মুজাহিদ মসির কবিতা

 পিপড়ার ঘর ভেঙ্গে যায় অক্ষত রয় তার মন, 

আমার ঘর না ভাঙলেও ভাঙ্গে মন যখন তখন ।
মেঘে যখন বৃষ্টিপাত ঘটে পরিস্কার হয় আকাশের চেহেরা,
মনের আকাশ থেকে যায় অপরিস্কার নিঃস্বার্থ হওয়া ছাড়া।
যৌবন যেমন হতে পারে মুক্তি কিংবা ধবংশ দুয়ারার বাহন,
অস্তিত্ব বিলানো ছাড়া জুটে নি কপালে আনন্দে অবগাহন।
জবাইয়ের সময় ছটফট করে যেমন গলাকাটা প্রাণী,
যথার্থ সমর্পণ ছাড়া মিলে না জীবনে শান্তি পূর্নখানি ।
যে ঝড় আসে নি এখনও তার ভয়ে মোহাচ্ছন্ন !
সম্পদের পাহাড় গরলে তুমি কোন ধোয়াচ্ছন্ন সুখের জন্য ?
নিজের ভালো বু্ঝে নি যে কিভাবে সে অন্যে নেতা হয় !
মসির মসি কেঁদে কেঁদে তাই করল সময়ের অপচয় ।

 পরমছবি
সোনার পটে কাগজের ফুল,
মাটির ফুল সবুজ পাতায় ডাকা ।
হৃদয় মাঝে আমিত্বের লেবাস,
পরমছবি আকাংক্ষার অন্তরালে আঁকা।।
-মুজাহিদ মসি

 পরম হাত
সাঁতার না শিখে যদি কেউ সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত হয় ,
অবশেষে দেখা গেল মৃত্য তার নিয়তি নয় ।
প্রকৃতি যদি কাউকে গড়তে চায় আপন সৃজন মনে ,
মহাবিশ্বের কেন্দ্র হতে গতির ছিটা আসে তার শানে ।
পৃথিবী বিক্ষিপ্ত সেই সঙ্গে মানুষও কিছু সাথে ,
আলোকঠিকানা প্রাপ্ত তারা যাদের হাত পরম হাতে ।
-মুজাহিদ মসি

তুমার মহিমা
তুমার মহিমায় পরিপূর্ণ আমার জীবন-
নিকটবর্তী কিংবা তুমা হতে দূরেও যেতে পারি নি এ যাবত,
তভু যত ভেবেছি তত মুগ্ধ হয়েছি কত বিচিত্র তুমার নিয়ামত ।
আমার বুকে টকবক করে জ্বলন্ত তুমার ঐশী প্রেমের দাবানলে ,
অশ্রু যেন আজ আমার খুশির প্রবাহে পেট্রোল হয়ে জ্বলে ।
দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে উপেক্ষিত হয়েছি সাহায্য পেতে গিয়ে,
হৃদয় আমার প্রশান্ত আজ তুমার প্রেমের অমৃত শুধা পিয়ে ।
-মুজাহিদ মসি
ঘূর্নি
বিশালে বিশাল ,ক্ষুদ্রে বিশাল
ইলেকট্রনের ঘূর্ন নিউক্লিয়াসের চারপাশে ।
মহাবিশ্ব বিশাল ,ক্ষুদ্র আমার হৃদয়
অবিরত ঘূর্নি হায় শুধু তোমায় ভালবেসে ।।
-মুজাহিদ মসি
 ইশ্‌কে ফানা
জানা-মানার প্রতিষ্টানে
দিল্‌গুরুর তত্ত্বাবধানে
ইশ্‌কে ফানা হওয়ার হল লোভ ।
অনর্থক মোহ্‌বিনাশে
মহাজাগতিক প্রেমের প্রয়াসে
দিল্‌আয়নায় তোমায় দেখার ইচ্ছে হল খুব।।
১৪-১১-২০১৪
-মুজাহিদ মসি
 আমার দেখা
আমি মায়াকে দেখছি
সংসারমনা কর্মীর,
বেলা শেষে গৃহ ফিরত লগ্নে ।
আমি প্র্ত্যয়কে দেখছি
ভ্রাম্যমান পথিকের,
অজানা পথ চলায়।
আমি আনন্দকে দেখছি
মায়ের মুখে,
শিশুর হাতের খাবার।
১১-১১-২০১৩
-মুজাহিদ মসি
গতি
গতি আমার কর অতি,
কল্পলোকের মত ।
নিন্দার ভয় করব না আর,
ঝর্নায় মুছব ক্ষত ।।
-মুজাহিদ মসি

