেন, দুই বছর আগে ভাঙ্গনের আশংকা করে তারা প্রতিকারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করেন। গত দুই বর্ষায় তাদের আয়ের উৎস ধান ও নানান সবজী চাষের ক্ষেত পুরোটাই বিলিন হয়েছে নদী গর্ভে। বিলিন হয়েছে সার্বজনীন শশান ঘাট, গাছ গাছালী বিদ্যুতের খুটিসহ আরো অনেক স্থাপনা। বর্তমানে ভাঙ্গন ঠেকেছে বেরি বাঁধে যা প্রতিহত করতে না পারলে ঝঁকিতে পড়বে শিমুলতলা ও এর আশপাশের ৭/৮টি গ্রাম, মাধব পুর মহা রাসলীলা কেন্দ্র জোড়া মন্ডপ, ললিত কলা একাডেমী ও পাকা সড়ক। এসময় ৫০ উর্দ্ধো মহিলা ফাজা সিংহা বেরি ভাঁধ থেকে নদীর দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলেন ওখানে তার স্বামীর শশান ছিল। কিন্তু আজ তা নদী গর্ভে বিলিন। একই সাথে তার দুই বিঘা জমি ছিল ছিলা নানান গাছ গাছরা আজ কিছুই নেই। এসমং শশী মোহন সিংহ জানান, বেরি বাঁধের নিচে নদীর পাড়ে তার ৩ বিঘা সবজী ক্ষেত ছিল এখন আর অবশিষ্ট একটুও নেই। একই অভিযোগ চন্দ্র বদন সিংহ, নৃপেন্দ্র সিংহ,সোনা চাউবা চেট্যার্জী,ভুবেনশ্বর সিংহ সহ আরো প্রায় ১০/১২টি পরিবারের । এদের প্রত্যেকেরই কারু এক বিঘা কারো ২ কারো আড়াই কারো ৩ বঘা জমি বিলিন হয়েছে নদী গর্ভে। আর বর্তমানে বেরিবাঁধ টির রয়েছে চরম ঝঁকিতে। এটি ভেঙ্গে গেলে ধলই নদীর বাম তীরের উত্তর দক্ষিন শিমুল তলা, শিব বাজার, মাধব পুর মাঝের গাও,ধলাইর পাড়, বামন গাও,ভাষানী গাও,ভান্ডারী গাও,লঙ্গুর ছড়া ও পৌর এলাকার বালি গাও, কুরমা কাপন প্লাবিত হয়ে ফসলাধিসহ ক্ষতিগস্থ হবে। তাই শিমুলতলা এলাকায় প্রায় দুইশত মিটার এলাকায় ব্লক স্থাপন অতিব জরুরী।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ্ই এলাকার পরিদর্শক উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান জানান, এই এলাকাটি মনিপুরি অধ্যুশিত এলাকা। ধান ও নানা প্রকার সবজী চাষের উপর এদের জীবন নির্বাহিত হয়। এই চিন্তা করে বছর দেড়েক আগে সাময়িক ভাবে সেখানে কিছু কাজ করে দেয়া হয়। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন স্থায়ী কাজের। এটি অনেক ব্যায় সাপেক্ষ ব্যাপার এর জন্য স্থায়ী ভাবে কাজ করলে দুইশত কোটি টাকার উপরে লাগবে আর অস্থায়ী ভাবে কাজ করলেও শতাধিক কোটি টাকা লাগবে। যা প্রকল্প করে উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা জমা দেয়া হয়েছে।