শ্রীমঙ্গলে সাদা সোনার খনির দরপত্র আহব্বান ॥ শংকিত চা বাগান মালিকরা

বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে চা বাগান, রাবার বাগান ও শ্রীমঙ্গল বধ্যভুমি একাত্তর
বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে চা বাগান, রাবার বাগান ও শ্রীমঙ্গল বধ্যভুমি একাত্তর
SAMSUNG CAMERA PICTURES
বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে চা বাগান, রাবার বাগান ও শ্রীমঙ্গল বধ্যভুমি একাত্তর
SAMSUNG CAMERA PICTURES
বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে চা বাগান, রাবার বাগান ও শ্রীমঙ্গল বধ্যভুমি একাত্তর

মধু চৌবে, শ্রীমঙ্গল থেকে: শ্রীমঙ্গলের সাদা সোনা খ্যাত সিলিকা বালুর খনি গুলোর দরপত্র আহব্বান করা হয়েছে। আর এরই সাথে সাথে লীজ গ্রহীতারা শুরু করেছেন সংশিস্লষ্ট মন্ত্রনালয়, প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীর দ্বার গোড়ায় দৌড় ঝাঁপ। কেউ কেউ ব্যাস্ত রয়েছেন সিন্ডিকেট গঠনে। অন্য দিকে শ্রীমঙ্গলের চা বাগান কর্তৃপক্ষ রয়েছেন শংকিত, হাই কোটের স্থগিতাদেশ থাকা বাগানের ভিতরের বালু মহাল গুলো ( বালুর ঘাট) সরকারের কোন উর্দ্ধতন মহলের সহায়তায় তারা পুণরায় লীজ না পেয়ে যায়। ইতিমধ্যে শ্রীমঙ্গলের চা বাগান এলাকায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দেদারছে বালু উত্তোলনের ফলে কয়েক একর চা বাগানের সেকশন বিলিন হয়ে গেছে ছড়ার গর্ভে। নষ্ট হয়ে গেছে হাজার হাজার চা গাছ, ক্ষতি হয়েছে চা বাগানের রাস্তা ঘাটের। এ আবস্থায় চা বাগান ও ছড়া সংলগ্ন রাস্তা ঘাটের ক্ষতির বিষয়টি উলেক্ষ করে বিভিন্ন চা বাগান কর্তৃপক্ষ মহামান্য হাই কোটের সরণাপন্ন হলে হাইকোট বিষয়টি নিষপত্তি না হওয়া পর্যন্ত বালু উত্তোলন না করার নির্দেশ দেন। একই সাথে ২০১১ ইং এর ৯ আগষ্ট ভুমি মন্ত্রনালয় এক পত্রে চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসককে চা বাগানের ভিতরের বালু মহাল গুলো ইজারা না দেয়ার নিদের্শক্রমে অনুরোধ জানান। এ অনুরোধের পরও শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন সম্প্রতি ২৫টি বালু মহাল ইজারার দরপত্র আহব্বান করেছে এর মধ্যে চা বাগানে অবস্থিত প্রায় ১১টি। তবে উপজেলা প্রশাসন দরপত্রে উলেক্ষ্য করেছেন হাই কোটের স্থগিতাদেশ প্রাপ্ত মহাল গুলো স্থগিতাদেশ উড্ড হওয়ার পর তা ইজারা প্রদান করো হবে। তবে অনেকে মনে করেন উপজেলা প্রশাসন চা বাগানের ভিতরের বালু মহাল গুলো দরপত্রে না উলেক্ষ করলেও পারতেন। এদিকে নতুন করে ইজারার দরপত্রে চাবাগানের বালু মহাল গুলোর নাম উলেক্ষ্য থাকায় চা বাগান মালিকরা আবারও শংকিত। প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে বিশেষ করে শ্রীমঙ্গলে সরকার সর্মতিত সমর্থিত গ্র“প গুলো চেষ্টা করছেন মহাল গুলোর আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে পুনরায় যেন ইজারা পান। ইতিমধ্যে কেউ কেউ চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে ইজারা হওয়ার আগেই রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছেন। অন্য দিকে বিভিন্ন চা বাগান এলাকার পাহারী ছড়া গুলো সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে দুই বছর আগে চা বাগানের ভিতরে বালু উত্তোলনের ফলে তাদের সেকশনের অনেক চা গাছ ও জমি ছড়ার গর্ভে বিলিন হয়েছে । দুই বছর বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় ভাঙ্গন কিছুটা রোধ হলেও এখনও বেশ ঝুঁকিতে রয়েছে অনেক চা ও রাবার গাছসহ বাগানের বেশ কিছু জায়গা। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সরকারী গ্যাস লাইনেরও মাটি সড়ে গিয়ে সেটিও ঝুঁকিতে রয়েছে এবং নতুন করে আবারও বালু উত্তোলন শুরু হলে তা আরো ঝুঁকিতে পড়বে। সরজমিনে দেখা যায়, সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শ্রীমঙ্গল ভুরভুরিয়া চা বাগানের (ভুরভুরিয়া ছড়ার) জেল এল নং ৬৬ এর আওতাধীন দাগ নং ১০৮, ১১৮,২২৩ ও ৫০২ ও জেএল নং ৬৫ এর দাগ নং ৯২১ এ অবস্থিত দুটি বালু মহালের আশপাশ এলাকা। একই সাথে শ্রীমঙ্গল সাধুবাবার বটতলী বধ্যভুমি একাত্তরের স্থাপনাও রয়েছে ঝুঁকিতে। এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল ভাড়াউড়া চা বাগানের ডিজিএম গোলাম মোহাম্মদ শিবলী এ প্রতিবেদককে জানান, কয়েক বছর মামলা মকদমার পর সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বিজ্ঞ বিচারকগণ প্রতিয়মান হয়েছেন বাগান এলাকায় বালু উত্তোলনের ফলে বিশাল ক্ষতি সাধিত হয়। তাই মহামান্য হাইকোটও এর উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন অন্য দিকে ভুমি মন্ত্রনালয়ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন চাবাগানের ভিতরে বালু মহাল গুলো ইজারা না দেয়ার জন্য। এ সময় সরকারের কাছে তিনি আশা প্রকাশ করেন চা বাগান রক্ষার স্বার্থে বাগানের ভিতরে বালু মহাল গুলো স্থায়ি ভাবে লীজ বন্ধ হবে।