প্রতিকূলতা
প্রতিকূলে বিকশিত হয় মেধা
অনুকূলে বাড়ে দেহের মেদ্‌ ।
বাধাপ্রাপ্ত মন-মস্তিস্ক
তালাশ করে সৃষ্টির নব ভেদ্‌ ।।
-মুজাহিদ মসি

 যন্ত্রণা
আমার ভুলের বৃত্ত কবে নাগাদ শেষ হবে ?
যত দিন না তুমি ইশ্‌কে ফানা হবে ।
আমার হৃদয়ে কবে তুমার ষ্টেশন স্থাপিত হবে ?
যখন আমার গোপনীয়তা তুমার হৃদয়ে উদিত হবে।
তুমার নিরবিচ্ছিন্ন প্রেমের গান কবে থেকে গাইতে শিখব ?
তুমি যখন আমাতে বিলীন হতে শিখবে।
আমার গুরুত্ব তুমার কাছে কতটুকুন ?
তুমি আমার যন্ত্র,না বাজিলে তুমিই তোমার যন্ত্রণা ।
-মুজাহিদ মসি

তুমি আসবে বলে
তুমি আসবে বলে বাতি সব নিভিয়ে দিয়েছি ,
কারণ তুমি স্ব-মহিমায় স্বমুজ্জল অন্ধাকার বিদারী ।
তুমি আসবে বলে জানালায় পর্দা ফেলেছি,
কারণ তুমি সবার কাছে অতিব গোপন ।
-মুজাহিদ মসি

 অদ্ভুত স্বভাব
কতিপয় মানুষের অদ্ভুত স্বভাব
বিজয়ী হলে ঈর্ষা চুক্ষে দেখে ,
ব্যর্থ হলে কথামালায় ঘৃনার ছাপ ।
দূর্বলের সাথে ক্রোধ কিংবা অত্যাচার
সবলের সাথে ক্ষোভ কিংবা আভিশাপ ,
আর ধনী হলে যেন সপ্ত খুন মাপ ।।
-মুজাহিদ মসি

 বিশ্বকেন্দ্র বাংলা
সোনার বাংলা বিশ্ব-দেহের মন,
এখানে সুচনা ঘটবে পৃথিবীর পরিবর্তন।
বাংলা জাগিলে জাগিবে বিশ্ব,
মমতার চাদরে বিশ্বজনীন দৃশ্য ।
এ বাংলার মানুষ উর্বর হৃদয়ের জমিদার,
চাষিলে ফসল বিতারিবে মানবতার হাহাকার ।
এই মাটির টান রুখ্‌তে পারে নি মধ্যপ্রাচ্যের সূফি-দরবেশরা,
বনজপ্রকৃতিতে লীন হয়েছেন তপস্যায় প্রাচীন মুনি-ঋষীরা।
তুমি মহাদেশ মহাসাগর ঘুরে যদি হও কখনো ক্লান্ত,
এই বাংলার ছায়াতলে এসে হয়ে নিও খানিক প্রশান্ত ।

শুধু তোমায় পেতে
স্বর্গের লোভে যদি করি তুমার উপাসনা,
তুমার সেই স্বর্গভিটায় আমায় স্থান দিও না ।
নরকের ভয়ে যদি তুলি আমার দুই হাত,
নরকেই পুড়াও প্রভু আমায় দিন-রাত ।
শুধু তোমায় পেতে যদি গো প্রভু হয় আমার আরাধনা,
তোমার দয়াদ্র নিয়ামত থেকে আমায় বঞ্চিত করো না ।
(রাবেয়া বস্‌রীর প্রার্থনা অবলম্বনে)
 আমি কী ?
আমি বিস্পোরিত বোমা নাকি নয়া ফুটন্ত ফুল ?
আমি কি আলোর অগ্নি নাকি প্রিয়ার কানের দুল ?
আমি কি হিমালয়ে ঝিম ধরে থাকা সন্ন্যাসী ধরাত্যাগী ?
নাকি আমি যুগের নিত্ত্যশিল্পী বিশ্বজনীন কর্মযোগী ?
২২-০২-২০১৪
তুমার দয়া
ডাকে নিঃশব্দে আমায়
কিন্তে চায় ইশ্‌ক ও নিরাপত্তার মূল্যে ,
আমি বলি,আমিতো বিক্রিত প্রায় অতি নগণ্য ।
উদারতায় ঠাই পেয়েছি পদে
আশীর্বাদে জাগরিত হয়েছে নব তারণ্য ,
এবার গড়ে উঠতে চাই শুধু তুমার জন্য ।।

