সিলেটের ৪ লন্ডন প্রবাসী গাড়ি চুরির মামলায় কারাগারে

dhaka-regencyসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ রাজধানী ঢাকায় পৃথক গাড়ি চুরির মামলায় সিলেটের বাসিন্দা ৪ লন্ডন প্রবাসীসহ ৮ প্রতারক গ্রেফতার হয়ে এখন জেলহাজতে। গ্রেফতারের পর দেড় কোটি টাকার মূল্যের একটি প্রাডো উদ্ধার করা হলেও অপরটির কোন হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সংঘবদ্ধ এই চক্রকে রিমান্ডে আনা হলে গাড়ির সন্ধান সহ চক্রটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার গুলশান-১ এর ফ্যান্ডোজ হাউস রেস্টুরেন্টের মালিক কবির রেজা নিজের মালিকানাধীন প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের প্রাডো (ঢাকা মেট্রো-গ-১৩-১৭১৩) গাড়ীতে করে গত ২০ এপ্রিল বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যান।
ব্যক্তিগত কাজে গাড়ী থেকে নেমে যাওয়ার পর একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে চালক খলিলুর রহমানের কাছ থেকে গাড়ীটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার ৬ দিন পর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ২৭ (৪) ২০১৪।
মামলা দায়েরের পরদিন পুলিশ অভিযান চালিয়ে গাড়ীটিসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী (সাতহাল) গ্রামের মৃত শাহ আজমান আলীর পুত্র শাহ আশরাফ ইসলাম, বিয়ানীবাজার জলঢুপের মৃত আবদুল হাছিবের পুত্র শামসুদ্দোহা, ঢাকা মিরপুরের মজিদ খান, বারিধারার বদরুদ্দোজা সাগর, বিয়ানীবাজারের জলঢুপের নুরুজ্জামান বাবুল, মিরপুরের শাহাদাত হোসেন ও কে.এম. মাহমুদ।
গ্রেফতারের পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ২৮ এপ্রিল মামলার আসামী শাহ আশরাফ গাড়ীটি নিজের বলে একটি অঙ্গীকারনামা জমা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন এর স্বপক্ষে সকল প্রমাণাদি রয়েছে যদি এ দাবি সত্য না হয় তাহলে আদালতের আদেশ মেনে নিবেন। এরপর ৪ মে আদালতে গাড়ীর মালিকানার কাগজ জমা দেন তিনি।
বিআরটিএ ঢাকা সার্কেলের প্যাডে লিখিত এ কাগজে গাড়ীর মালিক হিসেবে শাহ আশরাফের নাম উল্লেখ করা হয়। এই কাগজের প্রতি সন্দেহ হলে আদালত বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে ডিএমপির ডিসি প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে ৮ মে আদালতে একটি প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এতে বলা হয় গাড়ীর মালিক হিসেবে বিআরটিএ’র মূল ভলিয়মে কবির রেজার নাম রয়েছে।
বিআরটিএ’র অনলাইনে দেয়া তথ্যে ও রয়েছে মালিক হিসেবে কবির রেজার নাম। আসামীদের দাখিলকৃত কাগজপত্র জালিয়াতি করে তৈরি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। একই বিষয়ে বিআরটিএ ঢাকা সার্কেল (উত্তর) অফিস থেকেও গাড়ীর সকল তথ্য উল্লেখ করে পল্টন থানায় প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে গাড়ী চুরি মামলায় গ্রেফতার হয়ে আসামীরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন।
এদিকে অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের অপর গাড়ী (ঢাকা মেট্রো-ভ-১১-১২৮২) চুরির মামলায় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে গত ৩ মে ঢাকার পল্লবী থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ৯। ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএস এর বাসিন্দা মুসলেহ আহমেদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় ইতোমধ্যে আসামীদেরকে শ্যোন এ্যারেস্ট করা হয়েছে।এ গাড়ীর এখনো কোন সন্ধান পায়নি পুলিশ ।
পল্টন থানার ও.সি মুর্শেদ আহমদ এ বিষয়ে বলেছেন, আসামীদের কেউ কেউ লন্ডন প্রবাসী হলেও এরা চোরচক্রের সদস্য। ইতোমধ্যে চোরাই গাড়ীসহ এদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে প্রতারণার মামলা রয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই প্রতারক চক্রের ব্যাপারে আরো তথ্য পাওয়া যাবে। এ জন্যে আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।