নবীগঞ্জে মা-মনির উদ্যোগে মাতৃ মৃত্যুর কারন সনাক্ত করতে ৩টি গ্রাম পরিদর্শন

অধিক সন্তান গ্রহন ও দেরীতে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়াই প্রধান কারন

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গর্ভবতী মায়েদের প্রসবকালীন সময়ে মার্তৃমৃত্যুর সঠিক কারন সনাক্ত করার জন্য এফআইবিডিবির উপজেলা মা-মনি প্রকল্পের উদ্যোগে গত মঙ্গলবার সকালে নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের উমরপুর এবং আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল এবং কুর্শি ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রাম পরিদর্শন করা হয়।পরিদর্শন কালে গর্ভবর্তী মায়েদের সন্তান প্রসবকালীন সময়ে কেন মৃত্যু হয় তার সঙ্গত কারনগুলো সনাক্ত করা হয়।

জানাযায়, উমরপুর গ্রামের পল¬ী চিকিৎসক অবিনাশ সুত্রধরের স্ত্রী অর্চ্চনা সুত্রধর(৪০) এর ৫ মেয়ে ডলি সুত্রধর, সুমা সুত্রধর,পিংকি সুত্রধর,প্রিয়াংকা সুত্রধর,অনামিকা সুত্রধর থাকার পরও একটি ছেলে সন্তানের আশায় গত বছরের ১লা ডিসেম্বর ৬ষ্ট সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় ঘন ঘন খিচুরী ও অধিক রক্ত ক্ষরন হয়ে পুত্র সন্তান অবিক সুত্রধরের জন্মের ১৫ মিনিট পরেই তিনি মৃত্যুবরন করেন। বর্তমানে অবিক তার অন্যান বোন ও কাকী জলি সুত্রধরের কাছে লালন পালন হচ্ছে। অর্চ্চনা সুত্রধরের বড় মেয়ে ডলি সুত্রধরকে গত জ্জ মাস পূর্বে বিবাহ দেওয়া হয়েছে। মার্তৃমৃত্যুও কারন হিসাবে একটি পুত্র সন্তানের আশায় অধিক সন্তান জন্ম দেওয়া,সুচিকিৎসার জন্য সিদ্ধআন্ত নিতে দেরী,অধিক বয়সে বাচ্চ নেওয়াকেই প্রধান কারন বলে সনাক্ত করা হয়েছে। আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের মোতাব্বির হোসেনের কন্যা রাহেনা বেগমের সাথে প্রায় ২০ বছর পুর্বে বিয়ে হয় বানিয়াচং উপজেরার পাড়াগাও গ্রামের মোঃ আব্দুল জলিলের। বিয়ের পর থেকে আব্দুল জলিল ঘরজামাই হিসাবে পারকুল গ্রামেই অবস্থান কওে রংমেস্তরীর কাজ করে আসছে। তাদেও কোল জুড়ে ১ মেয়ে রেহা বেগম(১৮) এবং ৩ পুত্র সন্তান হৃদয় মিয়া,রায়হান মিয়া,রেদোয়ান থাকার পরও গত মার্চ মাসের প্রথম দিকে রিয়ান নামের আরেক পুত্র সন্তান জন্ম হয়। জন্মের প্রায় মাস খানেক পর রাহেনা বেগমের শ্বাসকষ্ট রোগের লক্ষন দেখা দিলে স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানোর পর সিলেট নর্থইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মারা যান। এখন রিয়ানকে তার বড় বোন ও নানী লালন পালন করছেন। খোজ নিয়ে জানাযায়,রাহেনা বেগমের গর্ভে ইতিপূর্বে আরো ২টি পুত্র সন্তান হয়ে মারার গেছে। মার্তৃমৃত্যুও কারন হিসাবে দেরীতে চিকিৎসা নেওয়া এবং অধিক সন্তান গ্রহনকেই প্রধান কারন হিসাবে সনাক্ত করা হয়। পরিদর্শন টীমের সাথে আলাপকালে জলিল মিয়া জানান, বর্তমান সময়ে আমার সন্তানদেরকে লালন পালন করতে এখন আমাকে আবার বিয়ে করতে হবে। কুর্শি ইউনিয়নওে তাহির পুর গ্রামের লেবু মিয়ার স্ত্রী সামসিয়া বেগম(৩৬)এর মেয়ে পপি বেগম(১০) এবং চেলে জয়নাল মিয়া(৮) নামের দুটি সন্তান রয়েছে। তৃতীয় সন্তান নিতে গিয়ে গত বছরের ২৯ জুন ১টি মৃত বাচ্চা প্রসব করে ডেলিভারীর ৯ দিন পর হার্টের সমস্যায় মারা যান। তার স্বামী দিনমজুর লেবু মিয়া ও সন্তানরা মামার বাড়ীতে থাকায় সরজমিনে বাড়ীতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। লেবু মিয়ার চোট ভাই ও তার বউ পরিদর্শন টীমের কাছে সঠিট কোন তথ্য প্রদান করতে পারেনি।
মৃত্যুর কারন হিসাবে পরিদর্শন টীমের নেতৃবৃন্দ হাসাপাতালে দেরীতে পৌছানো,সন্তানের ব্যবধান কম,বহু সন্তানের মা হওয়ার কারনই প্রধান কারন বলে সনাক্ত করেন। মাতৃমৃত্যুও সঠিক কারন ও তথ্য উদঘাটন পরিদর্শন টীমে উপস্থিত ছিলেন,নবীগহ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন,নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক উত্তম কুমার পাল হিমেল,ব্র্যাক কর্মকর্তা শাহ আলম ভূইয়া,কালিয়ারভাঙ্গ ইউপি সদস্য নাসির মিয়া,মা-মনির টেকনিক্যাল অফিসার অঞ্জন কুমার চৌধুরী,মা-মনির ফিল্ড সার্পোট অফিসার স্বপন কুমার নাইডু, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হিমাংশু ধর প্রমূখ।