  প্রিয়তমার কক্ষে খিল্‌

ঘুমন্ত পাখি ,উড়ন্ত শিকারি চিল্‌,
ফুলের মাঝেই বিরাজ করে বুলবুলির দিল্‌।
কতিপয় দুনিয়ার মানুষ যেন রঙ্গিন মাছরাঙ্গা,
ছু মেরে মাছ আনে জল হতে ডাঙ্গা ।
সবাই সবার লক্ষে অটল আমার সাথে খানিক অমিল,
প্রিয়তমা নয় আমার কর্মবৃত্তই দিয়েছে তার কক্ষে খিল্‌।

 বিশ্বাসের সাহস

কোন সোন্দর্য্যের ঈর্ষায় শত্রুরা আমায় ঘিরে ফেলেছে ?
আমার রূপের জৌলস্‌দমিয়ে দিতে মরনাস্র সবার কাছে।
আমায় হত্যা কর বন্ধুগন মৃত্যুতেই আমার নতুন জীবন,
জীবন ভিক্ষা না চেয়ে করছি আজ মনসুর সম এরূপ পণ।
বন্ধুগন আমাকে নয় দেখ আমার নেপথ্যের নায়ককে,
যে কারিগর করে দিল বুকে বিশ্বাসের প্রবল সাহস একে।

 মহিমান্বিত বীর 

খণা যীশু –খ্রীষ্ট
মনসুর সক্রেটিস,
সত্যে তাদের দেহজমিন বিলীন ।
ক্ষুধিরাম তিতুমীর
ভাষাশহীদ মুক্তিবীর,
দেশপ্রেমে অপূরনীয় তাদের ঋণ ।।
কবিতায় মমতায়
আদবে সন্মাননায়,
জানাই তাদের ফুলেল্‌অভিনন্দন ।
বিশ্বাসপ্রিয় দেশপ্রেমিক
আধ্যাত্মিক মানবিক,
উদার চেতনায় মহিমান্বিত জীবন ।।
 চিৎকার দাও
চিৎকার দাও,
যখন তুমার দুর্দশা অপ্রকাশিত ।
চিৎকার দাও,
তুমার সাথে কেউ নেই ।
চিৎকার দাও,
মরুভূমি, পর্বত,সমুদ্রে গিয়ে ।
চিৎকার দাও সুরে সুরে
যখন তুমি ইশ্‌কে ফানা ।

 ঠিকানা কোথায়?
লাশের সাড়ে তিনহাত ঠিকানা আছে?
আছে পরকালে স্বর্গ কিংবা নরকে ঠিকানা।
তুমার ঠিকানা কোথায় ?
তাই কি তুমি যুদ্ধে মেতেছ ?
যুদ্ধে হবে শুদ্ধ !
যুদ্ধেই জীবন,যুদ্ধে মরন
রক্ত তুমার গঙ্গায় ভাসবে
মিশবে সমুদ্রে এই কি তুমার ব্রতী ?

 চোখ বুজা
শিকারী পাখীর মত হিংস্রতা বাসা বাধতে চায়,
বিধবা পাখির মত নিঃসঙ্গতা করে ভর,
মালিক হয়েও চড়ুই পাখীর মত গৃহকোনে বাস ।
খুঁজে বেড়াই একটুখানি প্রশান্তির হাওয়া,
স্বস্তির দক্ষিনা জানালা বন্ধ করেই ।
তখন বুজলাম চোখ যখন মুজলাম,
কেন জলে ভেসে বেরিয়েও আমি তৃষ্ণার্ত ।

 সন্ধান
বর্ণিল পৃথিবীর বাহিরে চাকচিক্য থাকলেও
ভেতরে টগবগ করে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির লাভা ।
ক্ষুদ্র চুক্ষে শেষ করা যায় না যে সমুদ্রের সীমানা
সেও চিরবিরহী উত্তাল অশান্ত তার মন ।
রুপালী চন্দ্রটা মাধুর্য্যপূর্ন মনে হলেও
সে নিঃস্ব সর্বহারা আলোর কাঙাল ।
আমি সেই স্থির গ্রহরাজ সন্ধানী যে কেন্দ্রবিন্দু
হ্যাঁ পেয়েছি বৈচিত্র্যতা !
কিন্তু আমার কেন স্হিরতার অভাব ?
-মুজাহিদ মসি