শামীম ওসমানকে গ্রেফতার দাবি : সুরঞ্জিতের পরামর্শ

Shamim-Osman-_-Suronjeetসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সাংবাদিকদের ‘কুকুর’ বলে গালি দেওয়ার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ-৫ উপনির্বাচনে এএসপি বশিরকে হুমকি দেওয়ার প্রতিক্রিয়া নিতে গেলে শামীম ওসমান সংবাদমাধ্যম নিয়ে এই ধৃষ্ঠতা দেখান। এসময় তিনি বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছে কুকুর। আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন পাড়ার অনেকে পয়সা হলে বাড়িতে কুকুর পুষত। ওদের বাড়ির সামনে গেলে কুকুরগুলো মুখ ভেংচাত। এর পর যাদের আরও পয়সা হলো, তারা মিডিয়া পোষা শুরু করল। এগুলো হলো অ্যালসেশিয়ান কুকুর। তার এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, তার বিরুদ্ধে আমরা বিবৃতি দিয়েছি। আশা করি অচিরেই তিনি তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন। না হয় আমরা যৌথভাবে কর্মসূচির বিষয়টি বিবেচনা করবো। সাংবাদিক নেতারা বলেন, নারায়ণগঞ্জের আতঙ্ক ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার শামীম ওসমাসকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। না হয় তার বিরুদ্ধে জোরালো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি আরো বলেন, শামীম ওসমানকে যাতে কোনভাবেই আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া না হয় সে জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের কাছেও দাবি জানিয়েছি আমরা। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, শামীম ওসমান এ ধরনের ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে পুরো সাংবাদিক সমাজকে অপমান করেছেন। আমরা তাকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়া দাবি জানিয়েছি। তিনি যদি তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করেন, তবে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এক শামীম ওসমানের জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে না, আমাদের কলমই যথেষ্ট। এ ধরনের গডফারারকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান সাংবাদিক এই নেতা।
এদিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সাংবাদিকদের নিয়ে কথা বলার আগে রাজনীতিবিদদের আরও সংযত, সুশীল ও সম্ভ্রান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের সব কাজই যে ঠিক, কিছু বেঠিক নয়; সেটা ভাবা অবান্তর। সংবাদ মাধ্যমে রাজনীতিবিদদের যে ইমেজ দাঁড়ায়, সেটাই পরে জনগণ বিচার করে। এ জন্য শিক্ষা নিতে হবে। নারায়ণগঞ্জের সরকার দলের এমপি শামীম ওসমানের সম্প্রতি এক মন্তব্যের ব্যাপারে সোমবার দুপুরে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নৌকা সমর্থক গোষ্ঠীর এক আলোচনা সভায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সম্প্রতি একজন রাজনীতিবিদ সাংবাদিকদের নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি যে শব্দ ব্যবহার করেছেন তা আমার ভাল লাগেনি। গত ২৬ জুন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সাংবাদিকদের প্রসঙ্গে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছে কুকুর। আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন পাড়ার অনেকে পয়সা হলে বাড়িতে কুকুর পুষতো। ওদের বাড়ির সামনে গেলে কুকুরগুলো মুখ ভেংচাতো। এরপর যাদের আরও পয়সা হলো, তারা মিডিয়া পোষা শুরু করল। এগুলো হলো অ্যালসেশিয়ান কুকুর। প্রশিক্ষিত। লাত্থি দিলেও এগুলো কামড়াতে আসে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের মধ্যে সম্পর্ক পরিপূরক ও সম্পূরক। এ জন্য সাংবাদিকতাকে রাষ্ট্রের ফোর্থ অ্যাস্টেট (চতুর্থ স্তম্ভ) বলা হয়। প্রেসের মাধ্যমেই জনগণের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে দাম্ভিকতা, হম্বিতম্বি রাজনীতি হয় না। রাজনীতিবিদের কার্যকলাপ গণমাধ্যম যুক্তি দিয়ে বিচার করবে। ‘সুইস ব্যাংকের অর্থ ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক কমিটি করতে হবে’- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওই কমিটি কেমন হবে, কীভাবে হবে সেটা তাকে বলতে হবে। আর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কমিটির মধ্যে পার্থক্য কী সেটাও যেন তিনি বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সুইস ব্যাংকে যারা অর্থ পাচার করেছে সে টাকা ফিরিয়ে আনা হবে।’ তিনি বলেন, যারা অর্থ পাচার করে তারা কেউ দেশপ্রেমিক নয়। তাদের একমাত্র পরিচয় অর্থ পাচারকারী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি।