সফলতার ১২ বছর পূর্ণ করলো জে এম জি কার্গো ব্যবসায় সফল মানুষ মনির আহমদ

620সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ ব্রিটেনের কার্গো ব্যবসার খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান জেএমজি এয়ার কার্গো’র এক যুগ পূর্তি ও এ্যাওয়ার্ড বিতরণী সম্পন্ন হয়েছে। ২৯মার্চ শনিবার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি সেন্টারে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত জেএমজির এক যুগ পূর্তি ও এ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানে সহস্রাধিক অতিথির সমাগম ঘটে। ব্রিটিশ পার্লমেন্টের সদস্য, ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনের প্রতিনিধি, টাওয়ার হ্যামলটেস্ এর নির্বাহী মেয়র, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমগ্র ব্রিটেন ও ইউরোপে নিযুক্ত জেএমজির এজেন্ট, গ্রাহক, শুভানুধ্যায়ী, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও সুধীজনের উপস্থিতিতে জেএমজির একযুগ পূর্তি ও এ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানটি এক বৃহত মিলন মেলায় পরিণত হয়। 

‘চ্যানেল এস’ এর জনপ্রিয় উপস্থাপক ফারহান মাসুদ খান ও বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্ক এর উপস্থাপক ব্যারিস্টার নাদিয়া আলীর প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে অনুষ্ঠানের হোষ্টদ্বয়কে পরিচয় করিয়ে দেন দি সান রাইজ রাইজ টুডে সম্পাদক এনাম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জেএমজি ইউকে ও ইউরোপের দুই শতাধিক এজন্টদের মধ্যে থেকে ২৩ জনের হাতে এ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া হয়। এর মধ্যে আউট স্ট্যার্ন্ডিং এচিভমেন্ট এ্যাওয়ার্ড ৩ টি, টপ টেন ১০ টি, নিউ কামার অব দ্যা ইয়ার ৬ টি এবং ইউরোপের এজেন্টদের ৪ টি এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
জেএমজি এয়ার কার্গোর এমপি মনির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রুশনারা আলী এমপি, বিমানের এমডি কেভিন, টাওয়ার হ্যমলেটসের নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান, বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার আতিক রহমান চিশতী, বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মাশিয়াল কনস্যুলার মিসেস শরীফা খানম, বিমানের সাবেক কান্ট্রি ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী, বিবিসিসি-র প্রেসিডেন্ট মাহতাব চৌধুরী, চ্যানেল আই ইউরোপের ম্যানেজিং এডিটর রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী সুয়েব, এটিএন বাংলার সিইও হাফিজ আলম বক্স, জেএমজি হিথ্রো শাখার চীফ আলী সাদেক শিপু, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সাপ্তাহিক বাংলা টাইমসের সিইও এটিইউ তাজ রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস মেয়র প্রার্থী জনবিগস, সাবেক লেবার লিডার কাউন্সিলার মতিনুজ্জামান, বিবিসিসি-র ফাইন্যান্স ডিরেক্টর মহিব চৌধুরী, ডিসিএফবি-র চেয়ারম্যার মনির হোসাইন, এনটিভি ইউরোপের সিইও সাবরিনা হোসাইন, এটিএন বাংলার এমডি সুফি মিয়া, সাপ্তহিক জনমত এর বার্তা সম্পাদক মুসলেহ উদ্দিন, জেএমজি-র সিইও দিলারা খানম জেনী, মাহবুব এন্ড কোম্পানীর চেয়ারম্যান একাউন্টেন্ট মাহবুব মোরশেদসহ কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সেবার মনোবৃত্তি, দায়িত্ববোধ এবং আন্তরিকতার কারনে জেএমজি ব্রিটেন সহ ইউরোপের গ্রাহকদের কাছে একটি জনপ্রিয় সেবামূলক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রিয়জনের কাছে প্রয়োজনীয় মালামাল প্রেরণের জন্য ব্রিটেন সহ ইউরোপের বাংলাদেশীদের কাছে জেএমজি এখন আপন পরিবারের মত একটি প্রতিষ্ঠান। বক্তারা বলেন, জেএমজি মুনাফা অর্জনের মনোবৃত্তি পোষন করেনি, তাই গ্রাহকদের কাছে মনজয়ী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে।
বক্তারা জেএমজির একযুগ পূর্তি ও এ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য স্বাগত জানিয়ে বলেন, ভিন্নমাত্রার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে মনির আহমদ আজ থেকে বার বছর পূর্বে পূর্ব লন্ডনে ছোট পরিসরে পথ চলা শুরু করেছিলেন। সেই জেএমজি এখন ব্রিটেনের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষদের একটি। বক্তারা জেএমজির সত্ত্বাধিকারী মনির আহমদকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জেএমজির মাধ্যমে মনির আহমদ ব্রিটেনে কার্গো ব্যবসাকে একটি বৃহৎ শিল্পে পরিণত করে বাংলাদেশীদের মুখ উজ্জল করেছেন। সেই সাথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস্কে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে বৃহৎভাবে সহযোগিতা করছেন। বক্তারা জেএমজির অগ্রযাত্রায় সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করে বলেন, বাংলাদেশের মুখ উজ্জল করতে যারাই কাজ করবেন, তাদের পাশে আমাদের দোয়া ও সহযোগিতা থাকবে।
রুশনারা আলী এমপি বলেন, জেএমজি সুনামের সাথে বার বছর পার করে যে সফলতা দেখিয়েছে সেটার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইনস্ কর্তৃপক্ষ গর্বিত কারণ বিমানের ব্যবসা ক্ষেত্রে জেএমজি যেভাবে সহযাগিতা করেছে সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক সমাজ, দেশ ও অসহায় মানুষের প্রতি কতটুকু আন্তরিক সেটার বাস্তব স্বাক্ষী মনির আহমদ। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি সব সময় সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতেও যদি তিনি এভাবে কাজ করে যান তবে বিমান সব সময় তার পাশে থাকবে।
বিমানের এমডি কেভিন বলেন, জেএমজি ব্রিটেনের মানুষকে সেবা দিয়ে মনজয় করতে পেরেছে। প্রত্যেকটি মানুষই প্রবাসে থেকে তাদের প্রিয়জনের কাছে পছন্দের জিনিসটি পাঠাতে চায়। সেই মনোবৃত্তি থেকে তারা দ্রুত পাঠানোর জন্য বিশ্বস্থ প্রতিষ্ঠান খুঁজে। জেএমজি বিশ্বস্থতার সাথে সেই সেবা দিয়ে সকলের কাছে পৌঁছে গেছে। তিনি বলেন, ব্যবসা যদি শুধু অর্থ-উর্পাজনের উদ্দেশ্যে হয় তাবে সেটা বেশী দিন ঠিকে না। সমাজ, সমাজের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকতে হয়। জেএমজির কর্ণদ্বার মনির আহমদ ব্যবসার পাশাপাশি সমাজের প্রতি তার সবধরনের দ্বায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছেন।
বিমানের ম্যানেজার আতিক রহমান চিশতী বলেন, মনির আহমদ জেএমজি এয়ারকার্গোর মাধ্যমে ব্যবসা ক্ষেত্রে যে সফলতার পরিচয় দিয়েছেন সেটা আমরা বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য গর্বের। জেএমজি কার্গো ব্যবসাকে শুধু জনপ্রিয়ই করেনি, এটাকে একটি শিল্পে রূপান্তিত করেছে। আমাদের পূর্ব সূরীরা ব্রিটেনের ক্যারী শিল্পকে জনপ্রিয় করেছেন আর মনির আহমদ জেএমজির মাধ্যমে বার বছরে এ ব্যবসাকে শিল্পে পরিণত করেছেন। তাই জেএমজি এবং মনির আহমদ বাংলাদেশের জন্য ব্রিটেনে গর্বে মানুষ।
বিবিসিসি-র চেয়ারম্যান মাহতাব চৌধুরী বলেন, প্রত্যেকটি মানুষের জীবনের এক একটি লক্ষ্য নির্ধারণ থাকে। জেএমজি এয়ার কার্গোর মাধ্যমে মনির আহমদ যে লক্ষ্যে পৌঁছার ইচ্ছা নিয়ে কাজ করেছেন সেটা সফলতার দ্বারপ্রান্তে। মনির আহমদ কার্গো ব্যবসাকে শুধু জনপ্রিয়ই করেনি, মানুষের হৃদয় জয় করে কার্গোকে সফল ব্যবসা হিসেবে পরিচিত করে তুলেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেএমজির কর্ণদ্বার মনির আহমদ একযুগ পূর্তি ও এ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানে আগতদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, জেএমজির সফলতার সাথে আমার একক কোন কৃতিত্ব নেই। এই কৃতিত্ব কমিউনিটির মানুষের। তিনি জেএমজির এজেন্ট ও গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, আপনারা না থাকলে আমার পক্ষে এতদূর আসা সম্ভব হতো না। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইনস্ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কার্গো প্রেরণ প্রক্রিয়াকে সহজতর না করলে কার্গো ব্যবসা এতো সফল ব্যবসায় পরিণত হতো না। মনির আহমদ এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত এজেন্টদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জেএমজির সবগুলো এজেন্টই এ্যাওয়ার্ড পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। কারণ তারা সকলেই নিজ নিজ এলাকায় কমিউনিটির মানুষকে সেবা দিচ্ছেন। মিডিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জেএমজির সত্ত্বাধিকারী মনির আহমদ বলেন, আপনারা পাশে না থাকলে কার্গো ব্যবসার সম্প্রসারণ হতো না এবং আমি এ পর্যায়ে আসতে পারতাম না। অনুষ্ঠান শেষে ব্রিটেনের খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিচালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে আগতদের মধ্যে উ¤œুক্ত র‌্যাফেল ড্র এর পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। র‌্যাফেল ড্র এর প্রথম পুরষ্কার ল্যাপটপ অর্জন কওে ফারজান, দ্বিতীয় পুরষ্কার স্যামসাং নোটপেড রুমেন আহমদ, এবং তৃতীয় পুরষ্কার আ্যপল আইপ্যাড লাভ করেন বিবিসিসি‘র চেয়ারম্যান মাহতাব চৌধুরী।